২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
১৮১ কোটি টাকায় সংস্কারের পরও লোকসান বেড়েছে

কর্ণফুলী কাগজকলকে বাঁচাতে হবে

-

অনেক বড় ধরনের সংস্কারকাজ সম্পন্ন হওয়ার পরও চন্দ্রঘোনার কর্ণফুলী কাগজকলের (কেপিএম) অবস্থার আরো অবনতি হয়েছে। এই ‘ভারসাম্য, আধুনিকায়ন ও প্রতিস্থাপন’, অর্থাৎ বিএমআর কার্যক্রম শেষ করা সত্ত্বেও মিলটির উৎপাদন না বেড়ে বরং কমেছে। এখানে উৎপাদিত কাগজের মানও বাড়েনি। সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে উৎপাদনব্যয়ের তুলনায় কম দামে কাগজ বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে লোকসানের পরিমাণ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, কাগজকলটি যেকোনো সময় একেবারে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ইতোমধ্যে এর উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে, যা কর্তৃপক্ষের ভাষায় ‘সাময়িক’।
একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, সরকারের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) সম্প্রতি তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, ৬৪ বছরের পুরনো কেপিএমকে আধুনিক ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ১৮১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা খরচ করে যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছিল। এর মধ্যে ওয়াশিং প্লান্ট, ব্লিচিং প্লান্ট, কেমিক্যাল প্লান্ট, এয়ার কমপ্রেসার, অক্সিজেন সিস্টেম, বয়লার প্রভৃতি আধুনিকায়নের ব্যাপক ও ব্যয়বহুল পদক্ষেপ নেয়ার আগে এই কারখানার বার্ষিক উৎপাদনক্ষমতা ছিল ৩০ হাজার টন এবং কার্যত ২৪ হাজার টন কাগজ উৎপাদন করা হতো। অথচ এখন সারা বছর মাত্র ছয় হাজার ৭৭৬ টন কাগজ উৎপাদন হচ্ছে। উল্লেখ্য, কেপিএমের বিএমআর কার্যক্রম চলে ২০০৭ সাল থেকে ২০১৪ পর্যন্ত। কিন্তু এটি করা হয়েছে ১৯৯৬ সালে, অর্থাৎ এক যুগ আগে গৃহীত পরিকল্পনার ভিত্তিতে। আইএমইডি বলেছে, এত আগে যে প্রকল্প বাস্তবসম্মত বলে মনে হয়েছিল, প্রযুক্তি অনেক উন্নত হওয়ায় তা ২০০৭ সালে বাস্তবসম্মত না-ও হতে পারে। এ দিকে বিএমআর শেষ হওয়ার পর দেখা গেল, প্রতি টন কাগজের উৎপাদন খরচ এক লাখ ৩৬ হাজার ৭৩৭ টাকা হলেও এর গড় বিক্রয় মূল্য ৯৫ হাজার টাকা। এতে এক টন কাগজে লোকসান দিতে হয় ৪১ হাজার টাকারও বেশি। আইএমইডি কেপিএমের কয়েকটি সমস্যা তুলে ধরে বলেছেÑ ক. গ্যাস-বিদ্যুতের অপরিকল্পিত দাম বেড়ে চলার ফলে উৎপাদনব্যয় আরো বাড়তে পারে; খ. কাঁচামাল কম হওয়ায় মিলটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে; গ. কাঁচামালের দাম বাড়ছে বলে লোকসান অনেক বেড়েছে; ঘ. বাজারে প্রতিযোগিতা করছে আধুনিক কাগজ। ফলে কর্ণফুলী পেপারের কদর ও চাহিদা কমে গেছে। তবে কেপিএমের সুবিধাগুলোর উল্লেখ করে বলা হয়, পরিকল্পনা যথাযথ হলে প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দাঁড়াতে পারে। যেমনÑ ক. নদীতীরে অবস্থিত হওয়ায় কাঁচামাল পরিবহন সহজ; খ. পার্বত্যাঞ্চল হওয়ায় কাঁচামাল উৎপাদনের বেশ সুযোগ বিদ্যমান; গ. অনেক বেশি কর্মসংস্থান এবং চাহিদা অনুযায়ী কাগজ সরবরাহ করা সম্ভব; ঘ. কেপিএমের এক লাখ ২৭ হাজার বনভূমির বিশাল অংশ অব্যবহৃত রয়েছে। এ ছাড়া নিজেরা মণ্ড উৎপাদন করলে খরচ পড়বে প্রতি টন ৫০-৬০ হাজার টাকা। এখন তা ৭০-৮০ হাজার টাকায় কেনা হচ্ছে। এই মিলের খালি জায়গার এক লাখ টন ক্ষমতাসম্পন্ন আরো দু’টি কাগজকল স্থাপন করা সম্ভব বলে আইএমইডি মনে করে।
একসময়ে এশিয়ার বৃহত্তম কাগজকল হিসেবে বিখ্যাত কর্ণফুলী পেপার মিলের কাগজের সুনাম ও চাহিদা ছিল ব্যাপক। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে গর্ব করত। এমন একটি ঐতিহ্যবাহী ও সম্ভাবনাময় কারখানাকে কিছুতেই জাতীয় অর্থ অপচয়ের একটি বড় উৎস বা ‘শ্বেতহস্তী’ বানানো যুক্তিসঙ্গত হতে পারে না। যেকোনো মূল্যে সাধ্যমতো উদ্যোগ নিয়ে কেপিএমকে যুগোপযোগী করার জন্য সরকার অবিলম্বে তৎপর হবে বলেই জনগণ আশা করে।


আরো সংবাদ



premium cement
অনির্দিষ্টকালের জন্য অনলাইন ক্লাসে যাচ্ছে জবি, বন্ধ থাকবে পরীক্ষা কুড়িগ্রামে রেলের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ ক্রিকেট খেলতে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছে দেওয়ানগঞ্জের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শিহাব কিশোরগঞ্জে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ সাতক্ষীরা বৈদ্যুতিক খুটিতে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলআরোহী নিহত বার্সেলোনাতেই থাকছেন জাভি চতুর্থ দফা ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি : এবারের তাপদাহ শেষেই বৃষ্টিপাতের আশা ফরিদপুরে বৃষ্টির জন্য নামাজে হাজারো মুসুল্লির কান্না পোরশার নোচনাহারে আগুনে ৩টি দোকান পুড়ে গেছে খুলনা বিভাগ ও ৬ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ ‘১ টাকার কাজ ১০০ টাকায়, ৯৯ যায় মুজিব কোটে’

সকল