১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
নদীভাঙনে ব্যাপক ক্ষতি

স্থায়ী সমাধানের পথ খুঁজতে হবে

-

দেশের বিভিন্ন জেলায় নদীভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ দেশে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মতো নদীভাঙনও একটি বড় ধরনের বিপর্যয়। প্রতি বছর শত শত মানুষ নদীভাঙনে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ে। বিশেষত, এবারে নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলছে। দেশের প্রধান তিনটি নদী পদ্মা, যমুনা ও তিস্তার দুই পাড়ের বেশ কিছু এলাকায় ভাঙনের কারণে বহু মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে সিরাজগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও রাজবাড়ী জেলায় যমুনা ও পদ্মার ভাঙনে বসতবাড়ি, বাজার, হাসপাতাল ও সরকারি ভবনসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাই নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। যমুনার সর্বগ্রাসী থাবায় মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলা।
নদীভাঙন পুরোপুরি রোধ করা সম্ভব না হলেও কোন কোন এলাকা বেশি ভাঙনপ্রবণ, তা নদীবিশেষজ্ঞরা আগাম বুঝতে পারেন। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়াও সম্ভব। প্রতি বছরই পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নদীভাঙন রোধে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। তবে এতে দুর্নীতি ও অনিয়মের ঘটনাও ঘটে থাকে। যেমন পদ্মা-যমুনার ভাঙনে দিশেহারা লোকজন তাদের দুরবস্থার জন্য অপরিকল্পিত নদী খনন ও ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলা নিয়ে সংঘটিত দুর্নীতিকে দায়ী করেছেন।
নদীভাঙনে দেশের কয়েকটি নির্দিষ্ট এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে শরীয়তপুর, মুন্সীগঞ্জ, সিরাজগঞ্জের কাজীপুর এবং উত্তরাঞ্চলের কিছু চর এলাকা। নয়া দিগন্তসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নতুন ভবনটি ভাঙনের দরুন নদীতে চলে গেছে। হাসপাতাল ক্যাম্পাসের একটি আবাসিক ভবনে জরুরি বিভাগ ও বহিঃবিভাগ চালু রাখা হলেও হাসপাতালে প্রবেশের সড়কটি নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় ভয়ে রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসছেন না। ফলে এ উপজেলার তিন লক্ষাধিক লোকের স্বাস্থ্যসেবা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে, এ উপজেলার চরাঞ্চলের পাঁচটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক পরিবারের নারী ও শিশু রোগীদের চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় লোকজন দ্রুত অন্যত্র হাসপাতালের কার্যক্রম চালু করার দাবি জানিয়েছেন।
সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলাও ভাঙনকবলিত একটি উপজেলা। যমুনার ভাঙন রোধে ১৯৫৩ সাল থেকে এ উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে অনেক প্রকল্প নেয়া হলেও আজ পর্যন্ত অবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি। আমরা মনে করি, নদীভাঙন রোধে সরকারের সার্বিক ও কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত, যাতে স্থায়ীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়। সেই সাথে ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষের পুনর্বাসনের দিকটি বিবেচনায় নিতে হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement