২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সিটি নির্বাচনের প্রচারে এমপিদের অংশ নেয়ার সুযোগ

ভোটে সমান সুযোগ রাখল না ইসি

-

ইসি যা কিছু করছে সবই সরকারের অঙ্গুলি হেলনে করছে। যতই সময় যাচ্ছে, এই অভিযোগের সত্যতা ততই প্রবলভাবে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয়ে উঠছে। সর্বশেষ খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ‘এক্সেলেন্ট ও পিসফুল’ নির্বাচন হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার মধ্য দিয়ে ইসি তার বশংবদী চরিত্রকে আরো জোরালো করে তুলেছে। যদিও গণমাধ্যমের প্রতিবেদন ও পর্যবেক্ষকদের পর্যবেক্ষণ মতে, এ নির্বাচনে নতুন মডেলে ভোট কারচুপি চলেছে। তবে অতি সম্প্রতি সরকারি দলের দাবি অনুযায়ী সিটি নির্বাচনে এমপিদের প্রচারে অংশ নেয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে বর্তমান ইসি তার এই চরিত্রকেই আরো স্পষ্টতরভাবে জনগণের সামনে তুলে ধরল।
উল্লেখ্য, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সংসদ সদস্যদের প্রচারে অংশ নেয়ার সুযোগ দিয়ে আচরণ বিধিমালায় সংশোধনী অনুমোদন করেছে নির্বাচন কমিশন তথা ইসি। ক্ষমতাসীন দলের দাবির দেড় মাসের মাথায় একজন নির্বাচন কমিশনারের আপত্তির মুখে গত বৃহস্পতিবার এই সংশোধনী আনে ইসি। তবে নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংশোধনী আনার ফলে সামনের সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোতে ‘সবার জন্য সমান সুযোগ’ তথা ‘লেভেল প্লেইং ফিল্ড’ আর অবশেষ থাকল না। কারণ এ সিদ্ধান্তের ফলে ক্ষমতাসীনেরা বাড়তি সুযোগ পাবে। কেননা স্থানীয় পর্যায়ে সংসদ সদস্যরা বেশ প্রভাবশালী। এমপিরা নিজ নিজ এলাকায় প্রায় সব কিছুই নিয়ন্ত্রণ করেন।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবারের ইসির এ বৈঠকে এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আপত্তি ওঠে, যা ইসি সচিবালয়ের সচিব হেলাল উদ্দিন আহমদও স্বীকার করেন। তিনি একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিনিধিকে বলেন, একজন নির্বাচন কমিশনার এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রমতে, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার ইসির এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে নোট অব ডিসেন্ট দেন। তিনি বক্তব্যটি বৈঠকে পড়েও শোনান। মাহবুব তালুকদার তার বক্তব্যে পুলিশ ও প্রশাসনের ওপর স্থানীয় এমপিদের প্রভাবের বিষয়টি তুলে ধরেন। এর আগে গত ১৯ এপ্রিল যখন আচরণবিধি সংশোধনের বিষয়টি কমিশনের সভায় উঠেছিল, তখনো তিনি এর বিরোধিতা করেছিলেন।
উল্লেখ্য, এর আগে কাজী রকিব উদ্দিন কমিশনও এ ধরনের আচরণবিধি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছিল। তখন বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা আসার প্রেক্ষাপটে ওই কমিশন তা সংশোধনে বিরত থাকে। এবার বর্তমান ইসি সরকারের চাপের মুখে ওই সংশোধনীর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে বলে পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা।
আমরা মনে করি, সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টির স্বার্থে ইসিকে অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে। নইলে খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের কলঙ্ক আরো বড়ভাবে দেখা দেবে আগামী সিটি নির্বাচনগুলোতে। আর এর সার্বিক কুপ্রভাব পড়বে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে।


আরো সংবাদ



premium cement