২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
পাহাড়ধসের শঙ্কা

আগাম সতর্ক হতে হবে

-

বাংলাদেশের কয়েকটি পার্বত্য এলাকা ও পাহাড়ি অঞ্চলে পাহাড়ধস এ ঋতুতে একটি সাধারণ ঘটনা। বিশেষ করে বৃষ্টিপাত বাড়লে পাহাড়ধসে পাহাড়ের কোলে আশ্রয় নেয়া কিংবা বসতি স্থাপনকারীদের বিপদের সীমা থাকে না। এবার আগাম বৃষ্টি সেই দুঃসংবাদ ইতোমধ্যে শুনিয়েছে। পার্বত্য জেলায় এরই মধ্যে পাহাড়ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
এবার মওসুমি বৃষ্টিপাত একটু বেশি হবে বলেই আভাস পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে কয়েক দিন ভারী বৃষ্টির সাথে জনগণ পরিচিত হয়েছে। পাহাড় কাটা ও পাহাড়ের পাদদেশে সাধারণভাবে আবাদ করার প্রবণতা লক্ষণীয়। তা ছাড়া, রাস্তা বানানো ও আবাদ করার লক্ষ্যে যেসব পাহাড় কাটা হয়েছে; সেগুলো প্রায়ই ধসে যোগাযোগব্যবস্থা বিপন্ন করে। একই সাথে পাহাড় ধসে পড়ে বড় ধরনের ট্র্যাজেডি ছাড়াও ছোট-বড় ঘটনা প্রায়ই ঘটে। এবার কয়েকটি ছোট ঘটনা ঘটলেও বড় ধরনের বিপর্যয়কর ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা প্রবল।
রোহিঙ্গা শরণার্থীরাও ঝুঁকিমুক্ত নয়। ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম থেকে সীতাকুণ্ড পর্যন্ত পাহাড়ি জনপদ। পাহাড় একটি প্রাকৃতিক ভূমিবৈচিত্র্যের অংশ। সৃষ্টিকর্তা এগুলোকে প্রকৃতিতে স্থিতি রাখার জন্য পেরেকের সাথে তুলনা করেছেন। তা ছাড়া, পাহাড় কাটা একধরনের উন্নয়নের নেশার সাথে জড়িত। অথচ হতদরিদ্র মানুষ সেসব পাহাড়ের পাদদেশে বসতি স্থাপন করে। বসতি স্থাপন করতে তারাও পাহাড়কে বাসযোগ্য করার জন্য নানাভাবে কাটাকাটি করে। ওপরে ওঠার সিঁড়ি বানায়, ঘর বানানোর জন্য পাহাড় খুঁড়ে নিরাপদ বসতি গড়ার চেষ্টা করে; অথচ এসব অবৈজ্ঞানিক ও প্রকৃতিবিরোধী তৎপরতা পাহাড়ধসের কারণ ঘটায়। তা ছাড়া, উন্নয়নের জন্য বনেদি ব্যবসায়ীরা পাহাড় কাটাকে জরুরি কাজ বিবেচনা করেন। সেই সাথে উন্নয়নের জন্য অপরিকল্পিত পাহাড় কাটাও থেমে নেই। তাই নিরাপদ পাহাড়গুলোও ঝুঁকিমুক্ত নয়। এর বাইরে গাছ কেটে, জুম চাষ করে পাহাড়কে ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলা হয়েছে।
এবার আবহাওয়ার পূর্বাভাস অতিবৃষ্টির সম্ভাবনার কথা বলেছে। তাই পাহাড়ধস ঠেকানো ও পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে আনার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিতে হবে। এ ব্যাপারে নির্লিপ্তভাবে কিংবা গুরুত্বহীনভাবে দেখার খেসারত বড় ধরনের ট্র্যাজেডির জন্ম দিতে পারে। অতএব, পাহাড়ধসপ্রবণ এলাকায় এক্ষুনি নজরদারি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। নয়তো মাটি চাপা পড়া মানুষের আহাজারি শোনার জন্য অপেক্ষা করতে হবে, যেটি হবে দুর্ভাগ্যজনক। আশা করি, পাহাড়ধসের ব্যাপারে আগাম সতর্কতা গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement