কারণ খুঁজে দেখতে হবে
- ২১ জুলাই ২০১৮, ০০:০০
গতকাল সারা দেশে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। একই সাথে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এবং সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে। এবার এসব পরীক্ষার পাসের হার ও জিপিএ ৫ পাওয়ার হার কমে গেছে। এবারের এইচএসসিতে গড় পাসের হার ৬৬.৬৪, জিপিএ ৫ পেয়েছে ২৯ হাজার ২৬২ জন। গত বছর এই পরীক্ষার গড় পাসের হার ছিল ৬৮.৯১ শতাংশ। আর জিপিএ ৫ পেয়েছিলেন ৩৭ হাজার ৯৬৯ জন। গত দু’বছর থেকে এই পরীক্ষার পাসের হার নিম্নমুখী। এখন বিভিন্ন মহলে চলছে এই নিম্নমুখিতার বিশ্লেষণ।
কেউ বলছেন, এই নিম্নমুখী ফলের প্রধান কারণ ইংরেজি ও আইসিটিতে ফেলের বিষয়টি। কেউ বলছেন, মান বাড়াতেই পাসের হার কমানো হয়েছে। আরেক কারণ খাতা মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা। একটি পত্রিকার বিশ্লেষণ মতে, এবারের ফলের নিম্নমুখী হওয়ার কারণ পাঁচটি : ইংরেজি ও মানবিকের নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে এবারের পরীক্ষার ফলে, বিজ্ঞান ও আইসিটির পরীক্ষা ছিল কঠিন, খাতা মূল্যায়ন সঠিকভাবে নিশ্চিত করার কারণে পাসের হার কমেছে, আর জিপিএ ৫ কমেছে বিজ্ঞান ও আইসিটির পরীক্ষা কঠিন হওয়ার কারণে।
এ রকম নানা ধরনের বিশ্লেষণই এখন চলছে সদ্য প্রকাশিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলের নিম্নমুখিতা নিয়ে। কিন্তু আমরা বিশেষভাবে লক্ষ করেছি এবারের পরীক্ষায় ফলাফলের দিক থেকে শহরের স্কুলের তুলনায় গ্রাম এলাকার ছাত্ররা অনেকটা পিছিয়ে রয়েছেন। বিষয়টি উদ্বেগজনক। তাই এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিশেষ নজর দিতে হবে। জানা গেছে, শুধু ঢাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা জিপিএ ৫ পাওয়া ছাত্রদের মধ্যে ৪০ শতাংশ। বাইরের জেলাগুলোর পল্লী এলাকার প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা জিপিএ ৫ পাওয়ার ক্ষেত্রে ঢাকার ছাত্রদের তুলনায় অনেক পিছিয়ে রয়েছেন। তা ছাড়া রাজধানীর ছাত্রদের তুলনায় তাদের পাসের হারও কম।
শিক্ষাবিদ ও শিক্ষা কর্মকর্তারা এ জন্য দায়ী করেন পল্লী এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপযুক্ত শিক্ষকের অভাব, লাইব্রেরি না থাকা, উপযুক্ত গাইডের অভাব, পল্লী শিক্ষায় স্বল্পতর বিনিয়োগ ও অন্যান্য সুবিধার অভাবকে। ইন্টার সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশন ডিরেক্টরেটের এক বিবৃতিতে গত বৃহস্পতিবার বলা হয়েছেÑ দেশের ১২টি ক্যাডেট কলেজে এবার সর্বাধিকসংখ্যক জিপি ৫ পেয়েছেন। ১২টি ক্যাডেট কলেজের ৬০৩ জন ছাত্রের মধ্যে ৫৬৯ জনই, অর্থাৎ ৯৫ শতাংশই জিপিএ ৫ পেয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের সাবেক অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, গ্রাম ও শহর এলাকার স্কুলগুলোর মধ্যকার সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে বৈষম্যের কারণে তাদের ফলাফলের মধ্যে প্রতিফলিত হচ্ছে। তিনি বলেন, ঢাকার ছাত্ররা কোচিংয়ের সুযোগ পায় গ্রামের ছাত্রদের তুলনায় অনেক বেশি। এরা মা-বাবার কাছ থেকে পায় উন্নততর গাইডেন্স। এর ফলে আমরা দেখতে পাই এবারের রেজাল্টে ২৫ হাজার ৫৬২ জন জিপিএ ৫ ধারী ছাত্রদের ৪০ শতাংশ অর্থাৎ ১০ হাজার ৩৯৯ জনই ঢাকা নগরীর।
আমরা বাস্তবে দেখেছিÑ গ্রামের স্কুলের সাধারণ সমস্যার মধ্যে রয়েছে : উপযুক্ত শিক্ষকের অভাব, শিক্ষকের স্বল্পতা, শ্রেণীকক্ষের অভাব, উন্নত স্কুল ভবনের অভাব, লাইব্রেরির অভাব, সঠিক দিকনির্দেশনার অভাব, গ্রামীণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তুলনায় কম বাজেট বরাদ্দসহ এমনি আরো নানা বৈষম্য। এসব ব্যাপারে অধিকতর নজর না দিলে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি ও পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে আসবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা