২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
শিক্ষার মানের অবনমন

শিক্ষা ও পরীক্ষাপদ্ধতির পরিবর্তন দরকার

-

দেশে শিক্ষার মানে অবনমন হচ্ছে। ২০১১ সাল থেকে টানা কয়েক বছর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার বেশি এবং বিপুল শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ পাচ্ছে। কিন্তু বিস্ময়কর, এভাবে ভালো ফল করা শিক্ষার্থীরা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে ন্যূনতম নাম্বার অর্জন করতে পারছে না। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের মেধা যাচাইয়ের যে পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়, তা খুবই সাধারণ। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতামূলক নাম্বার পাওয়া দূরে থাক, পাস নাম্বার অর্জন করতে পারছে না।
নয়া দিগন্তের এক খবরে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৮-১৯ স্নাতক শিক্ষাবর্ষে ‘ক’, ‘খ’ ও ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা যায়, তিনটি ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় গড় পাসের হার ১২ দশমিক ৬৭। অর্থাৎ এ ভর্তি পরীক্ষায় ৮৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস নাম্বার তুলতে পারেননি। অপর দিকে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ‘ক’, ‘খ’, ‘গ’ ও ‘ঘ’ ইউনিটে গড় পাসের হার ছিল মাত্র ১০ শতাংশ। অর্থাৎ ওই বছর ৯০ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস নাম্বার তুলতে ব্যর্থ হন। অথচ অনুত্তীর্ণ এসব পরীক্ষার্থীর অনেকেরই এসএসসি ও এইচএসসি উভয় পরীক্ষায় জিপিএ ৫ ছিল। ২০১৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ইংরেজি বিভাগে ভর্তির জন্য মাত্র দু’জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের এ ফলাফলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, হাজার হাজার জিপিএ ৫ এবং গোল্ডেন জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীরা আসলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কী শিখছে? একই সাথে গোটা শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষাপদ্ধতি নিয়ে এখন প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে, জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়লেও শিক্ষার মান বাড়েনি, বরং শিক্ষাক্ষেত্রে একধরনের বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। কথিত ভালো ফল করা এই তরুণদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। ভবিষ্যতে তাদের শিক্ষাজীবনের ফল নিয়ে আরো খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। কারণ, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে তারা সুযোগ পাবে না।
এ কথা সত্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে শিক্ষার্থীদের পুরোপুরি মেধা যাচাই করা সম্ভব নয়। কিন্তু যে ধরনের ফলাফল আসছে, শিক্ষার মানের যে অবনমন হচ্ছে; তাতে কোনো সন্দেহ নেই; এ কারণে শিক্ষাপদ্ধতি ও পরীক্ষাপদ্ধতি নিয়ে এখন নতুন করে ভাবনার সময় এসেছে। পাসের হার বাড়ানো বা জিপিএ ৫ বাড়ানো দিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে বিপর্যয় আড়াল করা যাবে না।


আরো সংবাদ



premium cement