২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বন্যার পদধ্বনি

মোকাবেলায় আগাম ব্যবস্থা নিন

-

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যার পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। সিলেট অঞ্চলের নদীগুলোতে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে মনু নদীর বাঁধ ভেঙে মৌলভীবাজারের শহরসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় শহরের একাংশসহ তিনটি ওয়ার্ড সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মারা গেছে সাতজন। এখন ২০-২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছে। অতীতে মৌলভীবাজার বন্যায় এতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এমনকি অনেক চা বাগান ডুবে গেছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। মৌলভীবাজারে বাঁধে নির্মিত স্লুইস গেটগুলো এক বছরের মাথায় অকেজো হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশনব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে।
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে গত বছর এপ্রিল-মে মাসে অকালবন্যা দেখা দিয়েছিল। সে সময় সুনামগঞ্জসহ হাওরাঞ্চল ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বন্যার ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছিল। এই বন্যার প্রভাব পড়েছিল ধান উৎপাদনের ওপর। এবারো বর্ষা মওসুম শুরু হয়েছে। আরো ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। মৌলভীবাজার ও ফেনীতে বন্যা হয়েছে ত্রিপুরার পাহাড়ি ঢল থেকে। সামনে বর্ষায় মেঘালয়, আসাম ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে পাহাড়ি ঢল নেমে আসবে। এর ফলে আরো বড় আকারের বন্যার শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
বন্যা নিয়ে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া দরকার। মৌলভীবাজারে বন্যার পর সরকারিভাবে কিছু ত্রাণ বিতরণের খবর পাওয়া গেছে; কিন্তু এসব ত্রাণ অভাবী ও দুর্গত মানুষের কাছে পৌঁছানো নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া ত্রাণ বিতরণ করে বন্যা মোকাবেলায় সরকারের কাজ শেষ হয়ে যায় না। বন্যা মোকাবেলায় টেকসই ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
গত বছর এবং এবারের বন্যায় দেখা যাচ্ছে, বাঁধ ভেঙে যাওয়া কিংবা স্লুইস গেটগুলো অকার্যকর হওয়া বন্যার প্রধান কারণ। দেশে এখন বাঁধ নির্মাণ মানে বড় আকারের দুর্নীতি ও অনিয়ম। বন্যা মোকাবেলার জন্য বাঁধ নির্মাণ করা হয়, অথচ বর্ষার শুরুতে বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। স্লুইস গেটগুলো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পানি উন্নয়ন বোর্ডের; কিন্তু সেগুলো সুষ্ঠুভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। সার্বিকভাবে বন্যা মোকাবেলায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না নেয়ার কারণে প্রতি বছর বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। আমরা আশা করব, মৌলভীবাজারে বন্যার্তদের প্রয়োজনীয় সাহায্যের পাশাপাশি বড় ধরনের বন্যা মোকাবেলায় এখন থেকেই কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।


আরো সংবাদ



premium cement