গণতন্ত্রের জন্যই জনগণ আগ্রহী
- ২৪ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০
নির্বাচন ঘনিয়ে এলে জোটবদ্ধ হওয়ার একটা প্রবণতা রাজনীতির পুরনো নিয়ম। ‘ঐতিহ্য’ও বলা চলে। তা ছাড়া দল ভাঙার একটা প্রবণতাও আমাদের ইতিহাসে রয়েছে। তাই জোট ভাঙাগড়ার ভেতর গুণগত রাজনীতির গন্ধ খুঁজে বেড়ানো অর্থহীন। তা ছাড়া দল পরিবর্তন করা একটি স্বাভাবিক বিষয়। এগুলোকে নির্বাচনের সাধারণ উপসর্গ হিসেবে দেখাই সমীচীন।
এটা ঠিক, এবার জোটবদ্ধ রাজনীতির আলাদা একটা ‘গন্ধ ও স্বাদ’ রয়েছে। কারণ নির্বাচনী জোট ও ন্যূনতম কর্মসূচির এক মঞ্চ ও যুগপৎ আন্দোলনের মেজাজটা একটু পৃথক প্রকৃতির হয়ে থাকে। বর্তমানে যে মেরুকরণ হচ্ছে, তাতে আদর্শিক ভাবনা কম। বরং একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে জোটবদ্ধ হওয়ার দায়বোধ জেগেছে। এটাও হওয়ার প্রেক্ষাপট রচনা করেছে এই সরকার। নির্বাচনব্যবস্থাকে সরকার ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। গণতন্ত্রকে পাঠিয়েছে নির্বাসনে। সংবিধান এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো একক নিয়ন্ত্রণে রেখে সুবিধামতো ব্যবহার করছে ও ব্যাখ্যা দিচ্ছে। এটা থেকে উত্তরণ সম্ভব না হলে গণতন্ত্র অধরা থেকে যাবে এবং নির্বাচনব্যবস্থা বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে। অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানও স্বাধীন মত দিতে কিংবা আইনসম্মত কাজ করতে পারবে না। সরকারের তথা নির্বাহী বিভাগের অনুগত থেকে ক্ষমতাসীনদলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে হবে।
এ কারণেই ন্যূনতম কর্মসূচির ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন অনেকটা জরুরি। জোটবদ্ধ রাজনীতি সেই অভাব ঘোচাবে বলেই জনগণের ধারণা। জনগণের ইচ্ছা শুধু একটাই; তার ভোটটা নিজের ইচ্ছামতো যেকোনো প্রার্থীকে দেবে এবং সেই সময় যেন কোনো প্রকার বাধার মুখে না পড়ে। তার ভোটটা ঠিকমতো গণনা করা হবে বলেই প্রত্যাশা। তাই জনগণের ইচ্ছা একটাইÑ তারা স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে সরকার গঠনে অংশ নিতে পারবে। সে ক্ষেত্রে নিশ্চয়ই জনগণের আদর্শিক ভাবনা, রুচি ও চিন্তা প্রাধান্য পাবে।
জনগণ জোটনেতাদের দলীয় ও ব্যক্তিগত আদর্শ নিয়ে ভাবতে চায় না। বরং তারা যে লক্ষ্যে একজোট হয়েছেন, সেটাই জনগণের প্রাথমিক প্রত্যাশা। এতটুকু অর্জিত হলেই জনগণ আশা করে, গণতন্ত্র অবারিত হবে; ভোটাধিকার নিশ্চিত হবে; আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথ তৈরি হবে। বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে একটি প্রভাবমুক্ত নির্বাচন করা সম্ভব হবে বলে জনগণ মনে করে না। বর্তমান নির্বাচন কমিশনকেও জনগণ আস্থায় নিতে পারছে না। প্রশাসনের ওপর জনগণের আস্থা কমে গেছে। কারণ প্রশাসন দলীয় মেজাজে পরিচালিত হতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। আবার সুবিধাভোগী হয়ে থাকতেই তারা স্বস্তিবোধ করেন।
আমরা কোনো জোটকেই অপ্রয়োজনীয় ভাবছি না। দেশের রাজনীতিতে জোটের রাজনীতি ছিল, আছে, থাকবে। তাই জোট ও দল ভাঙাগড়া রাজনীতিতে হতাশার জন্ম দেয় না, বরং একটি পরিবর্তনের প্রত্যাশাকে আরো বেশি শাণিত করে। কোনো বিশেষ দল ও জোটকে সমর্থন দেয়া-না-দেয়া নয়, বরং গণতন্ত্র অবারিত করার বিষয়টিই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রত্যাশাটুকুই আমরা করতে চাই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা