২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাজনৈতিক পরিস্থিতি অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারবে না : অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত - সংগৃহীত

নির্বাচনের সময় দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি যাই হোক, অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়বে না বলে জানালেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। রোববার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ে আইসিএমএবির (ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টস অব বাংলাদেশ) আন্তর্জাতিক সম্মেলন উদ্বোধন করে এ কথা জানান তিনি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের জন্য আঞ্চলিক বাধাগুলো ডিঙাতে চায় বাংলাদেশ।

২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত এসডিজির উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জন করতে চায় বাংলাদেশ। এ যাত্রায় সহায়ক শক্তি হতে চান পেশাদার হিসাববিদরা। তাই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করে আইসিএমএবি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী জানান, ভালো ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে শক্ত অবস্থানে এখন বাংলাদেশের অর্থনীতি। তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি এখন ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানে আছে। তাই তিন মাস পরে দেশের নির্বাচনে যাই হোক না কেন, অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়বে  না বলেই আশা করি।’

মুহিত আরো জানান, আঞ্চলিক সম্পর্ক উন্নয়নের পাশাপাশি নানা উদ্যোগের মাধ্যমে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সাথে ভালো বাণিজ্য সম্পর্ক তৈরি করতে চায় সরকার। তিনি বলেন, ‘আঞ্চলিক সম্পর্ক উন্নয়ন খুবই জরুরি আমাদের জন্য। তাই এ ক্ষেত্রে বিদ্যমান বাধাগুলো নিরসনের চেষ্টা করছি আমরা, যা আমাদের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় যেতে বাংলাদেশ যে নীতি গ্রহণ করেছে, তার সঠিক বাস্তবায়নের তাগিদ দেন সম্মেলনের বক্তারা।

আরো পড়ুন : নতুন আরো ৩ ব্যাংক দেয়ার তোড়জোড়
সৈয়দ সামসুজ্জামান নীপু ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:৫২

সরকারের শেষ সময়ে আরো তিনটি বাণিজ্যিক ব্যাংক অনুমোদন দেয়ার জোর প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। এই তিন ব্যাংকের মধ্যে পুলিশ সদস্যদের জন্য ‘বাংলাদেশ পুলিশ ব্যাংক’ অনুমোদন প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। পাশাপাশি আরো দুই ব্যাংকও অনুমোদন দেয়া হতে পারে। এর একটি পিপলস ব্যাংক অপরটি বাংলা ব্যাংক। প্রস্তাবিত একটি ব্যাংকের মালিকানায় রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা। অপর ব্যাংকটির মালিক হচ্ছেন এফবিসিসিআইয়ের একজন সাবেক সহসভাপতি এবং সরকারের ঘনিষ্ঠ একজন ব্যবসায়ী নেতা। 

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ পুলিশ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার একটি সারসংক্ষেপ গত সপ্তাহে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে নতুন করে পাঠানো হয়েছে। এই ব্যাংক প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সরকারের শীর্ষ মহলেরও সম্মতি রয়েছে। এখন ব্যাংকটির অনুমোদন দেয়া আনুষ্ঠিকতা মাত্র। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পর পুলিশ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে উত্থাপন করা হবে। এই প্রক্রিয়া শেষ হতে আগামী মাস লেগে যেতে পারে। 


এর আগে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পুলিশ কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছিল- তারা যদি ৪০০ কোটি টাকা জোগাড় করতে পারে তবে তাদের ব্যাংক দেয়া হবে। ইতোমধ্যে এই অর্থের বেশির ভাগ সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এই ব্যাংকটি দ্রুত অনুমোদন ও প্রতিষ্ঠার বিষয়ে পুলিশের জোর চেষ্টা রয়েছে। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে প্রায় সব বাহিনীর নিজস্ব ব্যাংক রয়েছে। যেমন সেনাবাহিনীর জন্য রয়েছেÑ ট্রাস্ট ব্যাংক, বিজিবির জন্য রয়েছে ‘সীমান্ত ব্যাংক’ এবং আনসার ও ভিডিপির জন্য ‘আনসার-ভিডিপি ব্যাংক’। এখন পুলিশের জন্য হচ্ছে ‘ বাংলাদেশ পুলিশ ব্যাংক’। 

জানা গেছে, পিপলস ব্যাংকের প্রধান উদ্যোক্তা হলেন চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের বাসিন্দা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এম এ কাশেম। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

সূত্র জানায়, পিপলস ব্যাংকের উদ্যোক্তা এর আগে ২০১১ সালে ব্যাংকটির জন্য আবেদন করেছিল। সে সময় আবেদন প্রক্রিয়ায় ছোটখাট ত্রুটি থাকায় বাদ পড়ে। উদ্যোক্তা ওইসব ত্রুটি দূরসহ ব্যাংকটির নাম পরিবর্তন করে আবেদন করে। ব্যাংকের নাম থেকে ‘ইসলামী’ শব্দটি বাদ দেয়া হয়েছে। 

আর বাংলা ব্যাংকের প্রধান উদ্যোক্তা হলেন বেঙ্গল গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান মো: জসিম উদ্দিন। দেশে তাদের প্লাস্টিক শিল্পসহ বিভিন্ন ব্যবসায় রয়েছে। তিনি ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি ছিলেন।
জানা গেছে, ২০১৩ সালে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি বাংলাদেশ সফরে এসে নড়াইলে তার শ্বশুরালয়ে যান। এ সময় তিনি সেখানে স্মৃতিস্বরূপ কিছু করার আকাক্সক্ষা প্রকাশ করেন। পরে ২০১৫ সালের ১৯ আগস্ট তার স্ত্রী শুভ্রা মুখার্জি মারা যান। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে নড়াইলে শুভ্রা মুখার্জির নামে একটি হাসপাতাল স্থাপনের ইচ্ছে প্রকাশ করা হয়। জানা গেছে, প্রস্তাবিত বাংলা ব্যাংকের সিএসআর (করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা) থেকে ওই হাসপাতাল পরিচালনা করা হবে। ব্যাংক প্রতিষ্ঠার জন্য এই তিন ব্যাংককে প্রত্যেকটিকে ৪০০ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহ করতে হবে। পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা এই অর্থ পরিশোধিত মূলধন হিসেবে সংগ্রহ করবে। 

দেশে বর্তমানে ৫৭টি বাণিজ্যিক ব্যাংক থাকা সত্ত্বেও নতুন তিন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার অনুমোদন প্রক্রিয়া নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। বলা হয়েছে, বর্তমান সরকারের আমলে মোট ৯টি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেয়া হয়েছিল। এই ব্যাংকগুলোর মধ্যে অন্ততপক্ষে তিনটির ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা খুবই নাজুক। এর মধ্যে ফারমার্স ব্যাংক অন্যতম। বাদবাকিগুলোর বেশির ভাগই কোনো রকমে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখছে। তবে, নতুন ব্যাংক অনুমোদন দেয়ার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী এর আগে একাধিকবার বলেছেন, বর্তমানে বাংলাদেশে অনেক ব্যাংক রয়েছে। তার পরও দেশের বিশাল অঞ্চল ব্যাংক সেবার বাইরে রয়েছে। এ কারণেই নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দেয়া হচ্ছে। আমরা তিন বা চারটি ব্যাংক অনুমোদন দেবো। তিনি বলেন, অনেক ব্যাংক একীভূত (মার্জার) করার চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া ব্যাংকগুলোর তারল্য সঙ্কট কাটাতে সরকার কাজ করছে।


আরো সংবাদ



premium cement