২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
রাজনৈতিক প্রকল্পের ছড়াছড়ি একনেকে

এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে আশঙ্কা থাকে

-

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন রাজনৈতিক প্রকল্পের ছড়াছড়ি চলছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি তথা একনেকে। গত ৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত একনেকের বিশেষ বৈঠকে তোলা হয় রেকর্ডসংখ্যক প্রকল্প। এর মধ্যে রয়েছে পুলিশ, গ্রামীণ ও শহুরে অবকাঠামো উন্নয়ন। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির এই একটি বৈঠকে ৮৩ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকার ৩৯টি প্রকল্প পাস করা হয়। এটি একটি রেকর্ড। এর আগে এক বৈঠকে এত প্রকল্প আর কখনোই পাস হয়নি। এ সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেকের চেয়ারম্যান শেখ হাসিনা।
এভাবে একদম শেষ মুহূর্তে ঢালাওভাবে প্রকল্প পাস করা হয়েছে রাজনৈতিক বিবেচনায়Ñ এ কথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। তাড়াহুড়া করে পাস করা এসব প্রকল্প যথাযথভাবে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছেÑ এমনটি দাবি করা যাবে না। ফলে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশের সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
জানা যায়, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে একনেকের ১৩টি সভায় মোট ২০৮টি প্রকল্প পাস করা হয়েছে। এসব প্রকল্পের মোট খরচ দুই লাখ ৪৩ হাজার ৩১৮ কোটি টাকা। একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, প্রয়োজনে নির্বাচনের আগের দিন পর্যন্ত একনেকের সভা হবে। তবে নির্বাচনী আইনের সাথে সাংঘর্ষিক হয়, এমন কিছু করা হবে না। এসব প্রকল্পের অনেকগুলোর পেছনেই যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কাজ করেছে, তা সহজেই অনুমেয়। গত পরশুর সভায় ফেসবুক ও গুগলের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর ওপর নজরদারির জন্য ১২৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পাস করা হয়েছে। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রের স্পর্শকাতর কাজগুলো সফল বাস্তবায়নের বিপরীতে রাষ্ট্রকে হেয়প্রতিপন্ন করতে বড় ধরনের ষড়যন্ত্র হতে পারে। রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার, গুজব, মিথ্য তথ্য ইত্যাদি কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপপ্রয়াস পর্যবেক্ষণ করা হবে। এ জন্য বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি কেনা হবে। ২০১৮ সালের নভেম্বর মাস থেকে ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসের মধ্যে এসব যন্ত্রপাতি কেনা হবে। এ ধরনের প্রকল্পকে সরকার বিরোধী দল-মতের মানুষের বিরুদ্ধে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমনের কাজে ব্যবহার করা হতে পারে। এর মাধ্যমে সরকারপক্ষ রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে পারে। বিশেষ করে নির্বাচনের আগের এই সময়টায়।
সে যাই হোক, জাতীয়পর্যায়ে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রণীত প্রকল্পগুলো যথার্থ সময় নিয়ে ব্যাপকভাবে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রয়োজন ছিল; কিন্তু নির্বাচনের আগে ভোটার টানার লক্ষ্যকে সামনে রেখে নির্বাচনী রাজনৈতিক প্রকল্প গ্রহণ কোনো ভালো লক্ষণ হতে পারে না। আমরা আশা করি, সরকার এ ধরনের প্রবণতা পরিহার করবে।


আরো সংবাদ



premium cement