২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সংলাপের পর ১০০ মামলা

নির্বাচনে বিরোধী শক্তিকে বাধা দেয়ার অপকৌশল

-

নির্বাচনে সব দলের জন্য সমান সুযোগ তথা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সৃষ্টির যৌক্তিক দাবি সব সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল-মহল-জোটসহ দেশের সাধারণ মানুষের; কিন্তু সরকার বরাবর এই যৌক্তিক ও ন্যায্য দাবি উপেক্ষা করে পরিস্থিতিকে সরকারপক্ষের অনুকূলে নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে আসছে পুরো মেয়াদেই। এ জন্য সরকারপক্ষ বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলক মামলা দায়ের করে চলেছে। এ ক্ষেত্রে সরকার সম্প্রতি ‘গায়েবি মামলা’ দায়েরের উদ্ভট পন্থা আবিষ্কার করেছে। গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রবলভাবে সমালোচিত হয়েছে। এমনকি গত ১ নভেম্বর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাথে প্রধানমন্ত্রীর সংলাপের সময় এ ধরনের মামলা দায়ের ও এলোপাতাড়ি গ্রেফতারের প্রসঙ্গটি গুরুত্ব পায়। তখন প্রধানমন্ত্রী ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের বলেছিলেন, এখন থেকে আর কোনো রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা ও ধরপাকড় করা হবে না। এর আগে যেসব গায়েবি মামলা দায়ের করা হয়েছে, তার তালিকা চান ফ্রন্ট নেতাদের কাছে। তিনি তা বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ ধরনের একটি তালিকাও দিয়েছেন; কিন্তু তবু ‘গায়েবি’ মামলার হিড়িক থামছে না। ১ নভেম্বর ঐক্যফ্রন্টের সাথে সংলাপের পর মাত্র ১০ দিনে ২০ জেলায় ১০০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিএনপি নেতাদের দাবি, এসব মামলা হয়রানিমূলক ও ‘গায়েবি’।
একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবরে জানানো হয়েছেÑ ‘কেরানীগঞ্জের কদমতলী গোল চত্বরের কাছে ৬ নভেম্বর দুপুরে কিছু লোককে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটাতে ও গাড়ি ভাঙচুর করতে ‘দেখেছে’ পুলিশ। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, বিস্ফোরণ হলে অন্তত শব্দ শোনা যেত। ভাঙচুর হলে এলাকায় শোরগোল হতো। এ ছাড়া, সে দিন সকাল থেকেই কদমতলী এলাকা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে ছিল।
কথিত ভাঙচুরের ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ঘটনাস্থল থেকে ১৩ জনকে গ্রেফতার করার কথা মামলায় উল্লেখ করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজনের বক্তব্য, সে দিন পুলিশ গাড়ি থেকে নামিয়ে কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে।
পত্রিকাটি আরো জানিয়েছেÑ খোঁজ-খবর নিয়ে তারা দেখতে পেয়েছে, গত ১ থেকে ১০ নভেম্বর রাজধানীর বাইরে ২০ জেলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ১০০টি। এর মধ্যে ৯টি মামলার বাদি পুলিশ।
৬ নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশের দিন ঢাকার ছয়টি থানায় মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় গাড়ি ভাঙচুর, রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, পুলিশের ওপর হামলা, ককটেল বিস্ফোরণসহ ‘নাশকতা’র ঘটনার কথা বলেছে পুলিশ, কিন্তু যে এলাকায় এসব ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছে পুলিশ, সেখানকার বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে এর সত্যতা পায়নি পত্রিকাটি।
এ ধরনের গায়েবি মামলার বহু উদাহরণ বেশ কয়েক মাস ধরে গণমাধ্যম সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি। প্রবলভাবে সমালোচিত হলেও এখনো এসব মামলার ঢল থামছে না; এমনকি, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পরও। নির্বাচন কমিশনও এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নিয়ে নির্বাচনের মাঠ সবার জন্য সমান করার প্রয়াস চালানোর নজির স্থাপন করেনি। তফসিল ঘোষণার পরও এখনো ক্ষমতাসীন দল রঙিন ব্যানার, ফেস্টুনসহ ইলেকট্রনিক প্রচারণা সমানে চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি সিটি করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণাধীন রাস্তার পাশের ইলিকট্রনিক বোর্ডগুলোতেও রঙিন ভিডিও প্রচারণা চলছে ক্ষমতাসীন দলের। নির্বাচন কমিশন যেন ‘অন্ধ’। সে জন্যই এ নির্বাচন কমিশনের প্রতি জনমনে আস্থা নেই। মনে হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন সরকারি দলের হয়েই কাজ করে চলেছে। কিন্তু বিবেকবান গণতন্ত্রকামী মানুষের প্রত্যাশা ছিল এর বিপরীত।


আরো সংবাদ



premium cement
সাটুরিয়ায় প্রশান্তির বৃষ্টি চেয়ে সালাতুল ইসতিসকা আদায় ইরান নিয়ে মার্কিন হুঁশিয়ারি পাকিস্তানকে গাজায় গণকবরের বিষয়ে ইসরাইলের কাছে ‘জবাব’ চেয়েছে হোয়াইট হাউস দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়ন করা হলে হামাস অস্ত্র ছাড়তে রাজি শনিবার থেকে শুরু গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা, প্রস্তত জবি ক্যাম্পাসগুলোতে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সমর্থন করেন বাইডেন: মুখপাত্র নোয়াখালীতে ইসতিসকার নামাজ আদায় জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব থাকবে বান্দরবানে বৃষ্টির চেয়ে চোখের পানি ফেলে বিশেষ নামাজ চকরিয়ায় যুবককে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ৭ উপজেলা নির্বাচনে ব্যর্থ হলে গণতন্ত্র ক্ষুণ্ন হবে: সিইসি

সকল