২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ডিএনসিসি’র বাজেট ঘোষণা

মশা মারার ব্যয় বেড়ে তিন গুণ

মশা মারার ব্যয় বেড়ে তিন গুণ - ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) বাজেটে মশা নিধনের ব্যয় আগের বছরের ব্যয়ের তিন গুণ করা হয়েছে। নগরীর সবচেয়ে আলোচিত খাত তথা মশক নিধন ও যন্ত্রপাতি খাতে মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এর মধ্যে শুধু মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। গত অর্থবছরে এই খাতে ব্যয় ধরা হয়েছিল সাড়ে ১৭ কোটি টাকা।

এই খাতেরই অন্য একটি উপখাত তথা মশক নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রপাতি কেনায় ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ কোটি টাকা। যদিও আগের অর্থবছরে এই দুই খাতে ব্যয় ধরা হয়েছিল যথাক্রমে ১৭ কোটি ৫০ লাখ ও ৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোটা দাগে শুধু মশক নিবারণ খাতেই বরাদ্দ বেশি ধরা হয়েছে ৩৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। বৃহস্পতিবার দুপুরে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেট ঘোষনায় মেয়র মো: আতিকুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

ডিএনসিসি’র নতুন এই অর্থবছরের জন্য মোট তিন হাজার ৫৭ কোটি ২৪ লাখ টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া শুধু মশক নিধন কার্যক্রমে এবছর ১৮২ শতাংশ ব্যয় বাড়িয়ে করা হয়েছে ৪৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
বাজেট বক্তৃতায় মেয়র আতিকুল ইসলাম জানান, বাজেটে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে এক হাজার একশ’ ছয় কোটি ৪০ লাখ টাকা। রাজস্ব ব্যয় ধরা হয়েছে পাঁচশ’ ৫১ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

বাজেট বিবরনীতে আরো দেখা যায়, নতুন ঘোষিত এই বাজেটে অন্যান্য খাতে আয় ধরা হয়েছে ৯ কোটি টাকা, সরকারি অনুদান অর্থাৎ থোক বরাদ্দ থেকে আয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি টাকা। এছাড়া সরকারী ও বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট প্রকল্প থেকে আয় ধরা হয়েছে মোট এক হাজার ৫শ’ ৬৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা। অন্যদিকে বাজেটে রাজস্ব ব্যয়ের বাইরেও অন্যান্য খাতে ব্যয় দেখানো হয়েছে ১২ কোটি টাকা, নিজস্ব ও সরকারি অনুদান থেকে উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে সাতশ’ ৭১ কোটি ১০ লাখ টাকা, সরকারী বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট প্রকল্প থেকে উন্নয়ণ ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার পাঁচশ’ ৬৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। বাজেটে প্রারম্ভিক স্থিতি ধরা হয়েছে দুইশ’ ২৭ কোটি ২০ লাখ টাকা আর বাজেটের সমাপনী স্তিতি ধরা হয়েছে একশ’ ৫৮ কোটি ১০ লাখ টাকা।

ডিএনসিসিতে যুক্ত হওয়া নতুন ১৮টি ওয়ার্ড এর সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য বড় বাজেট দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আতিকুল ইসলাম। আবার ব্যয় মোকাবেলায় আয়ের উৎসও খোঁজা হয়েছে এই বাজেটে।

আতিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জন্য এটি নবম বাজেট হলেও মেয়র হিসেবে আমার জন্য প্রথম বাজেট। আমাদের জাতীয় জীবনে এই অর্থবছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ‘মুজিব বর্ষ’, ‘ভিশন ২০৪১’ এবং ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)’ সামনে রেখে ডিএনসিসির কর্মপরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র জানান, ২০ সেপ্টেম্বর থেকে করপোরেশনের ওয়ার্ডগুলোতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

মেয়র নির্বাচনের সময় আমি মশক নিয়ন্ত্রণ, টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জলাবদ্ধতা নিরসন, সেবাগুলো ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিশ্চিত করা, রাস্তাঘাটের আধুনিকায়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। তাছাড়া নতুন ১৮টি ওয়ার্ড যুক্ত হওয়ায় ডিএনসিসির বর্তমান ওয়ার্ড সংখ্যা ৫৪টি। আয়তনও ৮২ দশমিক ৬২ বর্গ কিমি থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১৯৬ দশমিক ২২৮ বর্গ কিমি হয়েছে। নতুন ওয়ার্ডগুলোর উন্নয়নেও আমরা কাজ করবো।

উন্নয়ন ব্যয়ের মধ্যে সড়ক ও ট্রাফিক অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন খাতে ৩৬৩ কোটি টাকা, কবর স্থান বা শ্মশান ঘাটের সংস্কার ও উন্নোয়নে ৭ কোটি ২৫ লাখ, পার্ক ও খেলার মাঠে ৪ কোটি টাকা, ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে ৭৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা এবং পরিবেশ উন্নয়নে ২৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। উন্নয়ন বাজেট খাতে সর্বমোট দুই হাজার ৩৩৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে যা মোট বাজেটের প্রায় ৭৬ শতাংশ। এদিকে মশা নিয়ন্ত্রণে ৪৯ কোটি ৩০ লাখ, মশক নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ১০ কোটি এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যায় এক কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement