২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
হাজারীবাগে লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া

ট্যানারি সরানোর পরও এই চিত্র কেন?

-

রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকা থেকে ট্যানারিশিল্প সাভারে সরিয়ে দেয়ার পর এক বছর কেটে গেছে। তবে সরকারের সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনামাফিক সেখানকার জমিতে আজ পর্যন্ত কোনো উন্নয়ন কার্যক্রম চোখে পড়েনি। ৭০ বছরের পুরনো ট্যানারি এলাকার জরাজীর্ণ চেহারাও রয়েছে আগের মতোই।
একটি সহযোগী দৈনিকের খবর, সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার ‘ধীরে চলো’ নীতি আর সমন্বয়হীনতাই পরিত্যক্ত হাজারীবাগে উন্নয়নহীনতার জন্য দায়ী। সেখানে সাবেক ট্যানারির ৭০ একর মূল্যবান ভূমির যথাযথ ব্যবহার না দেখে সবাই হতাশ। তাদের ধারণা, এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ ছাড়াই হয়তো বা অনেকদিন পার করে দেয়া হবে। ঢাকা মহানগর উন্নয়ন পরিকল্পনা (ডিএমডিপি) অনুসারে, হাজারীবাগের পরিত্যক্ত ট্যানারি শিল্পপ্লটগুলোতে প্রয়োজনীয় উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন দরকার। অথচ এখন পর্যন্ত এ জন্য চূড়ান্ত পরিকল্পনা, এমনকি প্রকল্প প্রস্তাবও তৈরি করা হয়নি। ডিএমডিপির সুপারিশ উপেক্ষা করার সুযোগ কম। তবে শিল্প মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ হাজারীবাগের ভূমি কাজে লাগানোর ব্যাপারে যেসব ফর্মুলা দিয়েছে; কোনোটিই ডিএমডিপির কার্যক্রমের সাথে খাপ খায় না। তদুপরি, এই প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন কোন মন্ত্রণালয়ের কাজ, তা নিয়ে আজো চলছে ‘রশি টানাটানি’। রাজউকের পরিকল্পনা হলো, হাজারীবাগে বহুতল ভবন নির্মাণ করে এটাকে প্রধানত আবাসিক কাজে ব্যবহারের পাশাপাশি ভবনের ওপর চামড়াজাত পণ্যের কারখানা স্থাপন করা হবে। তবে পরিবেশ সচেতন নাগরিকেরা এবং ডিএমডিপি, কেউ এটা সমর্থন করেনি। নানা টানাপড়েনে হাজারীবাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানের ফলপ্রসূ ব্যবহার নিয়ে দীর্ঘসূত্রতা সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছর ৮ এপ্রিল ঢাকা শহরের হাজারীবাগে দীর্ঘকালের ‘ট্যানারি যুগ’ শেষ হয়েছে এবং সর্বপ্রকার সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ট্যানারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো সাভারের হেমায়েতপুরে বিসিকের নির্ধারিত স্থানে সরিয়ে নিতে বাধ্য করা হয়। এর আগেই সরকার অঙ্গীকার করেছিল, হাজারীবাগের এই জায়গা খালি হলে সুপরিকল্পিতভাবে কাজে লাগানো হবে। খোদ গণপূর্তমন্ত্রী তখন জানিয়েছেন, ট্যানারি পল্লী পুরোপুরি স্থানান্তরিত হলে হাজারীবাগের জীর্ণদশা পাল্টে দেয়া হবে এবং শিল্প মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবার সাথে আলোচনা করে এ জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এ দিকে, রাজউকের মাধ্যমে পরিকল্পনা করা হয়, হাজারীবাগে মতিঝিল-গুলশানের চেয়েও আধুনিক স্থাপনা নির্মাণ করে আবাসিক কাম-বাণিজ্যিক ভবন প্রতিষ্ঠা করা হবে। আলাদা বেশ কিছু ভবন শুধু আবাসিক কাজের জন্য তৈরি করা ছাড়াও হাজারীবাগে আধুনিক স্কুল-কলেজ-ভার্সিটি চালু করার কথাও বলা হয়েছিল; কিন্তু এসবের কোনোটিই হয়নি। সরকার নীতিগত কোনো সিদ্ধান্তও নেয়নি। ট্যানারির পরিত্যক্ত জমি অধিগ্রহণ করে সরকার নিজেই প্রকল্পের কাজ করবে, নাকি ব্যক্তিমালিকানায় এটা করা হবে, তা চূড়ান্ত করা হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে হাজারীবাগের প্রত্যাশিত উন্নয়নের মতো অপরিহার্য বিষয়টি ঝুলে আছে।
সবার দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল অবিলম্বে ট্যানারি সরিয়ে হাজারীবাগ তথা রাজধানী ঢাকা নগরীকে দূষণ ও দুর্গন্ধ থেকে মুক্ত করার। অবশেষে তা সম্ভব হলেও ট্যানারির জায়গায় জনগণের প্রত্যাশা আর সরকারের প্রতিশ্রুতি মোতাবেক উন্নয়ন শুরু না হওয়া অত্যন্ত বিস্ময়কর ও দুঃখজনক। এর মধ্য দিয়ে কর্তৃপক্ষের দৃঢ়তার অভাব, কথা ও কাজে অসামঞ্জস্য, সমন্বয়হীনতা ও অদক্ষতা প্রভৃতি একসাথে প্রকট হয়ে উঠেছে। যা হোক, আর বিলম্ব না করে এ ক্ষেত্রে সুষ্ঠু ও সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে এবং বিশেষ কোনো মহল নয়, এলাকাবাসীসহ জনগণের বৃহত্তর স্বার্থকে দিতে হবে অগ্রাধিকার। ট্যানারির পরিত্যক্ত জমির সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক মূল্য সংযোজনের দিকেও লক্ষ্য রাখা উচিত।


আরো সংবাদ



premium cement
চীনা কোম্পানি বেপজা অর্থনৈতিক জোনে ১৯.৯৭ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে মৃত মায়ের গর্ভে জন্ম নিলো নতুন প্রাণ দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদ সমাবেশে কেউ মারা যায়নি : পুলিশ সুপার হামাসকে কাতার ছাড়তে হবে না, বিশ্বাস এরদোগানের জাহাজভাঙা শিল্পে শ্রমিক নিরাপত্তার উদ্যোগ ভালো লেগেছে : সীতাকুন্ডে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ১০ দেশের অংশগ্রহণে সামরিক মহড়া শুরু করল আরব আমিরাত গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের পর ২ হাজার ফিলিস্তিনি নিখোঁজ ৯ বছর পর সৌদি আরবে আসছে ইরানি ওমরা কাফেলা দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা : প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের হামলার নিন্দা হেফাজতে ইসলামের ভর্তি পরীক্ষায় জবিতে থাকবে ভ্রাম্যমাণ পানির ট্যাংক ও চিকিৎসক মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশীরা কারা?

সকল