২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
পাট ব্যবসায়ীদের হাজার কোটি টাকা ঋণ

সোনালী ব্যাংকে লুটপাট বন্ধ করুন

-

ঋণের নামে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক লুটের নানা আয়োজন থেমে নেই। এ ক্ষেত্রে সোনালী ব্যাংক সব ব্যাংককে ছাড়িয়ে গেছে। হলমার্ক কেলেঙ্কারির পর নতুন নতুন ঋণ কেলেঙ্কারি বেরিয়ে আসছে এই ব্যাংক থেকে। এখন ঋণখেলাপি পাট ব্যবসায়ীদের নতুন করে ঋণ দেয়ার পরিকল্পনা করছে ব্যাংকটির খুলনার কয়েকটি শাখা। গণমাধ্যমের খবর, খুলনায় ব্যাংকটির ছয় শাখা থেকে পাট ব্যবসায়ীদের ঋণ দেয়া হয়েছে এক হাজার ৮০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি খেলাপি হয়েছে। পাট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এ টাকা আদায় না করেই নতুন করে আরো হাজার কোটি টাকা ঋণ দেয়ার আয়োজন চলছে। এর অংশ হিসেবে সাত খেলাপিকে ৭১ কোটি টাকা ঋণ দেয়ার অনুমোদন এরই মধ্যে হয়ে গেছে। যদিও তাদের কাছে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ রয়েছে ২৩১ কোটি টাকা।
খেলাপি পাট ব্যবসায়ীদের নতুন করে ঋণ দেয়ার সিদ্ধান্তে অস্বস্তি সৃষ্টি হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটির খুলনা অঞ্চলের কর্মকর্তাদের মধ্যে। কিন্তু চাপ উপেক্ষা করার ক্ষমতাও তাদের নেই। এক দিকে ঋণ দেয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে চাপ; অন্য দিকে ঋণ আদায়ে ব্যর্থতা বা যোগসাজশের অভিযোগে ব্যাংক কর্মকর্তাদের কারাগারে যেতে হচ্ছে। পাট ব্যবসায়ীদের ঋণ দিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন বেশ কয়েকজন ব্যাংকার। পদোন্নতিসহ নানা সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হতে হয়েছে তাদের। পাট ব্যবসায়ীদের তুষ্ট করতে না পারায় অনেকে বদলি আতঙ্কে ভুগছেন।
প্রভাবশালী মহলের তদবির ও চাপের কারণে ২০০৮-১৬ সাল পর্যন্ত ভূঁইফোড় অনেক ব্যবসায়ীকে ঋণ দিতে বাধ্য হয় সোনালী ব্যাংক। বেশির ভাগ গ্রাহকই পরে ব্যাংকের সাথে আর যোগাযোগ রাখেননি। ১১৩ পাট ব্যবসায়ীকে ঋণ দেয়া হয়েছিল, তাদের ১০৮ জনের ঋণই এখন খেলাপি। খুলনায় সোনালী ব্যাংকের ছয়টি শাখা থেকে দেয়া হয় প্রায় এক হাজার ৮০০ কোটি টাকার ঋণ। সবচেয়ে বেশি এক হাজার ১০০ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে সিসি প্লেজ হিসাবের বিপরীতে। গুদামে মজুদ থাকা পাট জামানত রেখে প্লেজ ঋণ দেয়া হয়। ব্যাংকঋণের টাকা ফেরত না পেলেও গুদামের পাট বিক্রি করে দিয়েছেন ঋণখেলাপিরা।
খুলনার পাট ব্যবসায়ীরা সোনালী ব্যাংককে ডোবাচ্ছেন। পাট খাতের সব মন্দ গ্রাহকের জন্য আকর্ষণীয় ব্যাংকে পরিণত হয়েছে সোনালী ব্যাংক। আমরা মনে করি, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে এ ধরনের লুটপাট এখনই বন্ধ হওয়া উচিত। কারণ, এই ব্যাংকের টাকা জনগণের। এ ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।


আরো সংবাদ



premium cement