২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ফুটপাতে ঈদ বাজার : ৩০ থেকে ৩০০ টাকায় মিলছে পোশাক

রাজধানীর একটি ফুটপাতে চলছে ঈদের বেচাকেনা - ছবি : নয়া দিগন্ত

মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরের এখনো বাকি প্রায় দু’সপ্তাহ। তবে এরই মধ্যে সরব হয়ে উঠেছে রাজধানীর ফুটপাতের ঈদের বাজার। ‘বাইচ্ছা লন, দেইক্কা লন, তিরিশ’ ধব্বনিতে মুখর করে তুলেছে দোকানীরা।

কেনাকাটায় স্বল্প আয়ের মানুষদের ভরসা ফুটপাতের অস্থায়ী বাজার। সাধ ও সাধ্যের মিশেলে পোষাকের চাহিদা মিটিয়ে সুযোগ করে দিচ্ছে ঈদ উদযাপনের। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় লেগে থাকছে এসব দোকানে।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভাসমান এসব দোকানগুলোতে কেউ দড়ির ওপর কেউ বা প্লাস্টিকের হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে আবার কেউ চৌকিতে বাহারি রঙ আর ডিজাইনের পোষাক সাজিয়ে রেখেছে। সাইজ ও কোয়ালিটি ভেদে শিশুদের পোষাক মিলছে ৩০ থেকে ৩০০ টাকায়।

আবার অনেকে ১ থেকে ১৫০ টাকার প্যাকেজেও বিক্রি করছে বাচ্চাদের পোষাক। বড়দের জন্য রয়েছে শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট। মেয়েদের জন্য রয়েছে ফ্রক, লেহেঙ্গা, ডিভাইডার টপস। জুতা, সালোয়ার, কামিজ, গেঞ্জি, পাজামা-পাঞ্জাবি, টুপি কসমেটিকস সহ হাল ফ্যাশনের সবই পাওয়া যায় এসব বাজারে।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, জিরোপয়েন্ট, গোলাপশাহ মাজার মোড়, বায়তুল মোকাররম, মতিঝিল, নিউ মার্কেট, ফার্মগেইট, মালিবাগ, শান্তিনগর, রামপুরা, খিলগাঁও, মুগদা, বাসাবোর ফুটপাতে ক্রেতাদের ভীড়ে এখন মিনি ঈদ মার্কেটে রূপ নিয়েছে। স্বল্প আয়ের মানুষ ঘুরে ঘুরে যাচাই বাছাই করে পছন্দের পোশাকটি কিনছেন প্রিয়জনের জন্য। ঝক্কি ঝামেলা এড়াতে আগেভাগেই কেনা-কাটা সারছেন সাধারণ মানুষ। দোকানদাররা ও খুশি ক্রেতাদের ভিড়ে।

মতিঝিল সোনালী ব্যাংকের সামনে ফুটপাতে দোকান সাজিয়ে বসা সাইফুল জানান, কয়েকদিন আগেও বেচা-বিক্রি ছিল কম। এখন বেড়েছে। আবার অনেকে দাম-দর করে চলে যাচ্ছেন। সাইফুল জানান, তাদের চেয়ে কম দামে মার্কেটে কাপড় বিক্রি করা সম্ভব নয়।

রাজধানীর বঙ্গবাজার, সদরঘাট পাইকারি বাজার থেকে এনেই তারা বিক্রি করছেন। দোকান ভাড়া, কর্মচারীদের বেতন, বিদ্যুৎ বিল না থাকায় অনেক কম দামে বিক্রি করতে পারছেন তারা। তাদের দোকানে ২০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি করা একই কাপরের দাম মার্কেটগুলোতে হাজার ছাড়িয়ে যায় বলে দাবি সাইফুলের।

শরিফুল নামে অপর এক দোকানদার জানান, ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসবে তাদের বেচা-বিক্রি ও বাড়তে থাকবে। চাঁদ রাত পর্যন্ত চলবে তাদের সেই ব্যস্ততা।

ফুটপাতে বাচ্চার জন্য পোষাক কিনতে আসা গৃহিনী রাজিয়া বেগম জানান, সাধারণত শিশুদের পোষাকের জন্য ফুটপাতে কালেকশন ভাল। তবে অন্যান্য বারের চেয়ে এবার দামও একটু বেশি বলে অভিযোগ তার। অপর একজন ক্রেতা নাসিমা আক্তার জানান, অন্যান্য বছর ছেলেদের যে সেট ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কিনেছিলাম এবার তার দাম চাওয়া হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত। তিন জোড়া জামা নেয়ার জন্য এলেও দাম বেশি হওয়ার কারণে নিয়েছেন দু’জোড়া।

নিউমার্কেট এলাকার ফুটপাতে কেনা-কাটা করতে আসা পোশাক শ্রমিক শায়লা খাতুন বলেন, ‘আমাগো তৌফিক যা আছে হেইয়া দিয়াই পোলা মাইয়াগো মুহের হাসি দ্যাখতে চাই।’ তিনি জানান, মেয়ের জন্য ৩০০ টাকায় একটা জামা এবং ছেলের জন্য ১৫০টাকায় একটা শার্ট কিনেছেন। আরো একজোড়া জুতা কিনতে হবে তাকে। হাতে টাকা আছে কম। সাধ্যের মধ্যে পছন্দসই জুতোর খোঁজে দোকানে দোকানে ঘুরছেন।

রাজধানীর ফুটপাত ঘুরে দেখা যায়, ঈদের সময় যতো কাছে আসবে তাদের বেচা-বিক্রি বাড়বে। এসব দোকানে ছেলেদের শার্ট বিক্রি হচেছ ১৫০ থেকে ৫০০টাকায়, জিন্স প্যান্ট ২০০ থেকে ৭০০টাকায়, টি-শার্ট ১২০ থেকে ২৫০ টাকায়, থ্রি-পিচ ৩০০ থেকে ৬৫০টাকায়, বাচ্চাদের থ্রি-কোয়ার্টার জিন্স প্যান্ট ১৫০ থেকে ২৫০টাকায়, শিশুদের গেঞ্জির সেট ১২০ থেকে ২০০টাকায়, ফ্রক ও টপস ২২০ থেকে ৪৫০টাকায়, বাচ্চাদের ওয়ান পিচ ৩০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement