২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`
প্রজনন মওসুমে মা ইলিশের সংরক্ষণ

নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে দরকার সচেতনতা

-

ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। জাতীয় সম্পদে এই মাছের অবদান উল্লেখের দাবি রাখে। বিশেষ করে সুস্বাদু প্রায় সব দেশীয় মাছ যখন বিলুপ্তির পথে, তখন জাতীয় মৎস্যসম্পদে ইলিশের অবদান অক্ষুণœ রয়েছে। বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন নদীগুলো ইলিশের বিচরণ ক্ষেত্র। শুধু পৃথিবীর এই এলাকায় অত্যন্ত সুস্বাদু মাছটি পাওয়া যায়। সেই ক্ষেত্রে ইলিশ কেবল বাংলাদেশের সম্পদ বলা যায়। মাছের দুর্দিনে ইলিশ বাজারের চাহিদা জোগান দিয়ে গেলেও এর পরিচর্যা কিংবা সেভাবে রক্ষার উদ্যোগ আমরা নিতে পারেনি। যেনতেনভাবে ইলিশ নিধনের ফলে এক সময় ইলিশ উৎপদানও নিম্নমুখী হয়ে যায়। বিগত কয়েক বছর ধরে ইলিশ রক্ষায় বাংলাদেশের মৎস্য বিভাগ কিছুটা হলেও যতœবান হয়েছে। ডিম ছাড়ার সময় এবং জাটকা ধরা নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে ইলিশের উৎপাদন কিছুটা বৃদ্ধির আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এবারো ভরা প্রজনন মওসুম সামনে রেখে গতকাল রোববার থেকে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইলিশ রক্ষায় সরকারের এমন উদ্যোগ সঠিকভাবে বাস্তবায়নের ওপর এর সফলতা নির্ভর করছে।
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ইলিশের অভয়াশ্রম ও বিচরণ ক্ষেত্রগুলোতে সব ধরনের মাছ ধরা, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ ও কেনাবেচা নিষিদ্ধ। মাছটির প্রজনন ক্ষেত্র ধরা হয়েছে বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন নদীগুলোর সাত হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা। ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন এসব এলাকায় মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। ৩৭টি জেলার নদ-নদী, হাট-বাজার এবং মৎস্য আড়তে বিশেষ অভিযান চালানো হবে। এই সময় সরকারি নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করলে এক থেকে দুই বছর মেয়াদে জেল কিংবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে। একই অপরাধ দুই বার করলে শাস্তি দ্বিগুণ হবে। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে দেশের সব মাছঘাট, আড়ত, হাটবাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালাবে।
আশ্বিন মাসের বড় পূর্ণিমার আগের চার দিন, পূর্ণিমার দিন ও পরের ১৭ দিনসহ মোট ২২ দিন ইলিশের প্রজনন সময়। এ সময় সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে মা ইলিশ এসে নদীতে ডিম ছাড়ে। একটি বড় ইলিশ ২৩ লাখ পর্যন্ত ডিম ছাড়তে পারে। আমরা যদি নিয়ম মেনে চলি তাহলে একটি ইলিশ না খেয়ে তার কাছ থেকে ২৩ লাখ না হোক কয়েক হাজার ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করতে পারি। ইলিশের বাড়তি উৎপাদনের জন্য এ নিষেধাজ্ঞা যথাযথভাবে আমরা পালন করতে পারি। অভিযান সফল করার জন্য উপকূলীয় জনপদে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। মাইকিং করা হচ্ছে, পোস্টার লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। বরফকলের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে, নদীসংলগ্ন খাল থেকে যেন নৌকা বের হতে না পারে, নৌকা ও ট্রলারের জ্বালানি বন্ধ রাখার চেষ্টা নেয়া হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত জেলেদের চাল বিতরণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এরপরও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ ধরার চেষ্টা করা হয়। বিশেষ করে পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেরা মাঠ ফাঁকা পেয়ে ইলিশ সংগ্রহ করে নিয়ে যায়।
ইলিশের প্রজনন নির্বিঘœ করতে প্রশাসনের নেয়া এসব পদক্ষেপকে স্বাগত জানাতে হয়। এজন্য তারা যে প্রচারমূলক কার্যক্রম নিয়েছে তাও প্রশংসনীয়। এগুলো আসলে সরকার ও তার প্রশাসনের একক প্রচেষ্টায় সম্ভব নয়। এজন্য দরকার উপকূলীয় এলাকায় যেখানে ইলিশ ধরা হয়, সেখানকার মানুষের সচেতনতা ও আন্তরিকতা। সবাই মিলে ইলিশের ডিম পাড়ার মওসুম নির্বিঘœ করতে পারলে আশা করা যায় ইলিশ উৎপাদন আরো বাড়বে। যা দেশের মানুষের মাছের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
ঢাবির কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে প্রথম হয়েছেন যারা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিজ দেশে ৫ বছর পর ফিরল দিপক চট্টগ্রামে ৬ কিশোর গ্যাংয়ের ৩৩ সদস্য আটক শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : শামসুল ইসলাম ইউরো ২০২৪’কে সামনে রেখে দল নির্বাচনে বিপাকে সাউথগেট ভারতীয় পণ্য বর্জনকে যে কারণে ন্যায়সঙ্গত বললেন রিজভী মাকে ভরণ-পোষণ না দেয়ায় শিক্ষক ছেলে গ্রেফতার প্রথম বাংলাদেশী আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে সৈকত ঢাবির সব ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ নিরাপত্তা-বিষয়ক আলোচনা করতে উত্তর কোরিয়ায় রুশ গোয়েন্দা প্রধান

সকল