২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
মাদকবিরোধী অভিযানে বিচারবহির্ভূত হত্যা

এই অভিযানের নৈতিক ভিত্তি থাকছে না

-

মাদকবিরোধী অভিযানে প্রতিদিন বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে অনেক সাধারণ মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি টেকনাফের একজন ওয়ার্ড কমিশনার ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। তাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধরে নিয়ে যাওয়ার পর পরিবারের সাথে টেলিফোন কথোপকথনের রেকর্ড প্রকাশ হয়েছে। সেখানে তাকে হত্যার আগের লোমহর্ষক ঘটনার বিবরণ পাওয়া যাচ্ছে। পরিবারের সদস্যরা দাবি করছেন, এই ওয়ার্ড কাউন্সিলর কোনোভাবেই মাদক ব্যবসায়ের সাথে জড়িত ছিলেন না। একজন ব্যক্তি মাদক ব্যবসায় বা অন্য কোনো অপরাধে জড়িত থাক বা না থাক, বিচারবহির্ভূত হত্যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এর মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার প্রবণতা আরো বাড়ে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন সময় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বন্দুকযুদ্ধের যে বিবরণ দিয়ে থাকে, মানবাধিকার সংগঠনগুলো তা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে সন্দেহ প্রকাশ করে আসছিল। টেকনাফের এই ওয়ার্ড কমিশনার হত্যার সময়ের কথোপকথনের রেকর্ড প্রকাশের পর এ ধরনের অভিযানের নৈতিক ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সারা দেশে মাদকের ব্যবহার ও বিস্তার ব্যাপকভাবে বেড়েছে। কক্সবাজারের মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে চোরাচালানের মাধ্যমে ইয়াবা আসছে। ভয়াবহ এই মাদক ব্যবসায়ের সাথে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয়পর্যায়ের নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে গভীর সংযোগ রয়েছে। মাদক পাচারের রুটগুলো চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নিলে মাদক আসা বন্ধ করা সম্ভব। একই সাথে মাদক ব্যবসায়ের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে আদালতের মাধ্যমে শাস্তি দিলে এর সুফল পাওয়া যেত। কিন্তু এখন যেভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা ঘটছে, তাতে মূল সমস্যা থেকে দৃষ্টি সরে যাচ্ছে।
যেকোনো অপরাধের জন্য বিচার ছাড়া শাস্তি দিলে সে অপরাধ দমন বা নির্মূল করা যায় না। ল্যাটিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশে অতীতে এ ধরনের মাদকবিরোধী অভিযানের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি; বরং এ ধরনের হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিক এবং বিভিন্ন সুযোগ সন্ধানী মহল স্বার্থ হাসিলের কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এর আগে সন্ত্রাসের অভিযোগ এনে বহু বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এখন মাদকবিরোধী অভিযানের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চলছে। মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের তথ্য মতে, গত পাঁচ মাসে ২২২ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। আমরা আশা করব, এ ধরনের হত্যাকাণ্ড বন্ধ করে প্রকৃত অপরাধীকে আইনের আওতায় এনে আদালতের মাধ্যমে শাস্তি দেয়া হবে। এ ছাড়া বিচারবহির্ভূত হত্যার প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত।

 


আরো সংবাদ



premium cement
ঈশ্বরগঞ্জে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ব্যারিস্টার ফারজানাকে সংবর্ধনা যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনে‘ভিত্তিহীন' তথ্য ব্যবহারের অভিযোগ বাংলাদেশ সরকারের মোদির মুসলিমবিরোধী মন্তব্যের প্রতিবাদ করায় সংখ্যালঘু নেতাকে বহিষ্কার ফ্লোরিডায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটের নতুন কনসাল জেনারেল সেহেলী সাবরীন চান্দিনায় পানিতে ডুবে একই পরিবারের দুই শিশু মৃত্যু কেএনএফ সম্পৃক্ততা : গ্রেফতার ছাত্রলীগ নেতা সম্পর্কে যা জানা গেছে দেশে টিআইএনধারীর সংখ্যা ১ কোটি ২ লাখ শ্রমজীবি মানুষের মাঝে ক্যাপ, পানি ও স্যালাইন বিতরণ করেছে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর পশ্চিম নোয়াখালীতে হিট স্ট্রোকে শিক্ষার্থীর মৃত্যু বাবার বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ায় স্ত্রীর ২৭ স্থানে স্বামীর ধারালো অস্ত্রের আঘাত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে ১২ উপজেলায় মানববন্ধন

সকল