২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

সাংবাদিক, লেখক ও মানবাধিকার কর্মীদের উদ্বেগ

-

গত পরশু ঢাকায় প্যান ইন্টারন্যাশনালের বাংলাদেশ শাখার একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংস্থাটির বাংলাদেশ শাখার সভাপতি মাসুদ আহমেদ। সভায় অন্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, ব্রতীর প্রধান নির্বাহী শারমিন মুর্শিদ, কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাসুদুজ্জামান, প্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর সৈয়দ আইরিন জামান, উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্য কাজী রোজী প্রমুখ। গোলটেবিল আলোচনায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্যান ইন্টারন্যাশনালের কার্যনির্বাহী সদস্য শাহজাহান সিদ্দিকী।
সভায় সাংবাদিক, লেখক ও মানবাধিকার সংস্থার নেতৃবৃন্দ বলেছেন, দেশে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক প্রসারের প্রেক্ষাপটে একটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজন রয়েছে। তবে বর্তমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়ার কনটেন্ট ঠিক রেখে যদি তা সংসদে পাস করা হয় তবে গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ব্যাপকভাবে সঙ্কুচিত করে আনবে। তা ছাড়া, এই খসড়া আইনটি যদি একবার সংসদে পাস হয়ে যায়, তবে তা মানুষের মতপ্রকাশ ও চিন্তার স্বাধীনতা দমনে অপব্যবহার হতে পারে।
সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, ‘আইয়ুব খান ও এরশাদের সময় মানুষ বিবিসির খবর বেশি শুনত। এখন দেশের গণমাধ্যমের খবর শুনে। মতপ্রকাশ একটি ভঙ্গুর, ফুলের মতো জিনিস। আপনি জোরে একটা ধাক্কা দিলে এটা কিন্তু মতপ্রকাশ হবে না। এতে করে মতপ্রকাশের জগৎটা ছোট হয়ে আসবে। যখনই মতপ্রকাশের জগৎ ছোট হয়ে আসে, তখনই কিন্তু গুজব ছড়ায় বেশি। তিনি আরো বলেন, নতুন প্রস্তাবিত ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট পাস হলে আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় মতপ্রকাশের একটি ধারা প্রবর্তিত হবে। এই খসড়ায় এমন একটি ধারা আছে, যেখানে বলা আছেÑ পরোয়ানা ছাড়াই তল্লাশি, জব্দ ও গ্রেফতার করা যাবে। কোনো ধরনের পরোয়ানা থাকবে না, আপনাকে তল্লাশি করবে। আপনার কম্পিউটার সিস্টেম জব্দ করবে এবং প্রয়োজনে আপনাকে গ্রেফতার করবে। গ্রেফতার করবে পুলিশ। আমি মনে করি, এর মাধ্যমে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবে।’ সভায় অন্য বক্তাদের অভিমত হচ্ছেÑ ব্যক্তি স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ৫৭ ধারার অপব্যবহার হচ্ছে। কেউ কেউ বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়াটি পুরোপুরি বাতিল করতে হবে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া নিয়ে সাংবাদিক, লেখক, মানবাধিকার সংস্থাসহ সুশীলসমাজের পক্ষ থেকে নানা আপত্তি এসেছে। এগুলো বিবেচনায় নিতে হবে। আপত্তিকর ধারাগুলো সংশোধন করতে হবে। সরকার সমর্থক ও সরকারবিরোধী সব মহলই এসব ধারা পরিবর্তনের কথা বলছে। আশা করি, সরকার তা বিবেচনায় নেবে।


আরো সংবাদ



premium cement