২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
বাড়ছে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা ক্রমবর্ধমান

সরকারি চিকিৎসাসুবিধা বাড়াতে হবে

-

দেশে মারণব্যাধি ক্যান্সারের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রতি বছর তিন লাখেরও বেশি মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে এবং প্রায় এক লাখ রোগী মারা যাচ্ছে। ক্যান্সারের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। স্বাভাবিকভাবে দেশে গরিব ও অসহায় মানুষের পক্ষে এ ধরনের রোগের চিকিৎসা করানো সম্ভব হয় না। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে নাগরিকদের ক্যান্সারের মতো ব্যয়বহুল রোগের চিকিৎসা ব্যয় সাধারণভাবে রাষ্ট্র বহন করে থাকে।
সম্প্রতি জাতীয় সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ক্যান্সার রোগের চিকিৎসার পরিধি বাড়ানো, সহজলভ্য ও মানোন্নয়নে সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছে। ক্যান্সার চিকিৎসার ওষুধ (ক্যামোথেরাপি) উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিনামূল্যে রোগীদের দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকারের এ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।
মন্ত্রী জানিয়েছেন, গরিব রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে বিশেষ অনুদান দেয়া হচ্ছে। জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য অত্যাধুনিক রেডিওথেরাপি চিকিৎসার আধুনিক নতুন মেশিন ইতোমধ্যে সংযোজন করা হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে মহিলাদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য কয়েকটি থেরাপি মেশিন স্থাপন করা হয়েছে।
এসব উদ্যোগের পাশাপাশি ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল ও বেডের সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন। বাস্তবতা হচ্ছে, দেশে যেভাবে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা বাড়ছে সেভাবে চিকিৎসাসুবিধা বাড়ানো সম্ভব হয়নি। এ কারণে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি মানবকল্যাণের দৃষ্টিভঙ্গি সামনে রেখে বেসরকারি উদ্যোগে ক্যান্সার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠাকে উৎসাহিত করা প্রয়োজন। বিশ্বের অনেক দেশে বেসরকারি উদ্যোগে এ ধরনের হাসপাতাল রয়েছে। শুধু ক্যান্সার নয়, মারণব্যাধি অন্যান্য রোগের চিকিৎসায় সরকারিভাবে ব্যয় বাড়ানো প্রয়োজন।
শুধু রোগের চিকিৎসা নয়, এ রোগের যাতে বিস্তার না ঘটে; সে ব্যাপারে সচেতনতামূলক কর্মসূচি নেয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা কেন বাড়ছে, সে ব্যাপারে নিবিড় গবেষণা প্রয়োজন। এখন পর্যন্ত তামাক, দূষণ ও অনিরাপদ খাদ্যাভ্যাসের কারণে বাংলাদেশে এ ধরনের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে। আমরা মনে করি, এ বিষয়ে জনসচেতনতা ও চিকিৎসাসেবার মান বাড়াতে সরকারকে আরো জনসম্পৃক্ততামূলক কর্মসূচি হাতে নিতে হবে।
আশা করি, ক্যান্সারসহ দুরারোগ্য চিকিৎসার ব্যাপারে সরকার যেসব উদ্যোগ নিয়েছে, তা পর্যায়ক্রমে সম্প্রসারণ করা হবে। একইভাবে বেসরকারি পর্যায়ে এ ধরনের চিকিৎসাসুবিধা বাড়ানোর দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেয়া হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement