দেশটিকে এ জন্য ভুল স্বীকার করতে হবে
- ০৮ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০
মিয়ানমারের ঔদ্ধত্য সময়ের সাথে শুধু বেড়েই চলেছে। রোহিঙ্গা বিতাড়ন ও এই জনগোষ্ঠীকে নিধনযজ্ঞ যেভাবে দেশটি প্রকাশ্যে চালিয়েছে, তাতে বিশ্বের বিবেকবান মানুষ প্রবলভাবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। গোটা দুনিয়া মিয়ানমারে পরিচালিত রোহিঙ্গা গণহত্যা ও বিতাড়ন-নিধনযজ্ঞের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। সেইসাথে রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব ও নাগরিক অধিকার দিয়ে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে নেয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। এরপরও নানা টালবাহানায় রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়া ও তাদের নাগরিকত্ব দেয়ার ব্যাপারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে দেশটি। এরই মধ্যে তারা সম্প্রতি আরেকটি বড় ধরনের ঔদ্ধত্য প্রকাশ করল তাদের মানচিত্রে বাংলাদেশের প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনকে নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে প্রদর্শন করে। সম্প্রতি জনসংখ্যাবিষয়ক মন্ত্রণালয় দেশটির যে মানচিত্র প্রকাশ করেছে, তাতে সেন্টমার্টিনকে নিজের ভূখণ্ডের অংশ হিসেবে দেখিয়েছে। এটি দেশটির একটি চরম ঔদ্ধত্য ছাড়া আর কিছুই নয়!
এ ঘটনায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি লিখিত প্রতিবাদপত্রও দেয়া হয়। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও-কে তলব করে বলা হয়েছে, মিয়ানমার সরকার গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে চাচ্ছে। মন্ত্রণালয় সূত্র এও জানিয়েছে, রাষ্ট্রদূত ঘটনা স্বীকার করে বলেছেন, এটি ভুল হয়েছে।
শনিবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমুদ্রবিষয়ক ইউনিটের প্রধান রিয়ার এডমিরাল খুরশেদ আলমের অফিসে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে এনে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়Ñ কিসের ভিত্তিতে মিয়ানমার এ দাবি করেছে? মিয়ানমার রাষ্ট্রদূত আশ্বাস দেন, তিনি এ ব্যাপারে তার সরকারের সাথে কথা বলবেন।
১৯৩৭ সালে যখন মিয়ানমার স্বাধীন হয়, তখন সেন্টমার্টিন ছিল ভারতের অংশ। ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে তখন স্পষ্ট সীমানা টানা হয়েছিল। এরপর ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান স্বাধীনতা লাভ করলে সেন্টমার্টিন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়। এরপর ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের মধ্য দিয়ে এ দ্বীপ বাংলাদেশের অংশে পরিণত হয়। এমনকি ১৯৭৪ সালে সেন্টমার্টিনকে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত দ্বীপপুঞ্জ মেনে নিয়েই মিয়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০১৭ সালে যখন মিয়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমা নিয়ে থাকা বিরোধে বাংলাদেশে জয়ী হয়, তখনো স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছিল, সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের অংশ। রোহিঙ্গা সঙ্কট থেকে চোখ সরাতেই মিয়ানমার নতুন করে এ দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করতে চাইছে বলে মনে করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
আমরা মনে করি, সেন্টমার্টিনকে মিয়ানমারের মানচিত্রের অংশ দেখানো একটি মারাত্মক গর্হিত কাজ। মিয়ানমারকে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ভুল স্বীকার করতে হবে এবং ভবিষ্যতে আর কখনো এ ধরনের দাবি তুলবে না সে ধরনের স্বীকারোক্তি দিতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা