২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
নির্বাচনের ইশতেহার

বিশেষ বিবেচনার বিষয়

-

নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো দেশ-জাতির কল্যাণ ভাবনায় কিছু অঙ্গীকার করে, কিছু পরিকল্পনা তুলে ধরে। ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে কী কী কাজ অগ্রাধিকার বিবেচনায় রাখা হবেÑ সেসব বিষয় নিয়ে যেসব বক্তব্য তুলে ধরে কিংবা প্রতিশ্রুতি দেয়, সেগুলোকেই ইশতেহার বলা হয়। ইশতেহার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাধারণ ভোটাররা তো বটেই, বোদ্ধা মানুষ ইশতেহার বিবেচনা করে দল বাছাই করে, সেই অনুযায়ী ভোট দেয়, আশা করে ইশতেহার নামে যে অঙ্গীকারনামা তুলে ধরা হয়, পাঁচ বছর ধরে বিজয়ী দল সরকার গঠন করে সেসব প্রতিশ্রুতি পূরণ করার সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাবে।
দু-একটি দল ইতোমধ্যে ইশতেহার ঘোষণা করেছে। বড় দলগুলো প্রস্তুতি পর্বে রয়েছে। আশা করা যায়, স্বল্প সময়ের মধ্যে দলগুলো জাতির সামনে ইশতেহার তুলে ধরবে। আমরা আশা করি, ইশতেহার নামের অঙ্গীকার একধরনের ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতি। জনগণের প্রতি সেই প্রতিশ্রুতি দেয়ার সময় আশা করা যায়, দলগুলো সেসব পূরণ করার জন্যই প্রতিশ্রুতি দেবে। এটা কোনোভাবেই রাজনৈতিক ধোঁকা বা প্রতারণার বিষয় হবে না।
আমাদের ধারণা, দেশে দলতন্ত্রের পরিবর্তে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে একটি অঙ্গীকার থাকা সঙ্গত। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়টির সাথে সাথে নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে সুস্পষ্ট বক্তব্য থাকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ ছাড়া সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে সংবিধান রক্ষা করে দেশ-জাতির আমানতের হেফাজত করতে পারে, সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট বক্তব্য থাকার বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্ব পাওয়ার মতো বিষয়। বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, অপহরণ, হামলা-মামলার মতো অমানবিক সব আচরণ বন্ধ করা। মতের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষার মতো বিষয়গুলো প্রাধান্য পেতে পারে। দলীয়করণের কুফলগুলো জাতি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে। এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি থাকার বিষয়টিও গুরুত্ব পাওয়ার মতো।
দুর্নীতির শেকড় উপড়ে ফেলা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তির জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকার মতো বিষয়গুলো অবশ্যই অগ্রাধিকার পাওয়ার মতো বিষয়। তা ছাড়া দেশ-জাতিকে সুশাসন উপহার দেয়া, ইনসাফ প্রতিষ্ঠার সর্বাত্মক চেষ্টা করা, শ্রেণীবৈষম্য কমিয়ে আনার বিষয়গুলো অবশ্যই গুরুত্ব পেতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, বিগত ১০ বছর সমাজে যে অনিয়মকে নিয়ম বানিয়ে সংবিধানের দোহাই দিয়ে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, তা থেকে জাতিকে মুক্তি দেয়ার অঙ্গীকার জনগণ অবশ্যই আশা করবে। তা ছাড়া কতগুলো কালাকানুন করা হয়েছে। সংবিধান সংশোধন করে দলীয় ইচ্ছা পূরণের যেসব কর্ম সাধিত হয়েছে, সেসব ব্যাপারে সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি থাকার প্রসঙ্গ অবশ্যই ঠাঁই পাওয়া উচিত।
সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা আত্মস্থ না করে যেসব ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে, তা পূরণ করে জনমতের ভিত্তিতে উন্নয়নমুখী ঐক্যবদ্ধ দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ে তোলার জন্য সচেষ্ট হতে হবে। স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির মতো বিষয়গুলো গুরুত্ব পেতে হবে। মোদ্দা কথা, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে জনগণের মর্যাদাকে সব কিছুর ঊর্ধ্বে ঠাঁই দিতে হবে। আশা করি, সব দল নাগরিক অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করার বিষয়টি প্রাধান্য দেবে। যা কিছু নেতিবাচক তা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দেখার বিষয়টি প্রাধান্য পাওয়া উচিত। গণতন্ত্র, মৌলিক অধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পেলে অন্যান্য অনিয়ম অবশ্যই কমে আসবে। আশা করি, জাতির কাছে ইশতেহার তুলে ধরার সময় এ বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা : আমিনুল লিবিয়ায় নিয়ে সালথার যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ১ মনুষ্য চামড়ায় তৈরি বইয়ের মলাট সরানো হলো হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আওয়ামী লীগকে বর্জন করতে হবে : ডা: ইরান আমরা একটা পরাধীন জাতিতে পরিণত হয়েছি : মেজর হাফিজ তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর প্রেমিকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা ভিয়েনায় মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রদূতদের ইফতারে ইসলামিক রিলিজিয়াস অথোরিটি আমন্ত্রিত এবার বাজারে এলো শাওমির তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ি সকল কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি থাকতে হবে : মাওলানা হালিম বিএনপি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করে : ড. মঈন খান সাজেকে পাহাড়ি খাদে পড়ে মাহিন্দ্রচালক নিহত

সকল