তুরস্কের গৌরবময় ভূমিকা ফিরে আসুক
- ২৬ জুন ২০১৮, ০০:০০
তুরস্কের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান ও ক্ষমতাসীন জোট বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছে। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তুরস্কের শাসনব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। নির্বাহী প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিপুল ক্ষমতার অধিকারী হতে যাচ্ছেন তিনি। তুরস্কের জনগণ শাসনব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কারের ব্যাপারে এরদোগানের দলের ওপর আস্থা রেখেছে।
সন্দেহ নেই, গত এক দশকে এরদোগানকে কঠিন সময় পার করতে হয়েছে। একাধিক সামরিক অভ্যুত্থান, দেশের অখণ্ডতা রক্ষা করা, শরণার্থীর চাপ ও আঞ্চলিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার মতো পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়েছে। অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ব্যবস্থায় পরিবর্তনের পাশাপাশি নির্বাচনে এসব বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ছিল। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এরদোগানের নীতিকে সমর্থন দিয়েছে। সম্ভবত, এর প্রধান কারণÑ দেশটিতে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এসেছে, বেকারত্বের হার কমেছে এবং একই সাথে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে তুরস্কের ভূমিকা ও গুরুত্ব বেড়েছে; যা তুরস্কের জনগণের মধ্যে তুর্কি খিলাফতের ঐতিহ্যের মুসলিম ভাবধারাসম্পন্ন জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ ঘটিয়েছে।
তুরস্কের নির্বাচনে সারা বিশ্বের মানুষের দৃষ্টি ছিল। কারণ, এশিয়া ও ইউরোপের সম্মিলনের এ দেশটি ভূকৌশলগত দিক দিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সিরিয়া সঙ্কট, ইউরোপে শরণার্থী সমস্যা, আরব দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব, ফিলিস্তিনিদের স্বাধিকারের সংগ্রাম, রাশিয়ার সাথে ন্যাটোর সম্পর্ক এবং ইরান ও ইসরাইলের সাথে সম্পর্কের মতো জটিল ভূরাজনৈতিক ইস্যুগুলোর সাথে তুরস্কের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তুরস্ককে বাদ দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের কোনো সঙ্কটের সমাধান সম্ভব নয়। এমন পরিস্থিতিতে এরদোগানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে তিনি হয়ে উঠেছেন মুসলিম বিশ্বের কণ্ঠস্বর।
স্বাভাবিকভাবে নির্বাচনে এরদোগানের বিজয় শুধু তুরস্কের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নয়, মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্ঘাতময় পরিস্থিতিতে এর প্রভাব পড়বে। সিরিয়া সঙ্কট নিরসনে ইরান ও তুরস্কের উদ্যোগে অগ্রগতি হতে পারে। তুরস্ক সিরিয়ার শরণার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আশা করা যায়, তুরস্কে মানবিক কার্যক্রম আরো সম্প্রসারিত হবে। আরব দেশগুলো যখন ফিলিস্তিনিদের ভুলে যেতে বসেছে, তখন এরদোগান ছিলেন সোচ্চার মুখ। এমনকি, বাংলাদেশের রোহিঙ্গা সমস্যার ব্যাপারেও এরদোগানের নেতৃত্বে তুরস্ক অনেক বেশি সোচ্চার ছিল। মুসলিম বিশ্বের স্বার্থসংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক বিষয়গুলোতে তুরস্ক আরো বেশি ভূমিকা পালন করতে পারবে বলে আশা করা যায়। বিপুল ভোটে প্রেসিডেন্ট এরদোগানের বিজয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তার গ্রহণযোগ্যতা আরো বাড়াবে।
ইতোমধ্যে তুরস্কের ইতিহাসে জনপ্রিয় শাসক হিসেবে প্রেসিডেন্ট এরদোগান স্থান করে নিয়েছেন। আমরা আশা করি, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সমুন্নত রেখে তিনি তুরস্ককে যেমন আরো এগিয়ে নেবেন তেমনি অতীতের মতো আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে তুরস্ক গৌরবময় ভূমিকা পালন করবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা