২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সংস্কারকামী ছাত্রদের ওপর হামলা কেন?

তাদের দাবি মেনে নেয়া দরকার

-

বাংলাদেশের ট্রাফিক ব্যবস্থা কতটা নৈরাজ্য ও দুর্নীতিগ্রস্ত তা প্রমাণ হয়ে গেছে। সরকারের শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রী-আমলারা ট্রাফিক আইন মানেন না। লাইসেন্স ছাড়া যানবাহন নিয়ে চলাচল করছেন মন্ত্রী, এমপি ও বিচারপতিরা পর্যন্ত। যে পুলিশ এসবের দেখাশোনা করবে, খোদ তাদেরই লাইসেন্স নেই। সড়কে দু’জন শিক্ষার্থীর প্রাণহানির পর ছাত্রছাত্রীরা রাস্তায় নেমে আসে। এর মধ্যে তারা এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, যা মেনে নিলে দেশের ট্রাফিক ব্যবস্থা অনেক উন্নত হবে। কিভাবে সড়কে যাত্রী ও পথচারীদের সেবা দিতে হয়, তার নজির স্থাপন করেছে তারা। এ অবস্থায় সরকারের দায়িত্ব আন্দোলনরত কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়া। দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, আন্দোলনকারীদের ওপর নেমে এসেছে হামলা, নিপীড়ন ও মামলা। এটি বর্তমান সরকারের একটি কৌশল। সাধারণত তাদের প্রতিপক্ষকে দমন করার জন্য সরকার এ কৌশল অবলম্বন করে আসছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সরকারের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ায়নি। তারা চেয়েছে একটি নিরাপদ সড়ক। কিন্তু সরকার তাদের সাথেও যেন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মতো আচরণ করছে।
শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডি, মিরপুর, নারায়ণগঞ্জ ও ফেনীতে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের ওপর হামলা হয়। এতে করে ঢাকায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। এদের মধ্যে পাঁচ-ছয়জনের অবস্থা গুরুতর। আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি ও ককটেল ছুড়েছে। হামলাকারীরা রড, লাঠি ও বাঁশ দিয়ে তাদের বেধড়ক পেটায়। হামলাকারীদের নিবৃত্ত করার পরিবর্তে পুলিশ এ সময় হামলাকারীদের পক্ষ নেয়। শনিবার সকাল থেকে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ কার্যালয় ও এর আশপাশে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা। ঝিগাতলা বাসস্ট্যান্ডের মোড়ে আন্দোলনরত কিছু ছাত্রছাত্রী গাড়ির কাগজপত্র চেক করছিল। সকালের দিকে আওয়ামী লীগের এক নেতার গাড়িচালকের লাইসেন্স চেক করতে গেলে বাগি¦তণ্ডা হয়। বেলা ১টার দিকে শিক্ষার্থীদের ধরে আটক করে রেখেছে, এ ধরনের খবরের পর দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। স্থানীয় পপুলার হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের হাসপাতালে ৪৫ থেকে ৫০ জন শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে ৮-১০ জনকে সরকারি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের পক্ষ থেকেও জানা যায়, তারাও ৫০ জনকে চিকিৎসা দিয়েছে। এর মধ্যে ১৩ জনকে এক্স-রে করতে হয়েছে। চোখে মারাত্মক আঘাত থাকার কারণে একজনকে ইসলামিয়া হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মিরপুরেও দ্বিতীয় দিনের মতো শিক্ষার্থীদের ওপর ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে হামলা চালানো হয়। এত দিন ধরে সরকার যেভাবে তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করেছে, এখন ছাত্রছাত্রীদেরও যেন একই কায়দায় দমন করতে চায়। অথচ ছাত্রছাত্রীদের এ কাজ অনেকটাই সংস্কারমূলক। এখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার অনেক কিছু রয়েছে; যে শিক্ষা সরকার নিতে চাইল না।
বাংলাদেশের সড়ক একটা মৃত্যুফাঁদ। রাস্তায় নেমে বাড়ি ফিরে যাবেন, এমন মানুষ প্রায়ই রাস্তায় লাশ হচ্ছেন। এ ধরনের দুর্ঘটনার জন্য অনেক সময় সরাসরি চালকেরা দায়ী; অথচ চালকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া যায় না। এ জন্য তারা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে একধরনের পৃষ্ঠপোষকতা পায়। দীর্ঘ দিনের ধূমায়িত ক্ষোভ ছাত্রছাত্রীদের রাস্তায় নামিয়ে আনে। আনন্দের বিষয় হচ্ছে, জ্বালাও-পোড়াওয়ের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা কোনো প্রতিক্রিয়াশীল আচরণ প্রদর্শন করেনি। তারা ঠিক আইনকানুন কিভাবে কার্যকর হতে পারে তা দেখিয়ে দিয়েছে। রাষ্ট্রকে এভাবে শুদ্ধাচারের আচরণ শিখিয়ে দেয়ার জন্য তারা বাহবা পেতে পারত। উল্টো তাদের ওপর করা হলো আক্রমণ। এ ধরনের আগ্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে সরকার ও তার বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনকে বিরত থাকা উচিত। একই সাথে ছাত্রছাত্রীদের ন্যায্য দাবিগুলো মেনে নিয়ে বাস্তবায়নের দিকে মনোযোগ দেয়া উচিত।


আরো সংবাদ



premium cement
বিদ্যুৎ গ্যাসের ছাড়পত্র ছাড়া নতুন শিল্পে ঋণ বিতরণ করা যাবে না মিয়ানমারে ফিরল সেনাসহ আশ্রিত ২৮৮ জন বিএনপি ক্ষমতায় যেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে : কাদের রোববার থেকে স্কুল খোলা : শনিবারও চলবে ক্লাস যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বরাজনীতির মঞ্চ থেকে সরিয়ে আনতে চান ট্রাম্প : বাইডেন কলিং ভিসায় প্রতারণার শিকার প্রবাসী দেশে ফেরার সময় মারা গেলেন চট্টগ্রামে পুলিশ হেফাজতে দুদক কর্মকর্তার মৃত্যু ভারতীয় ৫২৭ খাদ্যপণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক পেয়েছে ইইউ তীব্র তাপদাহের জন্য দায়ী অবৈধ সরকার : মির্জা আব্বাস অনলাইন ক্লাসে যাচ্ছে জবি : বন্ধ থাকবে পরীক্ষা ইউরোপ ও কিরগিজস্তানগামী শ্রমিকদের বহির্গমন ছাড়পত্রে অনিয়ম

সকল