২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে যে বরাদ্দ জনগণ ও চিকিৎসকদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়বে 

- নয়া দিগন্ত

দেশের জনগনের চিকিৎসার জন্য ২৫,৭৩২ কোটি টাকা মোটেও যথেষ্ট বাজেট নয়। চিকিৎসা ব্যবস্থাকে সংস্কার করা ছাড়া সুষ্ঠু চিকিৎসা আশা করা সম্ভব না। সরকার যে বাজেট স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দিয়েছে তা দিয়ে জনগণ এবং ডাক্তারদের মধ্যে উত্তেজনা ও গণ্ডগোল অরোও বৃদ্ধি পাবে। 

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘জাতীয় বাজেট ২০১৯-২০২০ঃ স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত মূল্যায়ন’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসক ও পরিবেশবাদিরা এসব কথা বলেন।

বুধবার ডক্টরস ফর হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্ট, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও জাতীয় স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলন-এর যৌথ উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাপা’র সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আব্দুল মতিন এর সঞ্চালনায় এতে মুল বক্তব্য পাঠ করেন ডক্টরস ফর হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্ট এর সাধারণ সম্পাদক ডা. কাজী রকিবুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বক্তব্য রাখেন বিএমএ’র সাবেক সভাপতি ও জাতীয় স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলন এর আহ্বায়ক অধ্যাপক রশিদ-ই মাহবুব,বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, ডক্টরস ফর হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্ট এর সাবেক সভাপতি বিশিষ্ট শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নাজমুন নাহার, ডক্টরস ফর হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্ট-এর সভাপতি অধ্যাপক এম আবু সাঈদ, জনস্বাস্থ্য সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ডা. ফয়জুল হাকিম লালা, ডাঃ হাসিনা মমতাজ. মিহির বিশ্বাস প্রমুখ।

অধ্যাপক রশিদ-ই মাহবুব বলেন, সরকার যে বাজেট স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দিয়েছে তা দিয়ে জনগণ এবং ডাক্তারদের মধ্যে উত্তেজনা ও গণ্ডগোল অরোও বৃদ্ধি পাবে। কারণ সীমিত বাজেটে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার, নার্স ও টেকনিশিয়ানের বেতন দেওয়ার পর ঔষধসহ অন্যান্য পয়োজন মেটানো কোন ভাবেই সম্ভব না। বর্তমান বাজেটও বরাবরের মত উচ্চবৃত্ত ও উচ্চ মধ্যবৃত্তদের জন্যই সহায়ক।

অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, সরকারের অব্যবস্থাপনার জন্যই উপজেলা পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার নিয়োগসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সরঞ্জাম বা স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া যায় না। অযোগ্যলোককে যোগ্য যায়গায় দিয়ে স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। ঔষধ প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার কারণে ভেজাল ও মেয়াদউর্ত্তীর্ণ ঔষধে আজ বাজার সয়লাব। প্রনোদনার মাধ্যমে ডাক্তারদের উপজেলা পর্যায়ে থাকার সুব্যবস্থা করতে হবে।

অধ্যাপক নাজমুন নাহার বলেন, যে বাজেটটি দেয়া হয় তাও সঠিক যায়গা সঠিকভাবে ব্যবহার হয় না। সরকারের উচিত দেশে ডাক্তার, নার্স, টেকনোশিয়ানের চাহিদা অনুযায়ী কত প্রয়োজন তা হিসাব করে পদ সৃষ্টি করে দ্রুত নিয়োগ দেয়া। তা না হলে দেশে সুষ্ঠুভাবে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে না। ঔষধ প্রশাসনের দায়ীত্ব হীনতার কারনে ঔষধের দাম যে যেমন ইচ্ছে নিচ্ছে। এ ব্যপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।

অধ্যাপক এম আবু সাঈদ বলেন, স্বাস্থ্য খাতকে বিকেন্দ্রী করণ করে স্থানীয় পর্যায়ে দিলে তারা স্থানীয়ভাবে বাজেট করবে এবং এ খাতে কতবাজেট লাগবে সেটা তারা স্থানীয়ভাবে তাদের বাজেট তারা নিজেরাই ঠিক করে নিবে।

ডা. কাজী রকিবুল ইসলাম তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ মোট জাতীয় বাজেটের ৪.৯২ শতাংশ এবং জিডিপির ০.৮৯ শতাংশ। সেই হিসেবে এবারের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে জন প্রতি বরাদ্দের পরিমান ১৪২৭ দশমিক ৭৭ টাকা।

সংবাদ সম্মেলন থেকে জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ অত্যন্ত অপ্রতুল,এমনকি তা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যেও সর্বনিম্ন। তাই স্বাস্থ্যের উন্নয়নের জন্য আমাদের দেশের বর্তমান আর্থসামাজিক বাস্তবতায় জাতীয় বাজেটের ১২ শতাংশ এবং জিডিপির বরাদ্দ ৩ শতাংশে উন্নীত করার দাবী জানান এবং চলতি বাজেট থেকেই তার প্রতিফলন দাবি করেন চিকিৎসক ও পরিবেশবাদিরা।

তারা বলেন,বাজেট বৃদ্ধি করে উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসকদের প্রনোদনা প্রদান, ভবিষ্যত গড়ার সুযোগ এবং আবাসন ও অন্যান্য সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে সেখানে তাদের অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement