২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার সঙ্কট

দরকার নীতিগত পরিবর্তন

-

বাংলাদেশের চিকিৎসাসেবায় অনেক সমস্যা রয়েছে। রোগী অনুপাতে ডাক্তারস্বল্পতা; চিকিৎসাসেবা দেয়ার চেয়ে ডাক্তার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বাণিজ্যের অধিক মানসিকতা। এ ধরনের সমস্যা নিয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে শহরকেন্দ্রিক। বিশেষ করে ঢাকা ও বড় শহরগুলোতে। মফস্বলে রয়েছে ভিন্ন চিত্র। সেখানে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকদের উপস্থিতি পাওয়া সৌভাগ্যের ব্যাপার। সরকারের পক্ষ থেকে কড়াকড়ি করেও সেভাবে সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। মূলত শহরে একজন ডাক্তার যে ধরনের সুবিধা পান, গ্রামে তা পাওয়া যায় না। আমাদের সব সুযোগ-সুবিধা শহরকেন্দ্রিক হচ্ছে। গ্রামে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা না করে ডাক্তারদের ব্যাপারে জোরাজুরি তাই সেভাবে কাজে আসছে না। একটি সহযোগী দৈনিক ঢাকার অদূরে একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তারের উপস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন ছাপিয়েছে। এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তারের স্বল্পতার কারণে রোগীরা চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত হচ্ছেন।
পত্রিকাটি লিখেছে, ঢাকার দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৫ জন চিকিৎসক কর্মরত ছিলেন। মে মাসের শেষের দিকে একযোগে ১৩ জনকে এবং পরে আরও দু’জনকে বদলি করা হয়। বর্তমানে মাত্র ১০ জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছেন। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে কয়েকজন চিকিৎসক পাঠানোর কথা ছিল। এখনো পদগুলো শূন্য রয়েছে। সেবা দেয়ার জন্য নেই প্রয়োজনীয়সংখ্যক নার্সও। যেখানে ২৬ জন নার্স থাকার কথা, সেখানে রয়েছেন মাত্র ১৪ জন। অর্থাৎ অর্ধেক নার্স নেই। অর্থোপেডিক, শিশু, মেডিসিন, নাক-কান-গলা, চর্মরোগ ও চোখের ডাক্তার নেই। ইসিজি মেশিন চালানোর লোক নেই। অস্ত্রোপচার ও গাইনি বিভাগের কাজ চলছে না প্রয়োজনীয় ডাক্তার না থাকায়। জরুরি বিভাগের ইন্টার্ন ডাক্তারেরা বাধ্য হয়ে অন্যদের চিকিৎসা দিয়ে চলেছেন। প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ রোগী বহিঃবিভাগে আসেন, কিন্তু পর্যাপ্ত ডাক্তার না থাকায় মনোযোগ দিয়ে রোগী দেখা সম্ভব হয় না। আটটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে দোহার উপজেলা গঠিত। তিন লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। তাদের চিকিৎসাসেবার জন্য ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটি স্থাপন করা হয়েছে। সারা দেশে যেসব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে, সেগুলোর সাথে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তুলনা হয় না। এ ধরনের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তারেরা সাধারণত পোস্টিং নিতে খুব একটা অপছন্দ করেন না। কারণ, দায়িত্ব পালন শেষে সহজে ঢাকায় ফিরে আসা যায় কিংবা ঢাকার আশপাশে থাকা যায়। ফলে অন্যান্য জায়গায় চেম্বার করে রোগী দেখা যায়। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে মহানগরীর সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়। এর পরও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির ডাক্তারস্বল্পতা এবং নিয়োগ-বদলির তুঘলকি কাণ্ড দেখে বোঝা যায় বাংলাদেশে সরকারি স্বাস্থ্যসেবার চিত্র কতটা করুণ।
প্রত্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার হাজির থাকা একটা বড় ব্যাপার। অনেক সময় নামমাত্র কয়েকজন ডাক্তার পাওয়া যায়। ফলে রোগীরা চিকিৎসা না নিয়েই ফিরে যেতে বাধ্য হন। সরকারের খাতা-কলমে এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তার আছেন, কিন্তু বাস্তবে তারা থাকেন না। অবশ্য ব্যতিক্রমও দেখা যায়। কিছু ডাক্তার রয়েছেন, যারা মানবসেবার ব্রতকে নিজেদের দায়িত্ব হিসেবে গণ্য করেন। এদের সংখ্যা কম। যা হোক, চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে হলে নীতিনির্ধারণীপর্যায়ে পরিবর্তন আনতে হবে। মফস্বলে চিকিৎসা পেশাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে। ডাক্তারদের জন্য সেখানে পর্যাপ্ত সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। সর্বোপরি, সেবার মানসিকতা জাগ্রত করতে বিশেষ কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন।


আরো সংবাদ



premium cement
মেক্সিকোয় মেয়র প্রার্থী ছুরিকাঘাতে নিহত রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজসমূহেও ক্লাস বন্ধ ঘোষণা দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন : প্রধানমন্ত্রী ফ্যাসিবাদের শোষণ থেকে জনগণকে মুক্ত করতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : মিয়া গোলাম পরওয়ার সিংড়ায় প্রতিমন্ত্রীর শ্যালককে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের নির্দেশ আ’লীগের চুয়াডাঙ্গায় হিট‌স্ট্রো‌কে যুবকের মৃত্যুর ৭ ঘণ্টা পর নারীর মৃত্যু ঢাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়াল, যশোরে দেশের সর্বোচ্চ ৪২.৬ শ্যালকদের কোপে দুলাভাই খুন : গ্রেফতার ৩ তীব্র গরমে কী খাবেন আর কী খাবেন না এবার তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল

সকল