২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিজিএমইএ ভবনের সামনে অলস বসে আছেন শ্রমিকরা 

বিজিএমইএ ভবনের সামনে গাড়ির উপর বসে আছে শ্রমিকরা। ইনসেটে ভবনের ভিতরে তালা দিচ্ছেন প্রশাসনের লোকজন - নয়া দিগন্ত

বিজিএমইএ ভবনের বিভিন্ন অফিসের মালামাল সরানোর কাজ করতে হবে। সকাল থেকে ভবনের সামনে এসে জড়ো হন শ্রমিকরা। কিন্তু আসার পর থেকে শুধু অপেক্ষা করছেন। ভিতরে কোনভাবেই ঢুকতে পারছেন না। প্রধান গেইট সহ ভবনের প্রতিটি ফ্লোরে তালা ঝুলছে। সামনে পাহারা দিচ্ছে আইন শৃংখলা রক্ষাবাহিনীর সদস্যরা।

দিনমজুর এসব শ্রমিকদের আনা হয়েছে বিজিএমইএ ভবনের থাকা বিভিন্ন অফিসের মালামাল সরানোর জন্য। দিনপ্রতি তারা ছয়শ টাকা হাজিরায় কাজ করেন। অন্যান্য দিন তারা ভাতের বাটি, ঝুঁড়ি, কোদাঁল নিয়ে কাজে বের হলেও আজ আসছেন খালি হাতে। কিন্তু ভবনের ভিতরে প্রবেশ করতে না পারায় এসব শ্রমিকরা অলস সময় পার করছেন ভবনের সামনে।

তাদের কেউ মোবাইলে পছন্দের গান শুনছেন আবার কেউ বা পরিবারের সাথে প্রয়োজনীয় আলাপ সেরে নিচ্ছেন। আবার পারস্পরিক আলাপ চারিতায় মেতেছেন কেউ কেউ। রাজধানীর কড়াইল বস্তি সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছেন তারা।

দিনমজুরদের সর্দার আপেল মাহমুদ জানান, তারা এসেছেন ভবনের ১৪ তলার নিজস্ব অফিসের মালামাল সরাতে। কিন্তু গেট বন্ধ থাকায় সবাই বসে আছি। দেখা যায়, তাদের মতো মালামাল সরাতে আসা আরো অনেকে অলস সময় পার করছেন।

একই ভাবে বিজিএমইএ ভবনের সামনে অনুমতির অপেক্ষা করছেন জেনারেটর, এসি, ইলেক্ট্রিসিটি সহ অন্যান্য মেকানিকরা। একইভাবে বিজিএমইএ এর ভবনে থাকা বিভিন্ন অফিসের শ্রমিক কর্র্মচারি- কর্মকর্তারাও অপেক্ষা করছেন ভিতরে প্রবেশের জন্য।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিবিএল গ্রুপের এক কর্মকর্তা বলেন, ভবনে আমাদের ৪টি ফ্লোর রয়েছে। বিশাল এই অফিসের মালামাল অল্প সময়ে সরানো কঠিন হয়ে পড়েছে। ভবনের ভিতরে আমাদের এখনো পর্যন্ত প্রায় ৯০ ভাগ মালামাল রয়েছে। আমরা রাজউকের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করছি।

এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হাতিরঝিল লেকে অবৈধভাবে নির্মিত বহুতল বিজিএমইএ ভবন সীলগালা কর‌ে দেয়া হয়। ওই সময় রাজউকের পরিচালক (প্রশাসন) খন্দকার ওলিউর রহমান বলেন, যাদের মালামাল ছিল তাদের অধিকাংশই এরই মধ্যে নিয়ে গেছে। যাদের এখনও আছে তারা পরবর্তীতে বিজিএমইএ এর কাছে আবেদন করবে। কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিবে। অনুমতি পেলে তাদের মালামাল নিয়ে যাবে।

ওলিউর রহমান বলেন, আজকের( মঙ্গলবার) অভিযান স্থগিত করা হয়েছে। ভবনে প্রতিটি ফ্লোর সীলগালা করা হয়েছে। একইভাবে প্রধান গেইটও সীলগালা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করে পরবর্তীতে ভাঙার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। মঙ্গলবার সকাল থেকে চার দফা সময় বৃদ্ধির পর সন্ধ্যা ৭টায় এই সিদ্ধান্ত নেয় রাজউক।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দীর্ঘ আইনী জটিলতার অবসান শেষে আমরা উচ্চ আদালত কর্তৃক নতুন করে সময় বৃদ্ধির কোন নির্দেশনা না পাওয়ায় বিজিএমইএ ভবনটি ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে। ভবনটি ভাঙতে বিজিএমইএকে দেয়া সময় পার হয়ে যাওয়ার পরই সরকার এই ভবনটি ভাঙ্গার কার্যক্রম শুরু করা হচ্ছে।

ওলিউর রহমান বলেন, মালামাল সরানোর পর আমরা ইউলিটি সেবা গ্যাস, বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়ার মাধ্যমে ভবন ভাঙার কাজ শুরু করবো। এরপর আমরা ভবন ভাঙার কাজে হাত দেব।

বিজিএমইএ ভবন অপসারণে আপিল বিভাগের দেয়া এক বছর সময় শেষ হয়েছে গত ১২ এপ্রিল। গত বছরের ২ এপ্রিল সর্বোচ্চ আদালত ভবনটি অপসারণে তৈরি পোশাক ও রফতানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএকে এক বছর দশ দিন সময় দেন।


আরো সংবাদ



premium cement