অর্থনৈতিক লাভের সুযোগ আছে
- ২২ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০
বাংলাদেশ বিপুল জনসংখ্যার একটি দেশ। এ দেশে ইলেকট্রনিক পণ্যের ভোক্তার সংখ্যাও বিপুল। টেলিভিশনের পর কম্পিউটার, এরপর মোবাইলের এক বিরাট মার্কেট বাংলাদেশ। এসব পণ্য মানুষ দীর্ঘ দিন ব্যবহার করতে পারে না। কয়েক বছর ব্যবহারের পরই সেগুলো পরিত্যক্ত হয়। এক দিকে অকেজো হয়ে যাওয়া, অন্য দিকে নতুন মডেলের প্রতি মানুষের আগ্রহ পুরনোগুলোকে পরিত্যক্ত করে। ফলে এ দেশে ইলেকট্রনিক বর্জ্যরে বিরাট সম্ভার তৈরি হচ্ছে। এগুলো ঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করতে পারলে মূল্যবান ধাতু পাওয়া যায়। পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করার কারখানা গড়ে না ওঠায় এগুলোকে কাজে লাগানো যাচ্ছে না। পরিত্যক্ত ইলেকট্রনিক কিছুটা বিদেশে রফতানি করা যাচ্ছে। একটা বড় অংশ পরিবেশের সাথে মিশ্রিত হয়ে বড় ক্ষতি করছে। নানাভাবে মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠছে ইলেকট্রনিক বর্জ্য।
সহযোগী একটি দৈনিক লিখেছে, দেশে প্রযুক্তির ব্যাপক জোগান ঘটলেও পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের প্রতিষ্ঠান গড়ে না ওঠায় অকেজো হয়ে যাওয়া ইলেকট্রনিক পণ্য ভয়াবহ আকারে পরিবেশ দূষণের কারণ হয়ে উঠছে। এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (ইএসডিএ) সর্বশেষ তথ্য বলছে, বাংলাদেশে প্রতি বছর এক কোটি টন বর্জ্য তৈরি হয়। যার মধ্যে পরিত্যক্ত মোবাইল ফোন, টেলিভিশন, কম্পিউটারের মতো শুধু ইলেকট্রনিক বর্জ্য তৈরি হয় চার হাজার টন। এই বর্জ্য দেশে প্রক্রিয়াজাত করার সুযোগ তৈরি হয়নি। তবে ২০০ টন অকেজো ইলেকট্রনিক বর্জ্য রফতানি হচ্ছে। তাহলে এ বিপুল বর্জ্য কোথায় যাচ্ছে। নিশ্চয়ই এগুলো মিশছে আমাদের মাটি, পানি ও পরিবেশের সাথে। এগুলো প্রকৃতপক্ষে পরিবেশের সাথে মেশে না। এগুলো থেকে তৈরি হয় প্রতিক্রিয়া। এ প্রতিক্রিয়া মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
অকেজো ইলেকট্রনিক দ্রব্যের একটি অর্থনৈতিক দিক রয়েছে। এতে রয়েছে গোল্ড, সিলভার, প্লাটিনামসহ মূল্যবান ধাতু। চার হাজার টন ইলেকট্রনিক বর্জ্যকে যদি প্রক্রিয়াজাত করা হয়, এর বিরাট অর্থনৈতিক মূল্য দাঁড়াবে। রফতানি করে কিছু অর্থ উপার্জন করা যায়। এ ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র নিতে হয়। ৯টি প্রতিষ্ঠান অকেজো ইলেকট্রনিক পণ্য রফতানি করছে। এ সুযোগকে অবারিত করে দিয়ে অকেজো ইলেকট্রনিক পণ্য বিদেশে রফতানি করতে পারলে দুই দিক দিয়ে লাভবান হওয়া যাবে। মূল্যবান অর্থ উপার্জন করা যাবে। অন্য দিকে ক্ষতিকর পরিবেশ দূষণ থেকেও দেশ বেঁচে যাবে।
দেশের বড় শহরগুলোতে বিপুল পরিমাণ পরিত্যক্ত বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। এগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে খোলা জায়গায় জমা করা হচ্ছে। এসব বর্জ্য মারাত্মকভাবে পরিবেশ দূষণ করছে। অথচ এসব বর্জ্য প্রক্রিয়াজাত করে দূষণ থেকে বাঁচা যেত। শুধু তাই নয়, প্রক্রিয়াজাতকরণ প্ল্যান্ট থেকে অর্থনৈতিক উপার্জনের একটি ব্যবস্থাও হতো। সরকারি উদ্যোগ নানা সময় শোনা যায়, কিন্তু সেগুলো বাস্তবায়নের মুখ দেখে না। কঠিন ইলেকট্রনিক পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ থেকে অর্থনৈতিক উপার্জনের সুযোগও বেশি। আমরা আশা করব, অকেজো ইলেকট্রনিক পণ্য যত্রতত্র ভাগাড়ে ফেলে না দিয়ে একে সংরক্ষণ করা হোক। পরিবেশকে এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচাতে হবে। সবচেয়ে ভালো হবে দ্রুত প্রক্রিয়াজাতকরণের ব্যবস্থা গড়ে তোলা। না হয় অন্তত রফতানি করার সুযোগ সহজ করে দেয়া হোক।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা