১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
প্রতীকী অনশনকালেও থামেনি ধরপাকড়

অবিলম্বে এসব বন্ধ করতে হবে

-

সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। দেশের অন্যতম জনপ্রিয় দল বিএনপির চেয়ারপারসন ও তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে। এমনি অবস্থায় বিএনপি বলছে, খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। অনতিবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে এবং নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এ জন্য বিএনপিসহ সরকারের বাইরে থাকা রাজনৈতিক দল-মহলগুলোর পক্ষ থেকে নানা ধরনের দাবি উত্থাপিত হচ্ছে। সরকার এসব দাবি প্রত্যাখ্যান করে চলেছে। একই সাথে খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রশ্নেও কোনো ইতিবাচক আশ্বাস দিচ্ছে না। এমনি প্রেক্ষাপটে বিএনপি বলছে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করবে এবং খালেদা জিয়াকে মুক্ত করেই তাকে নিয়ে জাতীয় সংসদের নির্বাচনে অংশ নেবে। এ ব্যাপারে সরকারের ইতিবাচক কোনো সাড়া না পেয়ে বিএনপি এরই মধ্যে কিছু কিছু আন্দোলন কর্মসূচি পালন করা শুরু করে দিয়েছে। ইতোমধ্যে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপি মানববন্ধন ও প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করেছে। কিন্তু এর বিপরীতে সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের ভুতুড়ে মামলা দায়ের ও ধরপাকড় করছে। সময়ের সাথে এর তীব্রতাও বাড়ছে। এমনকি প্রতীকী অনশন চলার সময় ব্যাপক ধরপাকড় করার অভিযোগ শোনা যাচ্ছে।
একটি জাতীয় দৈনিকের খবরে বলা হয়েছেÑ খালেদা জিয়ার কারামুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবি এবং কারাভ্যন্তরে আদালত স্থাপনের প্রতিবাদে রাজধানীসহ সারা দেশে মহানগর ও জেলাপর্যায়ে দুই ঘণ্টার প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি গত পরশু। কর্মসূচিতে ২০ দলীয় জোটের শরিক দলের নেতাকর্মী ও বিএনপিসহ এর অঙ্গ দলের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। প্রতীকী অনশন কর্মসূচিতে রাজধানীসহ সারা দেশের বিভিন্ন জেলায় পুলিশি ধরপাকড়ের শিকার হয়েছেন বিএনপি ও অঙ্গ দলের নেতাকর্মীরা। বিএনপি দাবি করেছেÑ রাজধানীসহ সারা দেশে তাদের দেড় শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে এ ধরনের ধরপাকড় ও মামলা দায়ের নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতিকে আরো উত্তপ্ত করে তুলবে। ইতোমধ্যে সরকার নির্বাচনের সময় বিএনপি ও সমমনা দলের নেতাকর্মীদের হয়রানির জন্য যেমন ভুতুড়ে মামলা দায়ের করে রাখছে নামে বা বেনামে তা গণমাধ্যমে প্রবল সমালোচনা হচ্ছে। গণমাধ্যমে খবর আসছে, কোনো ঘটনা ঘটেনি এমন বানোয়াট ঘটনার উল্লেখ করে পুলিশ অসংখ্য মামলা দায়ের করে রেখেছে। গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মামলায় এমন ব্যক্তিদের জড়ানো হয়েছে, যারা আসলে মৃত কিংবা ঘটনার সময় হজপালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব অবস্থান করেছেন কিংবা অন্য কোনো দেশে প্রবাসজীবন যাপন করছেন।
সরকারের উচিত এ ধরনের মামলা থেকে পুলিশ যাতে বিরত থাকে সে ব্যাপারটি নিশ্চিত করা। কারণ, এতকাল সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলোর দমনপীড়নের অভিযোগ সম্পর্কে জনমনে সরকারের জন্য নেতিবাচক বার্তা পৌঁছায়। সরকারকে তাই নিজের স্বার্থে এ ধরনের গণহারে ধরপাকড়, গ্রেফতার-আটক, নিখোঁজ করা ও ভুতুড়ে মামলা দায়েরের তৎপরতা থেকে সরে আসতে হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement