২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সাজানো প্রশাসনে নির্বাচন

নির্বাচনের আগেই রদবদল জরুরি

-

দেশ এখন নির্বাচনমুখী। তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো মনোনয়নপত্র বিক্রির কাজ শেষ করেছে। দুই জোটে বিপুল মনোনয়নপ্রত্যাশী মনোনয়নপত্র কিনেছেন। এবারের নির্বাচন যে শুধু অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে না, ভোটারের উপস্থিতি বাড়বে বলে আশা করা যায়। কিন্তু এ জন্য দরকার ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করা। কিন্তু সুষ্ঠু পরিবেশে মানুষ ভোট দিতে পারবে কি না তা নিয়ে এরই মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে। এবারের নির্বাচন ক্ষমতাসীন দলের অধীনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রশাসনে কোনো ধরনের পরিবর্তন বা রদবদল করা হয়নি। নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের কথা থাকলেও তা করা হয়নি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে বড় আকারের মন্ত্রিসভার অধীনে সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হচ্ছে। এক দশকে প্রশাসনের সাথে ক্ষমতাসীন দলের যে গভীর সম্পর্ক তাতে পক্ষপাতিত্বের বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন স্থানে ধরপাকড়ের অভিযোগ উঠেছে। গত কয়েক দিনে রাজধানীসহ সারা দেশে কয়েক শ’ বিরোধী দলের নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। বিএনপি নেতারা অভিযোগ করছেন সাংগঠনিক দক্ষতাসম্পন্ন তরুণ নেতাদের পরিকল্পিতভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে, যাতে তারা ভোটের মাঠে সক্রিয় থাকতে না পারেন। পল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে সহিংস ঘটনার পর এ নিয়ে একাধিক মামলা হয়েছে। সেসব মামলায় নগরীর বহু নেতাকর্মীকে আসামি করে গ্রেফতার অভিযান চালানো হচ্ছে। বিএনপির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাচন কমিশনকে মামলায় আটক বিএনপি নেতাদের তালিকা দেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত সে ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে প্রশাসনিক হয়রানি থেকে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের রক্ষার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচন কমিশন যদি পক্ষপাতমূলক আচরণ করে বা পুলিশ প্রশাসনের হয়রানি দেখার পরও চোখ বন্ধ করে রাখে, তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হবে না। এখন প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীন। তারা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতৃত্ব নয়, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে চলবে। নির্বাচনের আগে প্রশাসন যাতে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে কাজ না করে, এ জন্য প্রশাসনে বড় ধরনের রদবদলের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে পুলিশ প্রশাসনে রদবদল অনিবার্য হয়ে উঠেছে। আমরা আশা করি, নির্বাচন কমিশন সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি থেকে রক্ষা করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে, একই সাথে প্রশাসনে রদবদল করে নিরপেক্ষ পরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।


আরো সংবাদ



premium cement