২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
জনগণকে আতঙ্ক ও ভীতি তাড়া করছে

এ অবস্থার পরিবর্তন জরুরি

-

হালে গুম হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি বেড়েছে। সেই সাথে বিচারবহির্ভূত হত্যাও চলছে। কখনো থেমে থেমে, কখনো বা প্রতিদিন। একসময় সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে বেশ ক’দিন নিখোঁজ করে রেখে পরে গ্রেফতার দেখানো হতো। আবার তুলে নেয়া কেউ কেউ ক্রসফায়ারে বেঘোরে প্রাণ হারায়। এর বাইরেও গুম হওয়া অনেকেরই লাশ মিলছে; কিন্তু কেউ দায় স্বীকার করে না।
এ ছাড়া দেশের ভেতর হত্যাকাণ্ড বেড়েছে। সামান্য কারণে একজন আরেকজনকে হত্যা করে দায় স্বীকার করে নিচ্ছে। সেই সাথে সামাজিক অস্থিরতা বেড়েছে। বেড়েছে জননিরাপত্তার আতঙ্ক। দমন-পীড়ন ও সামান্য কারণে, কখনো কারণ ছাড়াই রাজনৈতিক কর্মী ও নেতাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।
বাস্তবে সমাজে একধরনের আতঙ্ক ও অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক দলসংশ্লিষ্ট কোনো মানুষই নিজেকে নিরাপদ ভাবতে পারছেন না। বিশেষত বিরোধী দলের লোকজন তথা সব সারির নেতাকর্মী এমন এক অজানা আতঙ্কে ভুগছেন, যাতে তারা স্বস্তির সাথে জীবনযাপনের কোনো সুযোগই পাচ্ছেন না। অথচ সরকার পুলিশের প্রশংসা করছে। আইনশৃঙ্খলা উন্নতির দাবি করছে। বাস্তবে দেশে এমন এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যাতে নাগরিক জীবনে আতঙ্ক ও অস্বস্তি ছড়িয়ে পড়ছে। এক দিকে সামাজিক অপরাধ বেড়ে চলেছে, দুর্নীতির কারণে মানুষ অসহায় বোধ করছে; অথচ সরকার দাবি করছেÑ দেশ উন্নতি করছে। উন্নয়নের ছোঁয়ায় দেশে সমৃদ্ধি ও শান্তি-স্থিতির সুবাতাস বইছে। দেশের পরিস্থিতি কে বা কারা নিয়ন্ত্রণ করছে তা জানা কঠিন। অন্য দিকে গ্রেফতার আতঙ্ক এতটাই ছড়িয়ে পড়ছে, আইনজীবীরাও এ আতঙ্কমুক্ত হতে পারছেন না।
এক দিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা বলা হচ্ছে, অন্য দিকে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে। এ অবস্থায় রাজনৈতিক মেরুকরণের প্রক্রিয়া জোরেশোরে শুরু হওয়ার কথা, অথচ গণতান্ত্রিক অধিকার শুধু কেড়ে নেয়া হয়নি; জোর করে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করার সব আয়োজন করা হয়েছে।
গুম-আতঙ্ক থেকে জনগণ মুক্তি চায়। বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ চায়। সাদা পোশাকে বাসা থেকে তুলে নেয়ার অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চায়। যখন তখন ভিন্নমত ও বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক কর্মীদের গ্রেফতারের যে হিড়িক চলছে তা বন্ধ করার নিশ্চয়তা চায়। সবাই মনে করে, সরকার এমন এক পরিস্থিতির ভেতর দেশকে ঠেলে নিয়ে যেতে চায়, যেখানে শুধু আতঙ্ক-ভীতি এবং নিরাপত্তাহীনতাই নাগরিকদের তাড়া করবে, যার ভেতর নির্বাচন করে সরকার অসম প্রতিযোগিতার মধ্যে বিজয় ছিনিয়ে নিতে চায়। আমরা মনে করি, এর মাধ্যমে সরকার জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। এর কুফলই শেষ পর্যন্ত সরকারকে গণবিচ্ছিন্ন করবে, যা আমরা প্রত্যাশা করতে পারি না।


আরো সংবাদ



premium cement