২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সিসি ক্যামেরা

পর্যাপ্ত দক্ষ পুলিশ থাকাও জরুরি

-

দেশের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে রাজধানী ঢাকা ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সংযোগকারী মহাসড়কটি কোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসি টিভি) নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হচ্ছে। যানজট সমস্যা দূর করা, দুর্ঘটনা হ্রাস, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ প্রভৃতি উদ্দেশ্যে এই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এ জন্য ওই মহাসড়ক বা হাইওয়ের এক হাজার ৪২৭টি স্থানে অত্যাধুনিক ক্যামেরা বসানো হবে। পত্রিকান্তরে প্রকাশিত খবর মোতাবেক আরো জানা যায়, মহাসড়কের সার্বিক পরিস্থিতি মনিটর করা হবে হাইওয়ে পুলিশের কমান্ড সেন্টারের মাধ্যমে। এ বিষয়ে তাদের প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পর এর বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলছে। ইতোমধ্যে মেঘনা ব্রিজ থেকে দাউদকান্দি ব্রিজ পর্যন্ত সিসি টিভি স্থাপনের কার্যক্রম আরম্ভ হয়েছে।
পুলিশ সূত্র উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশের প্রধান বাণিজ্যিক সড়ক হিসেবে প্রতিদিন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে ২৬-২৭ হাজার যান চলাচল করছে। ক্রমেই এই সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২০ সালের মধ্যে এ পথে প্রতিদিন ৩৫ হাজার যানবাহন চলাচল করবে। আর ২০৩০ সালে এ সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৬৬ হাজারে পৌঁছবে। উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশের ৯০ শতাংশ পণ্য আমদানি ও রফতানি হয়ে থাকে।
পুলিশ কর্তৃপক্ষ হাইওয়েতে সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপনসংক্রান্ত প্রস্তাবে বলেছে, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা গেলে মহাসড়কে ডাকাতি, দুর্ঘটনা, জ্বালানি চুরি এবং চোরাকারবারসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ প্রতিরোধ অনেক সহজ হবে। একই সাথে অনেক সহজ হবে অপরাধীদের সন্দেহজনক গতিবিধি, সন্দেহযুক্ত যানচলাচল, আইন লঙ্ঘনকারী যানবাহন, কালো তালিকাভুক্ত গাড়ি প্রভৃতি শনাক্ত করার কাজ। মহাসড়কের সামগ্রিক নিরাপত্তা বিধানের উদ্দেশ্যে পুলিশবাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানো, ডিজিটাল মনিটরিং সিস্টেম স্থাপন ও ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট উন্নত করার কথাও একই প্রস্তাবে রয়েছে। জানা গেছে, সিসি টিভি এবং অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ পরিচালনার জন্য হাইওয়ে পুলিশের আধুনিক কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম চালু হবে। তদুপরি, অপরাধীদের ব্যাপারে তদন্তসাপেক্ষে প্রাপ্ত তথ্যগুলো নিরাপদে সংরক্ষিত রাখার জন্য ডাটা সেন্টার থাকবে। যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ ও দুর্ঘটনাসংশ্লিষ্ট মামলা তদন্তের স্বার্থে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তাও উপলব্ধি করা হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কোনো সমস্যা, সমাবেশ বা অপরাধের ক্ষেত্রে আগাম সতর্কতার জন্য ইন্টেলিজেন্স ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালুর পাশাপাশি সব সিসি টিভি ক্যামেরা ফাইবার অপটিক্যাল নেটওয়ার্ক দ্বারা সংযুক্ত থাকবে। এই ক্যামেরা থেকে পাওয়া ফুটেজ মাসখানেক সংরক্ষণ করা হবে। বিদ্যুৎবিভ্রাট মোকাবেলার ব্যবস্থাও রাখা হবে সিসি টিভি ক্যামেরার ক্ষেত্রে। চালক মদপান বা মাদক সেবন করে গাড়ি চালালে তা চিহ্নিত করার ব্যবস্থা থাকবে। এই মহাসড়কে ঢাকার অংশে ২৫২টি, কুমিল্লা অংশে ৪৬৮টি, ফেনীতে ৩৬২টি এবং চট্টগ্রামে ৩০৫টি ক্যামেরা থাকবে। তা ছাড়াও থাকবে চার্জলাইট ১৪৪টি।
জনজীবনের নিরাপত্তা, স্বাভাবিক ও সুষ্ঠু জীবনযাত্রা, জাতীয় অর্থনীতি গতিশীল রাখা প্রভৃতি প্রয়োজনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সর্বদা নির্বিঘœ, সুশৃঙ্খল ও দ্রুত যানচলাচল নিশ্চিত করা জরুরি। নিয়মিত তত্ত্বাবধান এবং অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এ ক্ষেত্রে সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে পর্যাপ্তসংখ্যক দক্ষ ও দায়িত্বনিষ্ঠ পুলিশ থাকা একান্ত আবশ্যক।

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল