১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্পের দুর্দিন

সরকার নির্লিপ্ত থাকতে পারে না

-

একসময় এই বাংলাদেশে তাঁতশিল্পের কদর ছিল। সেই কদর এমন যে, মানুষ তাঁতের কাপড় ব্যবহার করেই গর্ববোধ করত। এর সাথে ঐতিহ্য, গৌরব তথা দেশপ্রেমও জড়িত ছিল। তাই দেশের বিশেষ কিছু এলাকায় তাঁতশিল্প গড়ে উঠেছিল। হাজার হাজার পরিবার এই শিল্পে নিয়োজিত হয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন অতিবাহিত করেছে। এটাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পেশা হিসেবে বিবেচনা করা হতো। অথচ সেই তাঁতশিল্প এখন চরম মন্দার কবলে পড়ে ধুঁকছে। দেশে-বিদেশে তাঁতবস্ত্রের চাহিদা কমে যাওয়ায় তাঁতশিল্প অঞ্চলের তাঁতমালিকেরা চোখে অন্ধকার দেখছেন। তাঁতবস্ত্র বিক্রিতে অব্যাহত লোকসান দিয়ে তারা তাঁত কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেকেই হারিয়ে ফেলেছেন পুঁজি। অনেক তাঁতশিল্পী বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন। হাজার হাজার তাঁতশ্রমিক বেকার হয়ে পরিবার নিয়ে কষ্টে জীবন কাটাচ্ছেন।
তাঁত কারখানার মালিকদের বক্তব্য হচ্ছে, লোকসান অব্যাহত থাকলে তাঁতশিল্প ও এতে জড়িতরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিদেশে রফতানি এবং দেশে চাহিদা, দুটোই কমে যাওয়ায় তাঁতবস্ত্রের বাজারদর নি¤œমুখী। অনেকেরই আশঙ্কা, সরকারিভাবে পদক্ষেপ না নেয়া হলে ভবিষ্যতে এ অবস্থা আরো প্রকট আকার ধারণ করবে। কারো কারো মতে, এখন নারীরা সালোয়ার-কামিজ বেশি ব্যবহার করায় শাড়ির ব্যবহার কমেছে। এতেই তাঁতে বোনা বস্ত্রের চাহিদা কমে গেছে। দেশে-বিদেশে তঁাঁতবস্ত্রের চাহিদা কমে যাওয়ায় তাঁতের শাড়ি-লুঙ্গির বিক্রি প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। বিশেষ করে প্রান্তিক তাঁতিরা চরম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছেন। অনেকেই ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে তাঁতযন্ত্র বিক্রি করে কেউ পোশাক শিল্পে, কেউ বা মাটিকাটা শ্রমিক, কেউ রিকশাচালকের কাজ নিয়েছেন। অনেকে বেকার জীবনের অভিশাপ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। দৃষ্টান্তস্বরূপ বলা যায়, পাবনা অঞ্চলের প্রায় অর্ধেক তাঁতযন্ত্র বন্ধ হয়ে গেছে। একই পরিস্থিতি অন্যান্য এলাকায়ও। তাঁত বিক্রি করতে না পেরে অনেকেই তাঁতযন্ত্রের কাঠ জ্বালানি হিসেবে এবং লোহা ভাঙ্গাড়ির দোকানে বিক্রি করে দিচ্ছেন।
আদিকাল থেকে পাবনা তাঁতসমৃদ্ধ জেলা হিসেবে পরিচিত। হস্তচালিত তাঁতের সংখ্যা ৫৫ হাজার ও বিদ্যুৎচালিত পাওয়ারলুমের সংখ্যা প্রায় ২২ হাজার। এতে জড়িত রয়েছে প্রায় দেড় লাখ শিশু ও নারী-পুরুষ।
এমন পরিস্থিতিতে তাঁতশিল্প ও শিল্পীদের রক্ষা করার দায় সরকারের। তাঁতবস্ত্রের বাজার সৃষ্টিতে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা দেয়া অপরিহার্য। সহজ শর্তে ঋণ ও শুল্ক রেয়াত দেয়ার ব্যবস্থা করা ছাড়াও তাঁতবস্ত্র বাজারজাত করার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়াও সরকারের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। যারা বেকার হয়েছেন, পুঁজি খুইয়েছেন, তাদের ব্যাপারে সরকারের বিশেষ ভাবনা থাকা জরুরি।


আরো সংবাদ



premium cement
তীব্র তাপপ্রবাহে বাড়ছে ডায়রিয়া হিটস্ট্রোক মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস : প্রধানমন্ত্রী মৌসুমের শুরুতেই আলু নিয়ে হুলস্থূল মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এত শক্তি প্রয়োগের বিষয়টি বুঝতে পারেনি ইসরাইল রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ : মর্টার শেলে প্রকম্পিত সীমান্ত বিএনপির কৌশল বুঝতে চায় ব্রিটেন ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আজ নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততায় ঝুঁকি রয়েছে : সেনাপ্রধান নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বিএনপি : কাদের রৌমারীতে বড়াইবাড়ী সীমান্তযুদ্ধ দিবস পালিত

সকল