২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
নিখোঁজ ১১ ছাত্র

পুলিশকে আইন মেনে চলতে হবে

-

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের নামে সাধারণ মানুষ নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে। সুস্পষ্ট তথ্যপ্রমাণ বা মামলা ছাড়া বহু মানুষকে পুলিশ গ্রেফতার করছে। গ্রেফতারের পর আটক ব্যক্তিদের আদালতে হাজির না করার অভিযোগ আছে। এক দশক ধরে দেশে গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা যেভাবে বেড়েছে, তাতে এমন গ্রেফতারের ঘটনার পর আটক ব্যক্তিদের পরিবারে আতঙ্ক নেমে আসছে। দেশের প্রচলিত আইনে ২৪ ঘণ্টার বেশি কাউকে আটক রাখার বিধান না থাকলেও দিনের পর দিন আটক ব্যক্তিদের আটকে রাখা হয়। এ ধরনের অভিযোগ সবচেয়ে বেশি উঠেছে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটক হওয়া ব্যক্তিদের ব্যাপারে। যদিও গ্রেফতারের পর পুলিশ আটকের কথা অস্বীকার করে থাকে।
সম্প্রতি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে পুলিশ ৩৮ ছাত্রকে তুলে নিয়ে যায়। এর মধ্যে ২৬ জনকে ছেড়ে দেয়া হলেও ১১ জনের কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এই ছাত্রদের অভিভাবকেরা সংবাদ সম্মেলন করে আটকদের মুক্তি দাবি করেছেন। যাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে তারা জানিয়েছেন, এই ১১ ছাত্র গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়–য়া এই ছাত্রদের আটকের খবর পাওয়ার পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অভিভাবকেরা ঢাকায় চলে এসেছেন। অনেকে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ের সামনে সন্তানের জন্য অপেক্ষা করেও কোনো খবর জানতে পারেননি। অভিভাবকেরা বলছেন, পুলিশ তাদের আটকের খবর অস্বীকার করায় তারা আরো বেশি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কেন এভাবে ছাত্রদের আটক করছে, তার সুস্পষ্ট কারণ জানা যাচ্ছে না। তবে ছাড়া পাওয়া ছাত্ররা জানিয়েছেন, কোটা আন্দোলন কিংবা নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে এই ছাত্ররা সম্পৃক্ত কি না তা জানার জন্য এদের আটক করা হয়েছে। এমনকি আটক অবস্থায় ছাত্রদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ করা হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলন এখন বন্ধ হয়ে গেছে। ছাত্রদের আন্দোলনের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নিজেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলছে বলে সরকারিভাবে জানানো হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এই আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগে সাধারণ ছাত্রদের আটক বা হয়রানি করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ছাড়া, এ দু’টি আন্দোলন ছিল একেবারেই স্বতঃস্ফূর্ত, যার পেছনে কোনো ধরনের রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির লক্ষ্য ছিল না। এভাবে সাধারণ ছাত্রদের আটক বা হয়রানি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা আশা করব, আটক ১১ ছাত্রকে আদালতে হাজির করে দ্রুত মুক্তির ব্যবস্থা করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement