পুলিশের আন্তরিক পদক্ষেপ প্রয়োজন
- ২১ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০
পশুবাহী ট্রাকে চাঁদাবাজি একটি প্রতিষ্ঠিত অপব্যবস্থা। প্রতি বছর ঈদের আগে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হয়। এবারো তা থেকে ব্যতিক্রম কিছু হয়নি। এসব আলোচনা-সমালোচনার প্রেক্ষাপটে পুলিশ প্রতি বছরই জোর গলায় বলে, এই চাঁদাবাজি ঠেকাতে পুলিশ কঠোর অবস্থান নিয়েছে। পুলিশ চাঁদাবাজিকে প্রশ্রয় দেবে না। এবারো পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তার পক্ষ থেকে আমরা সুদৃঢ় উচ্চারণ শুনেছি, পুলিশ চাঁদাবাজির ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এবার পশুবাহী যানে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি চলবে না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে চাঁদাবাজি চলমান, তবে তা চলছে ভিন্ন ধরনে।
একটি জাতীয় দৈনিক জানিয়েছে, কোরবানির ঈদের আগে সড়ক-মহাসড়কে পশুর ট্রাক থামিয়ে চাঁদাবাজি চলছে সেই আগের মতোই। এত দিন পুলিশ, পরিবহন শ্রমিক ও সরকার সমর্থক প্রভাবশালীদের বড় অঙ্কের চাঁদা দিয়েই পশুর ট্রাক রাজধানীতে আনতে হয়েছে। চাহিদামতো চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে লাঠিয়ালবাহিনীর হাতে নাজেহাল হয়েছেন বহু পশু ব্যবসায়ী। এবার কয়েক দিন আগে পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. জাবেদ পাটোয়ারী কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, পথে কোনো পশুর ট্রাক থামানো যাবে না। নেয়া যাবে না কোনো চাঁদা। শ্রমিকনেতারাও চাঁদা না নেয়ার ব্যাপারে সরকারকে আশ্বস্ত করেছেন। এত কিছুর পরও বন্ধ হয়নি পশুর ট্রাক থেকে চাঁদাবাজি। তবে এবার পাল্টেছে চাঁদাবাজির ধরন। ট্রাকভাড়ার মধ্যেই চাঁদার টাকা যোগ করে দেয়া হচ্ছে। ফলে অনেক জায়গায় পথে কেউ ট্রাক না আটকালেও পুলিশ ও শ্রমিকনেতাদের কাছে ঠিকই পৌঁছে যাচ্ছে। বখরা এর ফলে ট্রাকভাড়ার পরিমাণ ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বেড়ে যাচ্ছে।
পত্রিকাটি জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গা থেকে রাজধানীতে এক ট্রাক গরু আনতে গত বছর ট্রাকভাড়া ছিল ২০ হাজার টাকা। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার টাকায়। এমনটি জানিয়েছেন জনৈক গরুর বেপারি। ট্রাকচালকেরা ভাড়া ঠিক করার আগে বলেছেন ‘রাস্তার খরচ’ বেপারিরা দিলে ভাড়া ২০ হাজার দিলেই চলবে। আর রাস্তার খরচ চালকদের দিতে হলে ভাড়া হবে ৩০ হাজার টাকা। ওই বেপারি বলেছেন, রাস্তার মধ্যে লাঠিয়াল বাহিনী দাঁড়িয়ে থাকে, চাহিদামতো টাকা না দিলে হেনস্তা করে। ট্রাক আটকে রাখে। অনেক সময় মারধর করে। তাই ব্যবসায়ীদের চালকের কথাতেই রাজি হতে হয়। তিনি জানান, রাস্তায় ছয়-সাত জায়গায় ট্রাক থামিয়ে ছিল। চালক কত টাকা করে দিয়েছে, বেপারি তা জানেন না।
শুধু চুয়াডাঙ্গা থেকে রাজধানীতে আসা পশুর ট্রাককেই এভাবে চাঁদা দিতে হয় তা নয়, সারা দেশ থেকে আসা গরুর বেলায় একই কায়দায় চাঁদাবাজি চলছে। পুলিশ সক্রিয় হলে এসব চাঁদাবাজি বন্ধ হতে পারত। সেই সাথে ক্ষমতাসীনদের লোকজনকে যদি চাঁদাবাজি থামাতে সরকার পক্ষ কার্যকর ও আন্তরিক পদক্ষেপ না নেয়, তবে কোনো দিনই এই চাঁদাবাজি বন্ধ হবে না।
আমরা মনে করি, সরকার ও পুলিশের আন্তরিক পদক্ষেপই পারে এ চাঁদাবাজির অবসান ঘটাতে। আমরা পুলিশ ও সরকারের সেই ভূমিকাই কামনা করছি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা