১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
গ্যাস সঙ্কটে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম

জরুরি পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন

-

ঢাকা মহানগরীর অনেক এলাকায় গ্যাস সঙ্কট তীব্রতর হয়ে উঠেছে। গ্যাসের অভাবে সকালে অনেক এলাকায় চুলা জ্বলে না। নাশতা তৈরি করা সম্ভব হয় না। অনেক পরিবার রাত জেগে দিনের জন্য ভাত-তরকারি রান্না করে রেখে কোনো মতে পরিবার-স্বজন নিয়ে অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। এই পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটছে শীত আসার সাথে সাথে। একইভাবে গ্যাসের অভাবে অনেক এলাকায় মিলকারখানা বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
দুর্ভাগ্য, যেখানে গ্যাস সঙ্কট তীব্রতর সেখানে আবার সিলিন্ডার বিস্ফোরণের মতো দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। তাই সিলিন্ডার ব্যবহারও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পরিস্থিতির এই ভয়াবহতার ভেতরও মাঝে মধ্যে গ্যাস চুরির ঘটনা ঘটছে। অবৈধ সংযোগও এখনো পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। এই অবৈধ কাজের সাথে জড়িয়ে আছে বড় বড় কর্মকর্তা। বারবার দৃষ্টি আকর্ষণ করার পরও কোনো প্রতিকার নেই। এ দিকটায় দুদকও ঠিকমতো নজর দিতে পারছে না। তা ছাড়া ব্যাপারটা এত সূক্ষ্মভাবে করা হচ্ছে, যাতে সহজেই কারো দৃষ্টিতে পড়ার সুযোগ নেই। নিবিড় পর্যবেক্ষণ করে সরেজমিন অবৈধ সংযোগ শনাক্ত করার ক্ষেত্রে গ্যাস বিভাগের কর্মকর্তাদের কোনো আগ্রহ নেই, বরং এ ধরনের অবৈধ ব্যবহারকারীরা যে লেনদেন করে সেই লেনদেনে শরিকেরাই জাতীয় সম্পদ গ্যাস পাহারা দেয়ার জন্য দায়িত্ব পালন করছে।
গ্যাসের জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে চট্টগ্রামেও। কারিগরি সমস্যার কারণে বন্ধ রয়েছে এলএনজি। এর প্রত্যক্ষ নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে শিল্পকারখানায়। তাদের উৎপাদন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, রীতিমতো বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া, বন্দরনগরীজুড়ে গ্যাসের জন্য সবার জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। অনেকের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। এর মধ্যে বিকল ভাল্ব মেরামত নিয়েও একধরনের অনিশ্চিত অবস্থার জন্ম দেয়া হয়েছে। জরুরি কাজ জরুরি ভিত্তিতে করার যে তাড়া দেখা যায়, সেখানেও তেমন কোনো বাড়তি তৎপরতা চোখে পড়ে না।
চট্টগ্রামে এলএনজি অর্থাৎ তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করার মাত্র আড়াই-তিন মাসের মধ্যেই সরবরাহব্যবস্থা বিকল হয়ে পড়ে। এর সাথে শুধু কারিগরি ত্রুটি দায়ী, না অবহেলার কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তা-ও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। সিএনজি স্টেশনগুলোতে গ্যাসের তেমন চাপ নেই। চট্টগ্রাম নগরীজুড়ে গ্যাসের অভাবে রান্নাবান্না প্রায় বন্ধ থাকায় ঘরে ঘরে মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। উল্লেখ্য, এলএনজির উৎস থেকে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড দৈনিক ৩২০ মিলিয়ন থেকে ৩৩০ মিলিয়ন ঘনফুট সরবরাহ পাচ্ছিল। সেখানে আপাতত জাতীয় গ্রিড থেকে ২২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস দিয়ে পুরো পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই কোনোভাবেই হাহাকার বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
আমরা মনে করি, গ্যাস এখন জীবনের অংশ, এ নিয়ে অবহেলা জীবনের গতিকে থামিয়ে দিচ্ছে। উৎপাদনের চাকা প্রায় বন্ধ। তাই বিষয়টি নিয়ে জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অবহেলার সুযোগ থাকা উচিত নয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement