১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দাম বেড়েছে মাছ মুরগি পেঁয়াজের

দাম বেড়েছে মাছ মুরগি পেঁয়াজের - ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর বাজারগুলো এখন ইলিশে সয়লাব। ছোট-বড় সব সাইজের ইলিশের সরবরাহ ব্যাপক। যদিও দাম সে তুলনায় কমছে না। সংশ্লিষ্টদের দাবি, এবছর বর্ষা কম হওয়ায় হাওর-বাওরে মাছ ধরা পড়ছে কম। এ কারণে সরবরাহ কম থাকার অযুহাতে বেড়েছে অন্যসব মাছের দাম। সবজির দাম আগে থেকেই বাড়তি। নতুন করে দাম বেড়েছে মুরগি এবং পেঁয়াজের। বিক্রেতাদের আশঙ্কা, ভারতে পেঁয়াজের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় দেশে এ পণ্যটির দাম আরও বাড়তে পারে।  শুক্রবার রাজধানী ঢাকার কয়েকটি পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দ্রব্যমূল্যের এ চিত্র পাওয়া গেছে।

বিভিন্ন পর্যায়ের ক্রেতা-বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় এক মাস ধরে রাজধানীর মাছের বাজার অনেকটাই ইলিশের দখলে। সব বাজারেই ভরপুর মিলছে বড় ইলিশ। ফলে ক্রেতারাও অনেকটা ইলিশের দিকে ঝুঁকছেন। ইলিশ মাছ পছন্দ করে না এমন মানুষ পাওয়া যাবে না। তাই দাম বেশি হওয়ার পরও একটি শ্রেণি ইলিশের দিকে ঝুঁকছে। দিন যত যাচ্ছে বাজারে ইলিশের সরবরাহ ততো বাড়ছে। তবে অন্য মাছের সরবরাহ কমছে। এ কারণে হয়তো মাছের দাম কমছে না। ব্যবসায়ীদের মতে, এক বছরের বেশ সময় ধরে রাজধানীর বাজারগুলোতে চড়া দামে মাছ বিক্রি হচ্ছে। এ বছর বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় মাছের উৎপাদন কম হয়েছে।

রাজধানীতে গতকাল বাজার ও মানভেদে প্রতি কেজি তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস মাছ বিক্রি হয় ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা। রুই ও কাতল মাছ মাছ বিক্রি হয় ২৮০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। এছাড়া পাবদা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, ট্যাংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, শিং ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি বিক্রি হয়। স্বস্তি দিচ্ছে না ছোট মাছও। কাচকি মাছ বিক্রি হয় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজিদরে। কয়েক মাস ধরেই এমন চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মাছ।

খুচরা বাজারে বর্তমানে এক কেজি থেকে ১ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজিদরে। আর পিস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে। ৮০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্র হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা কেজি। পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকার মধ্যে। দুই সপ্তাহ ধরেই বড় ইলিশ এমন দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে এক মাস আগে এসব ইলিশ দ্বিগুণেরও বেশি দামে বিক্রি হয়। বড় ইলিশের পাশাপাশি মাসের হিসাবে দাম কমেছে ছোট ও মাঝারি ইলিশের। তবে সপ্তাহের হিসাবে ছোট ও মাঝারি ইলিশের দামও অপরিবর্তিত রয়েছে। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে। ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকার মধ্যে। আর ৫০০ গ্রামের কম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি।

বিক্রেতারা জানান, সার্বিকভাবে সবজির দাম এবার বাড়তি হলেও কিছু শীনকালিন আগাম সবজির দাম কমেছে। খুচরা বাজারে গতকাল শীতের আগাম সবজি শিমের কেজি বিক্রি হয় ১০০ থেকে ১২০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। তার আগের সপ্তাহে ছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধান শিমের দাম কেজিতে কমেছে ২০ টাকা এবং দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে ৮০ টাকা পর্যন্ত। শিমের পাশাপাশি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ফুলকপি, বাঁধাকপি ও মুলাও। আগের সপ্তাহের মতো ছোট আকারের প্রতি পিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বাঁধাকপি। মুলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। শীতের আগাম সবজির চড়া দামের সঙ্গে নতুন করে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে লাউ।

ঢাকার বাজারে শুক্রবার ছোট আকারের প্রতিটি লাউ বিক্রি হয় ৭০ থেকে ৮০ টাকা পিসদরে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। তবে কিছুটা কমেছে করলা, পাকা টমেটো ও গাজরের দাম। পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি, যা গত ছিল ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি। গাজর বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা। গত সপ্তাহে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া করলার দাম কমে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। দাম অপরিবর্তি রয়েছে বরবটি, বেগুন, পটল, ঝিঙা, ধুন্দল, চিচিংগা, কাকরল, ঢেঁড়সের। বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিংগা, ঝিঙা, ধুন্দল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাঁকরোল ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, সবজির চড়া দামের মধ্যেই নতুন করে দাম বেড়েছে মুরগির। সাদা বয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা। পাকিস্তানি কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ২২০ থেকে ২৩০ টাকা। তবে লাল লেয়ার মুরগি আগের মত ২০০ থেকে ২১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কোরবানীর ঈদপরবর্তী বাজারে গরু-খাশীর গোশত বিক্রি এখনও বেশ কম। গরুর গোশত ৫৫০ এবং খাসীর গোশত ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন গত সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। আর হাসের ডিমের ডজন ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা।

খুচরা বাজারে গতকাল প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি। তবে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানী কমে যাওয়ায় পাইকারি বাজারে নতুন করে দাম কিছুটা বেড়েছে। বিক্রেতারা আশঙ্কা করছেন, পেঁয়াজের দাম আরও বাড়তে পারে। তারা জানান, সম্প্রতি অতিবৃষ্টি ও বন্যায় ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে পেঁয়াজের খেত নষ্ট হয়েছে। এতে এর উৎপাদন কমে গেছে এবং এ কারণে ওই দেশের বাজারেই পেঁয়াজের সরবরাহ কমেছে, যার প্রভাব পড়ছে দামে। তারা জানান, আগে যেখানে ভারতের মোকামগুলো থেকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৯ থেকে ১০ রুপি দরে কিনতেন, এখন তা ২১ থেকে ২২ রুপিতে কিনতে হচ্ছে। এর সঙ্গে প্রতি কেজিতে পরিবহন খরচ যোগ হচ্ছে ৫ থেকে ৬ রুপি করে। যদিও খুচরা বাজারে আদার দাম কিছুটা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি। আর প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি।


আরো সংবাদ



premium cement
তীব্র তাপপ্রবাহে বাড়ছে ডায়রিয়া হিটস্ট্রোক মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস : প্রধানমন্ত্রী মৌসুমের শুরুতেই আলু নিয়ে হুলস্থূল মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এত শক্তি প্রয়োগের বিষয়টি বুঝতে পারেনি ইসরাইল রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ : মর্টার শেলে প্রকম্পিত সীমান্ত বিএনপির কৌশল বুঝতে চায় ব্রিটেন ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আজ নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততায় ঝুঁকি রয়েছে : সেনাপ্রধান নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বিএনপি : কাদের রৌমারীতে বড়াইবাড়ী সীমান্তযুদ্ধ দিবস পালিত

সকল