২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`
জাতিসঙ্ঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্ট : রোহিঙ্গা ইস্যু

জেনারেলদের দ্রুত বিচার করতে হবে

-

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনী যে গণহত্যা ও জাতিগত নির্মূল অভিযান চালিয়েছে, তা এখন আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। রোহিঙ্গা নিপীড়নের তদন্তে জাতিসঙ্ঘ গঠিত স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে দেশটির সেনাবাহিনীর অপরাধের নানা বিবরণ পাওয়া গেছে। বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যত দিন আইনের ঊর্ধ্বে থাকবে, তত দিন দণি-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে শান্তি ফিরবে না। দীর্ঘ ১৫ মাসের তদন্ত শেষে তিন সদস্যের এই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন ৪৪০ পৃষ্ঠার যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিয়েছে, তাতে রাখাইনসহ মিয়ানমারের তিনটি রাজ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ভয়ঙ্কর সব বিবরণ উঠে এসেছে।
ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সদস্যরা এই প্রতিবেদনে জাতিসঙ্ঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য মিয়ানমারের সেনাপ্রধান এবং জ্যেষ্ঠ পাঁচ জেনারেলকে বিচারের মুখোমুখি করার কথাও আছে। ব্যাপ্তির দিক দিয়ে ‘অনন্য’ এই প্রতিবেদন মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর (তাতমাদো) মানবাধিকার ও আইন লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর স্পষ্ট একটি ‘প্যাটার্ন’ চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই সাথে অপরাধের মাত্রা নিয়ে বিশদ আইনি পর্যালোচনা ও সুপারিশ রয়েছে।
ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রধান বলেছেন, মিয়ানমারে শান্তি চাইলে সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হাইংসহ তাতমাদোর শীর্ষপর্যায়ের সব কর্মকর্তাকে সরিয়ে দিয়ে এই বাহিনীকে এমনভাবে ঢেলে সাজাতে হবে, যাতে এর পুরো নিয়ন্ত্রণ বেসামরিক প্রশাসনের হাতে থাকে। মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক পরিবেশ চাইলে এর কোনো বিকল্প নেই বলেই জাতিসঙ্ঘের তদন্তকারীরা মনে করছেন।
গত বছর গঠিত জাতিসঙ্ঘের এই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সদস্যরা বাংলাদেশসহ পাঁচটি দেশে আশ্রয় নিয়ে থাকা ৮৭৫ জন রোহিঙ্গার সাাৎকার নিয়ে, নথিপত্র, ভিডিও, ছবি এবং স্যাটেলাইট ইমেজ পর্যালোচনা করে তাদের প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। সেখানে দেখানো হয়েছে, পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করা রোহিঙ্গাদের কিভাবে ধাওয়া করে ধরা হচ্ছে, সৈন্যরা প্রথমে তাদের গুলি করছে, তাতেও মৃত্যু না হলে প্রত্যেকের গলা কেটে ফেলা হচ্ছে। তারপর তারা নজর দিচ্ছে নারী ও শিশুদের দিকে। মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে নদীতে বা আগুনে ছুড়ে ফেলা হয়েছেÑ সেসব ভয়ঙ্কর বিবরণও এসেছে প্রতিবেদনে। হত্যাযজ্ঞ শেষে মেয়েদের ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে গ্রামে। পালা করে ধর্ষণ করার পর কাউকে কাউকে হত্যা করা হয়েছে। বয়স্ক, শিশু আর নির্যাতিত নারীদের ঘরের ভেতরে আটকে আগুন দেয়া হয়েছে বাড়িতে।
জাতিসঙ্ঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের এই প্রতিবেদনের পর মিয়ানমারের জেনারেলদের শুধু বিচার নয়, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারেও চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের উচিত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা। একই সাথে জেনারেলদের বিচার শুরু করার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরো সোচ্চার হতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে আর কোথাও এমন মানবতাবিরোধী অপরাধ না ঘটে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
প্রথম ধাপের উপজেলা ভোটে ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী বিখ্যাত চালকবিহীনবিমানের আবিষ্কারক কটিয়াদীতে আসছেন গাজার গণকবরের ‘বিশ্বাসযোগ্য ও স্বাধীন’ তদন্তের আহ্বান জাতিসঙ্ঘের চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা পেকুয়ায় জমি নিয়ে সংঘর্ষে আহত ১৪ তড়িঘড়ি ও জোরপূর্বক একীভূতকরণ ব্যাংকিং খাতে অব্যাহত দায়মুক্তির নতুন মুখোশ : টিআইবি লেবাননে ইসরাইলি হামলায় ইরান সমর্থিত যোদ্ধা নিহত জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য ক্যাম্পে ডাক পেলেন ১৭ ক্রিকেটার, নেই সাকিব-মোস্তাফিজ উত্তর গাজায় আবারো ইসরাইলের গোলাবর্ষণ ধামরাইয়ে তাপদাহে জনজীবন কাহিল, ডায়রিয়াসহ জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরছেন ১৭৩ বাংলাদেশী

সকল