১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বন্ধ হবে বাজার কারসাজি করে পকেট কাটা

- ফাইল ছবি

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ তহবিল ব্যবহার করে শেয়ারবাজারে কারসাজি বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ তহবিল ব্যবহার করে পরিচালকদের হাতে ৩০ ভাগের কম শেয়ার রয়েছে, এমন কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করা যাবে না। একই সাথে কোনো কোম্পানি পর পর তিন বছর ১০ ভাগের কম লভ্যাংশ দিলে ওই কোম্পানির শেয়ারেও বিনিয়োগ করা যাবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, এর ফলে পরিচালকরা শেয়ার কারসাজির মাধ্যমে সাধারণের পকেট কাটতে পারবেন না। একই সাথে মৌলভিত্তির শেয়ার অর্থাৎ বাজার টেকসই হতে ভালো কোম্পানির শেয়ারগুলোর লেনদেন বাড়বে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, যেসব কোম্পানির বেশিসংখ্যক শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে থাকে, ওইসব কোম্পানির উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে অনেক সময় বাজার কারসাজির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া যায়। বিভিন্ন সময় অভিযোগ ওঠে, পুঁজিবাজারের কিছু কোম্পানির উদ্যোক্তারা কারসাজির মাধ্যমে কম মূল্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে শেয়ার কিনে নেন।

কারসাজির মাধ্যমে মূল্য বাড়িয়ে আবার ওই কোম্পানির শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রি করেন। এভাবেই কিছু অসাধু উদ্যোক্তা বাজার কারসাজির মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের নিঃস্ব করে নিজেদের পকেট ভারী করেন। পুঁজিবাজারে তারল্য প্রবাহ বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যে সার্কুলার জারি করা হয়েছে, তাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ তহবিল ব্যবহার করে বাজার কারসাজি বন্ধের বিধান রাখা হয়েছে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসির একটি বিধান রয়েছে, এ ক্যাটাগরির শেয়ারের জন্য উদ্যোক্তাদের কাছে ন্যূনতম শেয়ার অর্থাৎ কমপক্ষে ৩০ শতাংশ শেয়ার থাকতে হবে। অর্থাৎ ৩০ শতাংশ শেয়ার না থাকলে ওই কোম্পানিকে ভালো কোম্পানি হিসেবে বিবেচনা করা হবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বাজার কারসাজি বন্ধের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ তহবিল ব্যবহার করে উদ্যোক্তাদের ৩০ শতাংশ কম শেয়ার রয়েছে এমন কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ না করার বিধান রাখা হয়েছে।

অপর দিকে, কোনো কোম্পানি ১০ শতাংশের কম নগদে বা বোনাস লভ্যাংশ দিলে ওই কোম্পানি এ ক্যাটাগরির কোম্পানি হতে পারে না। আবার অনেক ক্ষেত্রে কোনো একটি নতুন কোম্পানি এসে এক বছর পর ভালো লভ্যাংশ ঘোষণা করে। পরের বছর দেখা গেল লোকসান দেখিয়ে কোম্পানিটি কোনো লভ্যাংশই দিলো না। অথবা ন্যূনতম একটি লভ্যাংশ ঘোষণা করা হলো। মৌলভিত্তির শেয়ারে বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারেও এমন বিধিনিষেধ আরওপ করা হয়েছে। সার্কুলারে বলা হয়েছে, কোনো কোম্পানি পর পর তিন বছর ১০ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দিতে না পারলে, বিশেষ তহবিল ব্যবহার করে আলোচ্য কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করা যাবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, এর ফলে পুঁজিবাজারে অসাধু উদ্যোক্তা বা বিনিয়োগকারীদের বাজার কারসাজি কমে যাবে। ভালো কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ বাড়বে। দীর্ঘমেয়াদে পুঁজিবাজার স্থিতিশীল হতে সহায়ক হবে। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা মূলধন হারিয়ে পথে বসার হাত থেকে রক্ষা পাবেন।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংক গত সোমবার বিশেষ তহবিল গঠন সংক্রান্ত দু’টি সার্কুলার জারি করে। সার্কুলারে প্রতিটি ব্যাংকের ২০০ কোটি টাকার তহবিল গঠনের সুযোগ দেয়া হয়। এ টাকার তহবিল ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিদ্যমান নীতিমালা ৫ বছরের জন্য শিথিল করা হয়। এতে দেশে কার্যত ৫৭টি ব্যাংক প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকার তহবিল ব্যবহারের সুযোগ পাবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement