২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সংসদ ভেঙে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার

ক্ষমতাসীন ছাড়া সবার দাবি একই

-

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের বাইরের সব রাজনৈতিক দল সামনে নিয়ে এসেছে একই দাবিÑ নির্বাচনের আগে সংসদ বাতিল করতে হবে, বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, একটি দলনিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করতে হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেÑ অন্যান্য দাবির মধ্যে তাদের এসব অভিন্ন দাবি রয়েছে।
বাম, ইসলামপন্থী কিংবা জাতীয়তাবাদী দলগুলোও জোট গঠন করে দাবি করছেÑ রাজনৈতিক দলগুলো ও সমাজের অন্যান্য মহলের সাথে আলোচনা করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং ইভিএম ব্যবহার না করার জন্য। গত শনিবার গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, ইসলামী আন্দোলন (গত ৫ অক্টোবরের সমাবেশে), জমিয়তে উলামায়ে ইসলামী বাংলাদেশ (গত রোববারের সেক্রেটারিদের বৈঠকে) দাবি তুলেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দিয়ে সেনা মোতায়েন করতে হবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, ইসলামী আন্দোলন এবং গত জুলাই মাসে গঠিত বাম গণতান্ত্রিক জোট বলেছেÑ দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়। সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছেন বাম জোটের নেতাকর্মীরা।
গত শনিবার গঠিত নতুন জোট ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, তারা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করবেন গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য। এ লক্ষ্যে তারা দাবি তোলেন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের, যা অনুষ্ঠিত হতে হবে দলনিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে।
কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী দল-জোটের এসব অভিন্ন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং আবারো জোর দিয়ে বলছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংবিধানের আওতায়ই হবে আগামী নির্বাচন। আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য মো: ফারুক খান একটি ইংরেজি দৈনিককে বলেছেন, এসব দাবি অসাংবিধানিক এবং আওয়ামী লীগ তা মেনে নেবে না। তিনি বলেন, তারা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দাবি মেনে নেবেন না। আর এই ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছে খুনি ও চরমপন্থীদের নিয়ে। সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ওই ব্যাপারে এবং এই দাবি প্রসঙ্গে তিনি কোনো মন্তব্য করতে আগ্রহী নন। তিনি বলেন, তারা যদি আন্দোলন করে এসব দাবি আদায় করতে পারে তবে ভালো কথা। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, খুনিদের সাথে হাত মিলিয়েছেন কামাল-রব-মান্না। এমন প্রেক্ষাপটে সরকারের বাইরে যেসব দল ও জোট এসব অভিন্ন দাবি তুলছে, তাদের সামনে একটি পথ হচ্ছে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে এসব দাবি মানতে বাধ্য করা। বিরোধী মতাবলম্বীদের ওপর কঠোর অবস্থান গ্রহণকারী এ সরকারকে বাধ্য করার জন্য বিরোধী দল-জোটগুলোর এই অভিন্ন দাবি আদায়ে সব দল-জোট মিলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে যাওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। অপর দিকে, সরকার যদি মনে করে সরকারের বাইরের সবাই যখন একই দাবি নিয়ে হাজির, অতএব এটি জনদাবিতে পরিণত হয়েছে; তাতে ইতিবাচক সাড়া দেয়া প্রয়োজন। আমরা মনে করি, সরকার সে পথে এগোলেই সবার মঙ্গল। এ জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসা। সরকার এ কাজ যত তাড়াতাড়ি করবে ততই মঙ্গল।


আরো সংবাদ



premium cement