আইনের শাসন ভেঙে পড়ছে
- ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা আবার বেড়ে গেছে। গত এক সপ্তাহে বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে তুলে নেয়ার পর হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে এক দিনে তিনজনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের পরিবার থেকে দাবি করা হয়েছে ঝিনাইদহ থেকে ঢাকা ফেরার মাঝপথে গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা তুলে নিয়ে যায়। পরে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অবশ্য এসব হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। কিন্তু অতীতেও এভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৮ মাসে ৩৬১ জন মানুষ ক্রসফায়ারের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ২৭ জন গুম হয়েছেন। অর্থাৎ বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের ঘটনা ধারাবাহিকভাবে চলছে। গুমের ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায় কোনো ব্যক্তিকে হঠাৎ কিছু লোক আচমকা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য পরিচয় দিয়ে বিনা ওয়ারেন্টে মাইক্রোবাস বা গাড়িতে তুলে নিয়ে উধাও হয়ে যাচ্ছে। এরপর কোনো নির্জন স্থানে তাদের লাশ পাওয়া যাচ্ছে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে এসব ব্যক্তি বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
গুমের পর বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত শুরু হয় ২০০৯ সালের পর থেকে, যা এখনো অব্যাহত আছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিতর্কিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে বিরোধী দলের অনেক নেতাকর্মীকে গুম করা হয়, যাদের মধ্যে অনেকেই এখনো ফিরে আসেননি। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভিন্নমতাবলম্বী ব্যক্তিবর্গ, বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা গুম হতে পারেন এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের তদন্ত প্রতিবেদন থেকে প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও সরকারের উচ্চমহল থেকে গুমের বিষয়গুলো অস্বীকার করা হচ্ছে।
কার্যত গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো দেশে একধরনের ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। শুধু রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা নন, পারিবারিক ও ব্যবসায়িক বিরোধেও মানুষ গুম ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন। যার সাথে নানাভাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাচ্ছে, যা দেশের আইনের শাসনের জন্য ভয়াবহ হুমকি। আমরা মনে করি, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। না হলে দেশে বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা