২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
মাদক নিয়ন্ত্রণে নতুন আইনের খসড়া

আইনের প্রয়োগ স্বচ্ছ হওয়া দরকার

-

সরকার মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার পরও এর চোরাচালান ও সেবন বন্ধ হয়নি। মাদকের বিরুদ্ধে নেয়া অভিযান ও আইনের দুর্বলতা এর মাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। ক্রসফায়ারে মৃত্যু নিয়ে বিতর্কের মধ্য দিয়ে এই অভিযান চলেছে। বিদ্যমান আইনে চোরাচালানিদের গ্রেফতার ও আইনের আওতায় আনা একটি দুরূহ ব্যাপার। এতে কেবল সরাসরি কারো কাছে মাদকদ্রব্য পাওয়া গেলে তাকে গ্রেফতার করে ব্যবস্থা নেয়া যায়। ফলে মূলত যারা মাদকের মূল কারবারি তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। কখনও তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে পাকড়াও হলেও আইনের ফাঁক গলে আবারো বের হয়ে যায়। এবার নতুন করে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। নতুন আইন যাতে মাদক নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। বিশেষ করে বিদ্যমান আইনের দুর্বলতাকে সামনে রেখে এটি প্রণয়ন করতে হবে।
খবরে প্রকাশ নতুন আইন প্রণয়নে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর কাজ করছে। এই আইনে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান থাকছে মৃত্যুদণ্ড। এ ধরনের অনেক কঠোর আইন রয়েছে কিন্তু সেগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন নেই। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার ওপর আইনের প্রয়োগ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নির্ভর করে। নতুন আইনে মাদকের লাইসেন্স দেয়া, পারমিট ও পাস দেয়ার ক্ষেত্রে পুলিশকে যাচাইয়ের ক্ষমতা দেয়া এবং লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানে বিনা ওয়ারেন্টে তল্লাশি করার ক্ষমতা দেয়ার প্রস্তাব করেছে পুলিশ নিজেই। মাদক নিয়ে পুলিশের যে রেকর্ড তা কোনোভাবেই সন্তোষজনক নয়। পুলিশ আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে কোনোভাবে সমগ্র জাতি এভাবে মাদকের বন্যায় ভাসতে পারে না। এভাবে বিশেষ অভিযানের নামে অনেককে প্রাণ দিতে হতো না। এদিকে মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রধানত দায়িত্ব মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের। দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছেÑ অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মাদকের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। নিজেদের প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যাপারে নোটিশ করতে হয়েছে। এদিকে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর নিজেদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হিসেবে দেখাতে চায়। তারা বিরোধিতা করছে পুলিশের দেয়া প্রস্তাবের। মদের বিক্রয়কেন্দ্র ও মদপানের অনুমতি দেয়ার দায়িত্ব মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের। অধিদফতরকে তাদের কাজের মধ্যে স্বচ্ছতা আনতে হবে। এই অধিদফতরের যাদের বিরুদ্ধে মাদক কারবারের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণসাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। একইভাবে যেসব পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মাদকসংক্রান্ত বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে, সেসবও খতিয়ে দেখতে হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত বাহিনী ও অধিদফতরের সদস্যদের ন্যায়নিষ্ঠভাবে দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন ফলপ্রসূ হতে পারে। অন্যথায় আইন কঠোর হোক না কেন, মাদক নিয়ন্ত্রণে তা কোনো কাজে আসবে না।
মাদক নিয়ন্ত্রণের বিদ্যমান আইনটি ১৯৯০ সালে প্রণয়ন করা হয়। এর মধ্যে মাদকদ্রব্যের চোরাচালান ও কারবারে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। সেবনের অভ্যাস, চোরাচালানকারীদের কৌশল ও মাদকের ধরনও ব্যাপক বদলে গেছে। নতুন আইনে এ ব্যাপারগুলো সবচেয়ে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হচ্ছে। যাচাই-বাছাই কমিটি ২৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতামত নিয়েছে। আন্তর্জাতিক কনভেনশন, মাদক নিয়ন্ত্রণ বোর্ড, বিভিন্ন সময় আদালতের পর্যবেক্ষণ ও চিকিৎসাসংশ্লিষ্টদের মতামত নেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে খসড়া আইন ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮’ চূড়ান্ত করা হয়েছে। সত্যিকার অর্থে এই আইনটি যদি মাদক চোরাচালান ও সেবন বন্ধ করার জন্য প্রণীত হয় এবং সেই সাথে এটি প্রয়োগে দায়িত্বপ্রাপ্ত বাহিনী যদি সঠিকভাবে কাজ করে তাহলে মাদকের কবল থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির মৃত্যু নীলফামারীতে তিন হাজার ১৭০ চাষির মাঝে বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ বিতরণ কারাগারে কয়েদির মৃত্যু উজ্জ্বল হত্যার বিচার দাবিতে সরিষাবাড়ীতে মানববন্ধন পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১ আহত ২১ খাবারের সন্ধানে বসতবাড়িতে হরিণ, মহামায়ায় অবমুক্ত সিঙ্গাপুর প্রবাসী ফিরোজ মাহমুদের লাশ দেশে ফিরেছে ফরিদপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের মৃত্যু গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সব ধর্মের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে: ড. সুকোমল বড়ুয়া

সকল