২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
জনমনে সংশয় বাড়ছে

সব দায় বর্তাবে ইসির ওপর

-

জাতীয় নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে সাধারণ মানুষের মনে সংশয় ততটাই বাড়ছে। নমিনেশন পেপার সাবমিট থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্তরে জনমনে বারবার প্রশ্ন জাগছে আদৌ নির্বাচন হবে কি না। নির্বাচন হলেও সেই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে তো? এ ধরনের সংশয় ও শঙ্কা জাগার কারণে প্রশাসন থেকে ইসি সবার ওপর সন্দেহ দানা বাঁধছে।
অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথায় সরকার যেন সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। ইসি, প্রশাসন, আইন-আদালত ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সর্বত্র সরকারের অপ্রতিহত প্রভাব দৃশ্যমান। একই সাথে সরকারি দলের একচ্ছত্র প্রভাব সহজেই চোখে পড়ে। আচরণবিধির ব্যাপারে সরকারের লোকেরা বেপরোয়া, নির্বাচন করতে হলে কিছু আচরণবিধি অনুসরণ করতে হয়। একই সাথে নির্বাচনকালীন কিছু নিয়মনীতি ও শিষ্টাচার অনুসরণ করতে হয়, সে ব্যাপারেও সরকারের লোকজনের কোনো পরোয়া নেই। অপর দিকে বিরোধী দল অনুযোগ-অনুরোধ করেও নির্বাচন করার মতো পরিবেশ পাচ্ছে না। বারবার ইসির সাথে সাক্ষাৎ করছে। ইসিকে চিঠি দিয়ে যাচ্ছে। সংবাদ সম্মেলন করে দেশ জাতিকে যেমন জানাচ্ছে, তেমনি সরকার ও ইসির প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেয়ার জন্য আকুতি জানাচ্ছে। বাস্তবে কোনো সুফল মিলছে না। জনগণের মতো আমাদের মনেও সংশয় জাগছে আসলেই ইসি কি বাস্তবে সক্ষমতার পরিচয় দিতে পারবে! এখন পর্যন্ত সিইসি ও ইসির সদস্যদের কোনো ধরনের বোধোদয় লক্ষ করা যাচ্ছে না। আমরা বারবার জানান দিয়ে আসছিÑ নির্বাচনকালীন যে সরকার থাকে তাদের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনকে সাহায্য করা। নিজেদের কর্তৃত্ব প্রদর্শন করাও নয়, কর্তৃত্ব করার কোনো সুযোগও নেই।
ইসি সক্ষমতার পরিচয় দিতে পারছেÑ এমনটি কোনো বোদ্ধা মানুষ মনে করে না। সাবেক ইসি সদস্যরা এমনকি সাবেক সিইসিরা পর্যন্ত বর্তমান ইসিকে নিজেদের অবস্থান বুঝে সংবিধান প্রদত্ত ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন, সুশীলসমাজ তথা বুদ্ধিজীবীরাও ইসিকে পরামর্শ দিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করে সতর্ক করে দিচ্ছেন। এর পরও ইসি যেন এসব ব্যাপারে ভাবার গরজই বোধ করছে না। এ অবস্থা আরো বেশি দিন চলতে দিলে জনগণ ইসির প্রতি আস্থাহীন হয়ে পড়বে। ভোটের ব্যাপারে যে উৎসাহ বোধ করে আসছিলÑ সেখানেও ভাটা পড়বে। এর ফল হবে বিরোধী দল নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করবে। জনগণ সেটাকেই গ্রহণযোগ্য হিসেবে ধরে নিয়ে ভোটের ব্যাপারে শুধু আস্থাই হারাবে না, ভোটের সব কর্মকাণ্ড থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।
গণতন্ত্রে জনগণই শেষ কথা। তাদের আস্থা-অনাস্থা বিবেচনায় নিতে হয়। ইসি যেন এ বিষয়টি উপেক্ষা করে চলার চেষ্টা করছে। এর ফলে হবে একতরফা একটা নির্বাচন। সব দায়দায়িত্ব বর্তাবে ইসির ওপর। সরকারি দল ও সরকার ইসির বরাতে পার পেয়ে যেতে চাইবে। তাই জনমতকে আস্থাশীল করার মতো আচরণ করাই ইসির প্রধান কর্তব্য। অন্যথায় সব দায় বর্তাবে ইসির ওপর।


আরো সংবাদ



premium cement