প্রক্রিয়াজাত করে একে সম্পদে পরিণত করা যায়
- ১৭ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০
অর্গানিক বর্জ্য নিয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয় ঢাকার মানুষেরা মাথাপিছু প্রতিদিন গড়ে শূন্য দশমিক ৫৬ কেজি বর্জ্য উৎপাদন করে। রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনে প্রতিদিন তিন হাজার ৮০০ টন বর্জ্য উৎপাদিত হচ্ছে। এর মধ্যে সত্তর থেকে আশি শতাংশ অর্গানিক বর্জ্য। অর্গানিক বর্জ্য বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সম্পদে পরিণত হতে পারে। বর্তমানে এই বর্জ্যরে ব্যবস্থাপনা না থাকায় তা যত্রতত্র ছড়িয়ে পড়ে পচে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এর সাথে ছড়িয়ে পড়ে মিথেন গ্যাস। এই গ্যাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। গবেষণায় দেখা গেছে, এই গ্যাস কার্বন ডাই-অক্সাইডের চেয়ে ২১ গুণ বেশি বিপজ্জনক। সে হিসাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে কোনো কার্যক্রম দেখা যাচ্ছে না। এ ব্যাপারগুলো আমাদের দেশে এখনো গবেষণা প্রতিবেদনের মধ্যে সীমিত থেকে যাচ্ছে। জনসচেতনতা যেমন এ ব্যাপারে নেই তেমনি সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগও অপ্রতুল।
প্রতিদিন ঢাকা শহরে বিপুল জৈব বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। সবজি ও অন্যান্য কাঁচা পণ্য পচে অর্গানিক বা জৈব বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। এ থেকে তৈরি হচ্ছে ক্ষতিকর গ্যাস মিথেন। সাধারণ পরিবেশে উচ্ছিষ্ট পচে গলে গেলে এটা অত্যন্ত ক্ষতিকর। অন্য দিকে প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে একে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এটি গৃহস্থালির কাজে লাগানো যায়। ব্যবহার করা যায় শিল্প কারখানায়ও। গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত উচ্ছিষ্টকে বাড়ির ছাদ কিংবা কোনো নিরাপদ স্থানে প্রক্রিয়াজাতকরণের ব্যবস্থা করা যায়। এ থেকে উৎপাদিত বায়োগ্যাস রান্নার কাজে আবার ব্যবহার করা যায়। আর এর অবশিষ্টাংশ ব্যবহার করা যায় জৈবসার হিসেবে। বর্জ্য পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের কাজটি জটিল ও ব্যয়সাপেক্ষ নয়। বাংলাদেশে জৈব বর্জ্যরে সীমিত আকারে প্রক্রিয়াজাত করতে দেখা যাচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উচ্ছিষ্ট জৈব পদার্থ পচে গলে গিয়ে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি করে চলেছে। ১৯৯১ সালে দেশের শহরগুলোতে প্রতিদিন ছয় হাজার ৪৯৩ টন বর্জ্য উৎপাদিত হতো। ২০০৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৩ হাজার ৩০০ টনে। জানা যাচ্ছে, ২০২৫ সালে ৪৭ হাজার ৫৪ টন বর্জ্য উৎপাদিত হতে পারে। এই বর্জ্যরে কী হবে কারো কাছে কোনো উত্তর নেই। প্রক্রিয়াজাত করে এক দিকে একে সম্পদে পরিণত করা যেতে পারে। অন্য দিকে যেনতেনভাবে ফেলে দিয়ে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতিও আমরা করতে পারি। আগে থেকেই এ ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করতে হবে। তবে এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতনতা দেখা যাচ্ছে না।
জৈব বর্জ্য উৎপাদনের যে পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে সেটা ক্রমবর্ধমান। এই বর্জ্য হয়ে উঠতে পারে মারাত্মক ক্ষতিকর। আবার এই বর্জ্য হতে পারে সম্পদ। কোনটা করতে চাই সে সিদ্ধান্ত আমাদের নিজেদের। এ ব্যাপারে দরকার বিশেষ পরিকল্পনা। জনগণকে সচেতন করে তোলার মাধ্যমে উচ্ছিষ্ট জৈব বর্জ্যকে জ্বালানি ও সার হিসেবে ব্যবহারে আনতে পারলে অর্থনৈতিক উন্নতির ক্ষেত্রে এটি একটি ভূমিকা রাখবে। অন্য দিকে এটিকে যত্রতত্র ফেলে দিয়ে আমরা পরিবেশকে করে তুলতে পারি বসবাসের অনুপযোগী। কোনটাকে আমরা বেছে নেবো সে সিদ্ধান্ত আমাদের নিজেদের নিতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা