বলপ্রয়োগের নীতি থেকে সরে আসুন
- ১৯ জুলাই ২০১৮, ০০:০০
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা রয়েছে। বিশেষ করে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুমের ঘটনা কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। সম্প্রতি ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দফতরের মানবাধিকার প্রতিবেদনে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির কোনো উন্নতি না হওয়ায় আবারো উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বিরোধী দল, নাগরিক সমাজ, বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও গণমাধ্যমের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে নানা ধরনের নিপীড়নমূলক ব্যবস্থা, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের অভিযোগ করা হয়েছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সঙ্কুচিত করতে সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে। বিশেষ করে ৫৭ ধারা বিলোপ করে নতুন তথ্যপ্রযুক্তি আইন নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া নারীর ওপর সহিংসতা ও যৌন নিপীড়নের ঘটনা বেড়েই চলেছে। এসব বিষয় নিয়ে এর আগেও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো মানবাধিকার সংস্থাগুলো বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বাস্তবতা হচ্ছে, একটি কর্তৃত্ববাদী সরকার দীর্ঘমেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনা করলে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে। সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে এবং বলপ্রয়োগের দিকটি সব সময় প্রাধান্য পেয়ে থাকে। এর ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাও বাড়তে থাকে। বাংলাদেশে এখন এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে; রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল হয়ে পড়ায় স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। এর মধ্যে বিচার বিভাগও রয়েছে। ব্রিটিশ এই প্রতিবেদনে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার দেশত্যাগের প্রসঙ্গও উল্লেখ করা হয়েছে। আসলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা না গেলে মানবাধিকার পরিস্থিতির কোনো উন্নতি সম্ভব নয়।
বাস্তবতা হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী হবে যখন প্রকৃত অর্থে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন। কারণ, জনগণের কাছে জবাবদিহিতা না থাকলে রাষ্ট্র নানাভাবে নিপীড়নমূলক ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। দুর্ভাগ্যজনক বাংলাদেশের নির্বাচনব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে ভোট দেয়ার মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের পথ রুদ্ধ হয়েছে। ব্রিটিশ মানবাধিকার প্রতিবেদনে দীর্ঘমেয়াদে এ দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে যুক্তরাজ্য জোর দেবে বলে জানানো হয়েছে। আমরা মনে করি, শুধু বিদেশী রাষ্ট্র নয়, এ দেশের সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকেও জাতীয় স্বার্থে এ দিকটির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া উচিত। আমরা আশা করব, সরকার দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগের দিকগুলো বিবেচনায় নেবে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা যাতে কমে আসে, সে ব্যাপারে প্রাতিষ্ঠানিক পদক্ষেপ নেয়ার দিকে সরকার মনোযোগী হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা