২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের অভিযান

স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে

-

দেশে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শন বা আগ্নেয়াস্ত্র হাতে প্রতিপক্ষের ওপর হামলার খবর প্রায় প্রতিদিনই গণমাধ্যমে প্রকাশ হচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় এভাবে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের গ্রেফতার বা আইনের আওতায় আনতে পারছে না। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার যে বাড়বে, তা সহজেই অনুমান করা যায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হিসাবে, সারা দেশে পাঁচ শতাধিক অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী রয়েছেন। আর অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র আছে চার লাখেরও বেশি। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে মজুদ করা হয়েছে বিপুল বিস্ফোরক দ্রব্য।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশ সারা দেশে অভিযান চালাচ্ছে বলে খবর এসেছে। ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ অভিযানে প্রথম ১৮ দিনে ৪৭১টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে একটি সংবাদপত্রের খবরে বলা হয়েছে। বিস্ফোরক উদ্ধারের পাশাপাশি গ্রেফতার করা হয়েছে সহস্রাধিক লোককে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো শঙ্কা প্রকাশ করেছে, সামনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এসব অবৈধ অস্ত্র ও বিস্ফোরকের মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলাটে হতে পারে। তা ছাড়া বৈধ অস্ত্রেরও হতে পারে অবৈধ ব্যবহার। এরপর পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে সারা দেশে অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধারে শুরু হয়েছে বিশেষ অভিযান।
অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের এ অভিযান নিঃসন্দেহে জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ। পুলিশ কতটা স্বাধীনভাবে এ অভিযান চালাতে পারছে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অবৈধ অস্ত্র ব্যবহারের সাথে ক্ষমতাসীন দল ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাউকে গ্রেফতারের খবর পাওয়া যায়নি। গত ছয় মাসে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের হাতে যেসব আগ্নেয়াস্ত্র দেখা গেছে, সেগুলো পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি। কিছু দিন আগে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের সময় ৪ ও ৫ আগস্ট ঝিগাতলা, ধানমন্ডি, ফার্মগেট ও সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় শিক্ষার্থী এবং সাংবাদিকদের ওপর হেলমেট পরে অস্ত্র হাতে হামলা চালায় কিছু তরুণ। ওই হামলার ঘটনায় জড়িত তরুণদের কাউকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আমরা মনে করি, রাজনৈতিক অস্থিরতার এ সময়ে অবৈধ অস্ত্রধারীদের গ্রেফতারে পুলিশের বিশেষ অভিযান অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু এ অভিযান চালাতে হবে স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে। অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করা গেলে বড় ধরনের সাফল্য পাওয়া যাবে। আমরা আশা করব, পুলিশ সেদিকেও মনোযোগী হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement