২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
আগে রাজনৈতিক সমঝোতা বা সমাধান

তারপরই তফসিল ঘোষণার প্রশ্ন

-

প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঘোষণা দিয়েছেন নভেম্বরের ৪ তারিখ তফসিল ঘোষণা করবেন, কিংবা সে দিন বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে নির্বাচন কমিশন ঠিক কবে নাগাদ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সরকারের সংলাপ শুরু হয়েছে এ বিষয়ে। যত দূর জানা যায়, ৮ নভেম্বর পর্যন্ত সংলাপ চলার মতো একটা ধারণা সরকারের একজন মুখপাত্র দিয়েছেন। তবে একই সাথে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছেÑ এর পরও সংলাপ চলার সুযোগ থাকবে।
ইতোমধ্যে মূল বিরোধী দল, যা এখন ঐক্যফ্রন্ট আকারে আত্মপ্রকাশ করেছে, তাদের সাথেই প্রথম সংলাপ হলো। সেই সংলাপে বাস্তবে প্রত্যাশিত কোনো ফল পাওয়া সম্ভব হয়নি। এর পরও সবার ধারণাÑ ফলাফল যাই হোক, রাজনীতিবিদদের মধ্যে একত্রে বসার ও আলোচনা করার একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, যা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির প্রাণ বলা চলে। তাই আশা করা যায়, আলোচনার পথ ধরে বিরাজমান সঙ্কটের গ্রহণযোগ্য সমাধানের পথ খুলেও যেতে পারে। একটি বৈঠকে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবেÑ এটা বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় সম্ভব না হওয়ারই কথা। কারণ, সরকার দোহাই দিচ্ছে সংবিধানের। বিরোধী দল বলছে, এই সংবিধান বহাল রেখেও একটা গ্রহণযোগ্য পথ খুঁজে পাওয়া সম্ভব। তবে এটা প্রায় অসম্ভব বিষয় বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। তার পরও আমরা আশাবাদী থাকার পক্ষে। তা ছাড়া, রাজনীতিতে ‘শেষ কথা’ বলতে কিছু নেই। চূড়ান্তপর্যায়ে সরকারের ওপর এমন চাপ সৃষ্টি হতে পারে, যাতে তারা বাধ্য হয়ে বিরোধী জোট ও ফ্রন্টের দাবি মেনে নিতে বাধ্যবাধকতার মধ্যে পড়তে পারেন। তাই রাজনৈতিক সমস্যার গ্রহণযোগ্য সমাধানের পথ খোলার আগে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার মধ্যে কোনো সুফল নেই। এমনও হতে পারে, বিরোধী দলের চাপে অথবা আন্দোলনের কারণে শেষ পর্যন্ত খোদ ইসির সংস্কারের প্রশ্ন সামনে চলে আসতে পারে কিংবা বর্তমান ইসির সদস্য এবং সিইসির পরিবর্তনের প্রশ্নটি সামনে এসে যেতে পারে।
তা ছাড়া, রাজনৈতিক সমঝোতার ভিত্তিতেই সংসদ নির্বাচন পেছানোর প্রশ্ন সামনে এসে যেতে পারে। তাই তফসিল ঘোষণার ক্ষেত্রে ধীরে চলার নীতি গ্রহণ করাই শ্রেয়। কারণ, তফসিল ঘোষণা করে তা পরিবর্তন করা সুখকর অভিজ্ঞতার বিষয় হবে না। নির্বাচনের কিছু বিধি নিয়ে রাজনৈতিক আপত্তির মুখে পরিবর্তনের প্রশ্ন গুরুত্ব পেতে পারে। তখনো তফসিল পরিবর্তনের প্রশ্ন ওঠা অসম্ভব নয়।
আমরা মনে করি, রাজনৈতিক সমঝোতার লক্ষ্যে যেহেতু সংলাপ শুরু হয়েছে, তখন একটি সমঝোতার জন্য ইসির অপেক্ষা করাই যুক্তিসঙ্গত। তা ছাড়া, তফসিল মানেই গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের নিশ্চয়তা নয়। তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে নির্বাচনের যে দিনক্ষণ স্থির করা হয়, তা ঠিক রাখা-না-রাখার বিষয়টি যেহেতু রাজনৈতিক সমঝোতার ওপর নির্ভর করে, তাই বিষয়টি নিয়ে তাড়াহুড়া না করাই সমীচীন; বরং রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য অপেক্ষা করাই শ্রেয়। আশা করি, সিইসি ও ইসি সদস্যরা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নেবেন।


আরো সংবাদ



premium cement