২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
এখনো ঝুঁকিতে হাজার হাজার মানুষ

পাহাড়ধসের শিক্ষা কেন নেয়া হয় না?

-

রাঙ্গামাটিতে ভয়াবহ পাহাড়ধসে ১২০ জন নিহত হওয়ার মতো নজিরবিহীন ট্র্যাজেডির এক বছর পূর্ণ হলো গত ১৩ জুন। ওইদিন অতিবৃষ্টিসহ নানা কারণে পাহাড় ধসে পড়েছিল পার্বত্য শহরটিতে এবং প্রাণ দিয়েছিলেন শতাধিক মানুষ। হতাহতদের মধ্যে ছিলেন পাহাড়ি-বাঙালি নির্বিশেষে নারী, পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধ। ওই ঘটনায় অনেক বাড়িঘর ও সড়ক বিধ্বস্ত হয়েছিল। রাঙ্গামাটির সাথে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ এবং ঝুঁকির মুখে পড়েছিল সরকারি ও বেসরকারি বেশ কিছু স্থাপনা, যার মধ্যে প্রশাসনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ভবনও ছিল। পত্রপত্রিকার খবর মোতাবেক, পাহাড়ধসের সেই মর্মান্তিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন গঠিত অনুসন্ধান কমিটি বেশ কয়েকটি সুপারিশ দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সুপারিশ। কিন্তু এত জরুরি একটি বিষয়েও গত এক বছরে বেশির ভাগ সুপারিশ বাস্তবায়ন না হয়ে কাগজ-কলমে সীমাবদ্ধ রয়েছে। অথচ আজো সেই ঘটনায় গৃহহীন প্রায় সাড়ে চার শ’ লোক কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র ও তাঁবুতে বাস করছেন বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে। এ দিকে, পাহাড়ধসের পর কয়েক মাস না যেতেই ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসতগৃহ নির্মাণ শুরু হয়ে যায়। এ পর্যন্ত সেখানে দুই শতাধিক ঘর তৈরি করা হয়েছে। এগুলোতে ১০ হাজারের বেশি মানুষ বাস করছেন। অথচ এসব বাড়িঘর নির্মাণের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি। রাঙ্গামাটির শিমুলতলী, পশ্চিম মুসলিমপাড়া, রূপনগর, ভেদভেদী প্রভৃতি এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায়ও অবৈধ ঘর তোলা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বাসিন্দাদের বক্তব্য ‘মূল শহরে বাস করার সুযোগ না থাকায়’ তারা বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ঝুঁকি নিয়ে ঘর তৈরি করছেন। জানা গেছে, রাঙ্গামাটি পৌরসভায় মাত্র দুই হাজার ১৫টি হোল্ডিং অনুমোদিত। অপর দিকে, ১৫ হাজার ৭৫২ হোল্ডিং অবৈধ। একেক হোল্ডিংয়ের আওতায় কয়েকটি পরিবারের বসবাস। প্রশাসন জানায়, শহরের ১২টি পাহাড়সমেত ৩১টি স্থান ধসের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। শিমুলতলী, রূপনগর, নতুনপাড়া, বিএডিসি কলোনি, পশ্চিম মুসলিমপাড়া, আলুটিলা, মোনঘরসহ এ ধরনের স্থানগুলোতে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড রয়েছে। বারবার বাসিন্দাদের সরে যেতে বলা হলেও তা মানা হচ্ছে না। স্বয়ং ডিসি একপ্রকার অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেছেন, অবৈধ স্থাপনা এত বেশি যে, উচ্ছেদ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে উচ্ছেদের ব্যাপারে ‘চিন্তাভাবনা’ চলছে।
ধসের পর গঠিত অনুসন্ধান কমিটি সুপারিশ করেছে স্থাপনা রক্ষায় দেয়াল তৈরি, ঝুঁকিপূর্ণ বসতি উচ্ছেদ, নতুন বসতি স্থাপন ও পাহাড় কাটা বন্ধ, ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাবাসীর পুনর্বাসন প্রভৃতি করার জন্য। কমিটির একজন সদস্য জানান, এসব সুপারিশের দৃশ্যমান কোনো বাস্তবায়ন হয়নি। এ দিকে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের কয়েকজন গবেষক পাহাড়ধস রোধে বন উজাড়, চাষাবাদের ক্ষতিকর পদ্ধতি অবলম্বন, অপরিকল্পিত বনায়ন প্রভৃতি বন্ধ করার সুপারিশ করেছেন।
মাত্র এক বছর আগে পাহাড়ধসের অবর্ণনীয় শোকাবহ ঘটনায় ১২০ জনের প্রাণহানি এবং সম্পদ ও স্থাপনার বিপুল ক্ষতি সত্ত্বেও আমরা শিক্ষা নিইনি। প্রশাসনও এ ব্যাপারে তাদের কর্তব্য পালন করেনি। সবাই দায়িত্ববোধের পরিচয় দিলে ধসের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে অন্তত ১০ হাজার মানুষের বসতি গড়ে উঠত না কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায়। এ মুহূর্তেই যদি সচেতন হয়ে যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়া হয়, তাহলে এবার বর্ষায় আবার ভয়াবহ ধস সংঘটিত হয়ে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। তখন পরস্পরকে দোষারোপ করে কোনো লাভ হবে না।


আরো সংবাদ



premium cement
ক্রিকেট খেলতে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছে দেওয়ানগঞ্জের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শিহাব কিশোরগঞ্জে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ সাতক্ষীরা বৈদ্যুতিক খুটিতে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলআরোহী নিহত বার্সেলোনাতেই থাকছেন জাভি চতুর্থ দফা ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি : এবারের তাপদাহ শেষেই বৃষ্টিপাতের আশা ফরিদপুরে বৃষ্টির জন্য নামাজে হাজারো মুসুল্লির কান্না পোরশার নোচনাহারে আগুনে ৩টি দোকান পুড়ে গেছে খুলনা বিভাগ ও ৬ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ ‘১ টাকার কাজ ১০০ টাকায়, ৯৯ যায় মুজিব কোটে’ রাত পোহাতেই রুদ্ধদ্বার অনুশীলন শুরু বাংলাদেশের সাটুরিয়ায় প্রশান্তির বৃষ্টি চেয়ে সালাতুল ইসতিসকা আদায়

সকল