২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
পাটের বহুমুখী ব্যবহার

সোনালি আঁশের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল

-

পাট নিয়ে নতুন করে আশাবাদ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষত পাটের বহুমুখী ব্যবহারের উদ্যোগই এই আশাবাদ সৃষ্টির মূল কারণ। সম্প্রতি পাট প্রক্রিয়াজাত করে বহু ধরনের পণ্য তৈরি হচ্ছে। এর আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যও বেশি। হালে পাট দিয়ে তৈরি ব্রিফকেসের বাজারজাত শুরু হয়েছে।
তা ছাড়া সোনালি আঁশ পাট থেকে বাণিজ্যিকভাবে পরিবেশবান্ধব পলিথিন তৈরিতে যুক্তরাজ্যের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ফুটামুরা কেমিক্যালের সাথে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন। চুক্তি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি পলিথিনের বিকল্প সোনালি ব্যাগ উৎপাদনে সব ধরনের মেশিনারি ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দেবে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী জুন মাসের মধ্যে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাবে বিজেএমসি।
বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পাট থেকে পলিথিন (জুটপলি) উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করতে ইতোমধ্যে সমঝোতাস্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। বিজেএমসি ও ফুটামুরা কেমিক্যাল কোম্পানির কর্মকর্তাপর্যায় এ সমঝোতাস্মারকে স্বাক্ষর করেন। এ সময় পলিথিন তৈরির উদ্ভাবক ড. মোবারক হোসেন খানও এই আনুষ্ঠানিকতায় উপস্থিত ছিলেন।
উদ্ভাবিত পলিথিনের বিকল্প ‘জুটপলি’ সোনালি ব্যাগ দেখতে প্রচলিত পলিথিনের মতোই। পাটের সূক্ষ্ম সেলুলোজকে প্রক্রিয়াজাত করে অন্যান্য পরিবেশবান্ধব দ্রব্যের মাধ্যমে কম্পোজিট করে সোপ্রুল ব্যাগ তৈরি করা হয়। এটি পচনশীল, মাটির সাথে মিশে যায়। আগামী ৬ থেকে ৯ মাসের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে পাট থেকে পলিথিন উৎপাদন শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রথম দিকে স্বাভাবিক পলিথিনের তুলনায় এই ব্যাগের দাম কিছুটা বেশি হবে। তবে উৎপাদন বাড়লে দামের সমন্বয় হয়ে যাবে। পাট থেকে তৈরি এই পলিথিন ব্যাগের নাম হবে ‘সোনালি ব্যাগ’।
যত দূর জানা যায়, এখন পাট থেকে বিমানের ইন্টেরিয়র তৈরি হয়। পাটের বহুমুখী পণ্যের সংখ্যা ৩৫ থেকে এখন ২৮৫টিতে উন্নীত হয়েছে। কারণ বহুমুখী পাটপণ্যের ওপর ২০ শতাংশ ইনসেনটিভ দেয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন হওয়ার ফলে মোট উৎপাদিত কাঁচা পাটের প্রায় ৪০ শতাংশ স্থানীয়ভাবে ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে। এ পলিথিনের উদ্ভাবক বাংলাদেশী বিজ্ঞানী মনে করেন, এটা পরিবেশবান্ধব, এটাকে আমরা আবারো ব্যবহার করতে পারব। এতে এর প্রাইস অনেক কমে আসবে। এ প্রোডাক্ট বাংলাদেশ সারা বিশ্বে ব্র্যান্ড করতে পারবে।
একসময় পাট ছিল রফতানি পণ্যের শীর্ষে। এখন আবার পাটের দিকে উদ্যোক্তা, কৃষক ও পাটজাত পণ্য উৎপাদনকারীদের নজর পড়েছে। আমরা আশা করি, আরো সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া সম্ভব হলে পাটের সোনালি অতীত অবশ্যই ফিরে আসবে। আমরা সেই সোনালি আঁশের ভবিষ্যৎ ফিরে আসার অপেক্ষায় রইলাম।

 


আরো সংবাদ



premium cement