১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
খেলাপি ঋণের ভারে ন্যুব্জ ব্যাংক খাত

সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে আদায় করা হোক

-

দেশে খেলাপি ঋণ সমস্যা দীর্ঘ দিনের। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এ সমস্যার তীব্রতা ক্রমেই বাড়ছে, যদিও সমস্যাটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে গণমাধ্যম ও টিভি চ্যানেলগুলোর টকশোয়। এরপরও এ সমস্যা সমাধানে কার্যকর কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। ফলে সমস্যাটি সময়ের সাথে জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। আর এই খেলাপি ঋণ সংস্কৃতিতে আটকা পড়ে ন্যুব্জ হয়ে পড়ছে গোটা ব্যাংক খাত।
গতকালের বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে খেলাপি ঋণ নিয়ে যেসব খবর প্রকাশিত হয়েছে তা রীতিমতো উদ্বেগজনক। খবর মতে, দেশের ৫৭টি ব্যাংকের মধ্যে ২৩টি ব্যাংকের প্রতিটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ হাজার কোটি টাকার ওপরে। এর মধ্যে সরকারি খাতের আটটি ব্যাংকের মধ্যে একটি ছাড়া বাকি সাতটির খেলাপি ঋণের এই সীমা অনেক আগেই অতিক্রম করেছে। এ ছাড়া বেসরকারি খাতের ১৫টি ও বিদেশী ৯টি ব্যাংকের মধ্যে একটির খেলাপি ঋণ হাজার কোটি টাকার ওপরে রয়েছে। এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৭৩ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা, যা ব্যাংক খাতের মোট খেলাপি ঋণের ৮৩.৫ শতাংশ। বাকি ৩৪টি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১৪ হাজার ৭৩৩ কোটি টাকা, যা মোট খেলাপি ঋণের ১৬ শতাংশ। মার্চ পর্যন্ত সময়ে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৮ হাজার ৫৮৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। এ সময়ে অবলোপন করা ঋণের পরিমাণ যোগ করা হলে খেলাপির পরিমাণ এক লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
আসলে ব্যাংক খাতে সুশাসনের অভাবেই এ ধরনের ক্রমবর্ধমান খেলাপি ঋণ সংস্কৃতি স্থায়ী আসন গেড়ে বসেছে। সুশাসনের অভাবে ব্যাংক খাতে বেড়েই চলেছে নানা ধরনের জাল-জালিয়াতি। আর যারা এই জালিয়াতির সাথে জড়িত তারা মূলত ক্ষমতাসীন মহলেরই লোকজন। যে কারণে এদের আইনের আওতায় কিংবা জবাবদিহিতার আওতায় আনা যাচ্ছে না। এসব ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুসরণ না করে ইচ্ছানুযায়ী যাকে ইচ্ছা তাকে ঋণ দিচ্ছে কোনো ধরনের উপযুক্ত যাচাই-বাছাই ছাড়াই। অনেক ঋণের ক্ষেত্রে রয়েছে প্রয়োজনীয় জামানতের অভাব। আবার অনেক ঋণ দেয়া হচ্ছে ভুয়া গ্রাহকের নামে। ঋণ আদায় করতে গিয়ে ঋণগ্রহীতাকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আসলে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে যেসব ঋণ বিতরণ করা হয়েছে, সেগুলোই মূলত ঋণখেলাপি হচ্ছে। এখানে অভাব রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যকর তদারকির।
আমরা মনে করি, ব্যাংক খাত এই ঋণখেলাপির কারণে এতটাই ন্যুব্জ হয়ে পড়েছে যে, এখন তা ধ্বংসের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে। এবার এর অবসান হওয়া দরকার। দরকার দোষীদের চিহ্নিত করে আইন ও জবাবদিহিতার আওতায় আনা। যেসব কর্মকর্তা এ ধরনের ঋণ দেয়ার সাথে জড়িত, তাদের অনেকেই এর মাধ্যমে প্রচুর সম্পদ অর্জন করেছেন। তা ছাড়া খেলাপি ঋণগ্রহীতারা ঋণ পরিশোধ না করেও দিব্যি ব্যবসায় চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে ঋণ আদায়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। অর্থনীতিবিদেরা মনে করেন, তাদের আইনের আওতায় এনে সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে খেলাপি ঋণ আদায়ে সুফল পাওয়া যেতে পারে। ঋণখেলাপিদের কাছ থেকে ঋণের টাকা আদায়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

 


আরো সংবাদ



premium cement
বিএনপি সাম্প্রদায়িক শক্তি, এদের রুখতে হবে : ওবায়দুল কাদের সাদিক এগ্রোর ব্রাহামা জাতের গরু দেখলেন প্রধানমন্ত্রী ভারতে লোকসভা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ সারা বিশ্ব আজ জুলুমবাজদের নির্যাতনের শিকার : ডা. শফিকুর রহমান মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও বোয়ালখালীতে ৩ জনের মৃত্যু গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হতাহত ২২ বিল দখলের চেষ্টা, জেলা ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি

সকল