২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
নয় দিনে ৩৬ মামলা

শিক্ষার্থীরা যেন হয়রানির শিকার না হয়

-

ছাত্রছাত্রীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ওপর ক্ষমতাসীন দলের অভিযুক্ত হামলাকারীদের বাইরে রেখে ছাত্রদের অভিযুক্ত করে গত ক’দিনে অনেক মামলা দায়ের করা হয়েছে। ১৬টি থানায় দায়ের করা ২৯টি মামলায় উল্লেখ করা হয় হামলাকারীরা ছিল অজ্ঞাতনামা ছাত্র। তবে নয় দিনের আন্দোলনে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বিভিন্ন থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে ৩৬টি। নামে-বেনামে আসামি করা হয়েছে অনেককে। গ্রেফতার করা হয়েছে ৩৯ জনকে। এসব মামলায় গ্রেফতার হওয়া আসামিদের মধ্যে রয়েছেন আলোকচিত্রী শহিদুল, অভিনেত্রী কাজী নওশাবা, মাহবুবুর রহমান আরমান, মো: আলমগীর হোসাইন, মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম প্রমুখ। অপর দিকে আফতাবনগর ও বসুন্ধরা এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ ছাত্রকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে সাংবাদিকদের ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। এমনকি এ ঘটনার তদন্তপ্রক্রিয়ার ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি নেই। ঘটনার দিন পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করা হলে হামলাকারীদের গ্রেফতার করা হবে। তবে যে এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটেছে, সে এলাকার পুলিশ গত পরশু বলেছে, সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনার তদন্ত করা হবে। আর তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলা দুঃখজনক। কিন্তু যারা সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে তাদের ছবি পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে তাদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি সত্ত্বেও এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি লক্ষ করা যায়নি।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে গত শনিবার হামলার অভিযোগ এনে দায়ের করা হয়েছে দু’টি মামলা। দু’টি মামলায়ই রয়েছে অনেক অজ্ঞাতনামা আসামি। এতে অজানা এক আতঙ্কে রয়েছে শত শত শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। কারণ এসব মামলায় হাজার হাজার অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। ফলে এখন যাকে ইচ্ছা এসব মামলায় জড়িয়ে হয়রানির শিকারে পরিণত করা হতে পারে। এর শিকারে পরিণত হতে পারেন ভিন্নমতের রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। এর ইঙ্গিত ইতোমধ্যে পাওয়া গেছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলার অভিযোগে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নয় জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে ধানমন্ডি থানায় মামলা করা হয়েছে। এ দু’টি মামলায় আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা আরো কয়েক হাজার।
আন্দোলনের সময় আটকদের মুক্তি দাবিতে গত পরশুও থানা ঘেরাও করে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার তারা শাহবাগ থানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। এরপর শাহবাগ ও তেজগাঁও এলাকা থেকে ৮৮ শিক্ষার্থীকে মুক্ত করা হয়।
আমরা চাই অজ্ঞাতনামা আসামি করাকে সরকার কৌশল হিসেবে নিয়ে নিরপরাধ কাউকে যেন হয়রানির শিকারে পরিণত না করে। তেমনটি করলে তা সরকারের জন্য কোনো ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে না।

 


আরো সংবাদ



premium cement